ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের ম্যাঙ্গালুরে হিন্দুদের দশমী অনুষ্ঠানের মিছিলে দেখা গেল ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদী বিজেপি নেতা ও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে। সে দাঁড়িয়ে আছে একটি সজ্জিত বুলডোজারের উপর। দশমী অনুষ্ঠানে সে বুলডোজার প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। কেন? বুলডোজার প্রদর্শনীর পেছনে কাহিনী কী?
ভারতের উত্তরপ্রদেশে উগ্র হিন্দু নেতা আদিত্যনাথ বুলডোজারকে মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের এক নতুন অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার শুরু করেছে। সে নানা অজুহাতে মসজিদ-মাদ্রাসা, মুসলিমদের বাড়িঘর, দোকানপাট ভাঙ্গচুরে বুলডোজার ব্যবহার করছে। এজন্য তাকে বলা হয়ে থাকে ‘বুলডোজার বাবা’ আর তার এই কাজের নাম দেওয়া হয়েছে ‘বুলডোজার মডেল’। তার এমন কাজে অনুপ্রাণিত হয়ে মধ্যপ্রদেশেও বুলডোজার মডেল ব্যবহার করছে হিন্দুত্ববাদী সরকার। গত পরশুও মধ্যপ্রদেশে তিনজন মুসলিমের বাড়ি গুড়িয়ে দিয়েছে তারা।
Location : Mangalore,Karnataka.
A tableau of BJP Chief Minister Yogi Adityanath’s bulldozer model (an anti Muslim symbol) was displayed during a Dussehra festival procession. pic.twitter.com/jmdXQQ6pNj
— HindutvaWatch (@HindutvaWatchIn) October 6, 2022
কর্ণাটকেও হিন্দু্ত্ববাদী নেতারা বুলডোজার মডেল ব্যবহার করতে সচেষ্ট হয়েছে। গত জুন মাসে বিজেপির জাতীয় সাধারণ সম্পাদক সিটি রাবি বলেছিল, যারা রাজ্যে শান্তি বিনষ্ট করবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হবে এই বুলডোজার মডেল। তাদের এই কথিত শান্তির বিরোধী আসলে কারা? কাদেরকে শান্তির বিরোধী বলে তারা চিহ্নিত করে?
সিটি রাবির বক্তব্য থেকেই আসলে সেটা বুঝা যায়। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে মুসলিমদের হালাল-হারামভিত্তিক ব্যবসায়িক নীতিকে সমালোচনা করে সে বলেছিল, হালাল মাংস ব্যবসা এক ধরনের ‘অর্থনৈতিক জিহাদ’। একই সাথে কর্ণাটকের কিছু হিন্দুত্ববাদী সংগঠন লাউডস্পিকারে আজান নিষিদ্ধের দাবি করেছিল। কর্ণাটকের বিজেপি মূখ্যমন্ত্রীও এই প্রস্তাবের সাথে একমত হয়ে লাউডস্পিকারে আজান নিষিদ্ধের উদ্যোগ নেয়।
তো, তাদের দৃষ্টিতে শান্তি বিনষ্টকারী মূলত হালাল-হারামের ভিত্তিতে ব্যবসা করা, লাউডস্পিকারে আজান দেওয়া মুসলিমরা। হিন্দুত্ববাদীরা এনআরসি, সিএএ-সহ বিভিন্ন নামে বিভিন্ন অজুহাতে মুসলিমদেরকে দেশছাড়া করতে চায়, পর্দার বিধানসহ মুসলিমদের অন্যান্য ধর্মীয় বিধান পালনে বাধা হয়ে দাঁড়ায়; মুসলিমরা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলেই তারা হয়ে যায় ‘শান্তি বিনষ্টকারী’। তাই এই মুসলিমদের বিরুদ্ধেই বুলডোজার মডেল বাস্তবায়ন করে হিন্দুত্ববাদীরা; উত্তরপ্রদেশে ও মধ্য প্রদেশে সেই চিত্রই চোখে পড়ে প্রতিনিয়ত।
কিন্তু কর্ণাটকে বুলডোজার মডেল বাস্তবায়নের কথা বললেও এখনও অবধি সেভাবে এই মডেলের ব্যবহার দেখা যায়নি। এজন্যই কি ‘বুলডোজার বাবা’ যোগী আদিত্যনাথ এবার নিজে এসে বুলডোজার প্রদর্শনী করেছে যেন বুলডোজার ব্যবহারে কর্ণাটক কর্তৃপক্ষ তৎপর হয়?
তথ্যসূত্র :
https://twitter.com/HindutvaWatchIn/status/1577908362926489600