সম্প্রতি শেষ হয়েছে তুরস্কে অনুষ্ঠিত দুইদিন ব্যাপী ইত্তেহাদুল উলামা সম্মেলন। সকল মুসলিম দেশ যেন ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানকে স্বীকৃতি দেয়, সে লক্ষ্যে কাজ করতে সম্মেলন থেকে বিশ্বের সকল আলেমদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিশ্ব বরেণ্য আলেমদের এই সভা শেষে একটি ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হয়। আফগানিস্তানে আমেরিকার পরাজয়কে পুরো মুসলিম উম্মাহর জন্য গর্বের বিষয় উল্লেখ করে, ঘোষণাপত্রে এ আহ্বান জানানো হয়েছে। পাশাপাশি ইমারাহর সাথে মুসলিম দেশগুলোর শক্তিশালী রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক সম্পর্ক তৈরি করতেও জোরদার প্রয়াস চালানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
কাফেরদের আগ্রাসনে সৃষ্ট আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলা করাও সকল আলেমদের দায়িত্ব বলে ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে আরও বলা হয়েছে, যতদিন না আফগানিস্তান অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী হয়ে যায়, ততদিন পর্যন্ত আলেমদের উচিৎ মুসলিমদের নেতৃত্ব দিয়ে এই সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব আনজাম দেয়া।
এদিকে, উক্ত সভায় আফগান নারীদের শিক্ষার ব্যাপারে ইমারাহর কর্মতৎপরতার ব্যাপারে কথা বলেন ইমারাতে ইসলামিয়ার মুখপাত্র শায়েখ জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ (হাফিযাহুল্লাহ)। তিনি উলামায়ে কেরামদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আমাদের দেশ আলেমদের পরামর্শ ও দিকনির্দেশনায় পরিচালিত হচ্ছে। তাদের নেতৃত্বে দেশে নারী শিক্ষা এবং নারীদের জন্য পৃথক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরির ব্যাপারে নীতিমালা তৈরির প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
“মেয়েদের স্কুল কয়েকটি কারণে বন্ধ রয়েছে – যেমন পৃথক ক্লাসরুম, পাঠ্যক্রম এবং যাতায়াতের পৃথক ব্যবস্থা করা। বর্তমানে ছেলেরা প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত এবং মেয়েরা প্রথম থেকে ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত নিয়মিত স্কুলে যাচ্ছে। কিন্তু সপ্তম শ্রেণী থেকে মেয়েদের শিক্ষা কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত আছে। তবে এটা এজন্য নয় যে, আমরা চাই না তারা শিক্ষিত হোক – এটা এজন্য যে, আমরা তাদের জন্য উপযুক্ত নীতিমালা, শিক্ষাক্রম, অবকাঠামো এবং যাতায়াত ব্যবস্থা প্রস্তুত করছি।
“এছাড়াও অভিভাবকগণ তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠানোর জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত করছেন, তাদের হিজাবের ব্যাপারে তদারকি করছেন। মেয়েদের জন্য পশ্চিমা-সমর্থিত সরকারের পূর্বের পাঠ্যক্রম অনুপযোগী, কেননা তা পশ্চিমা চিন্তাধারার উপর তৈরি। এই পাঠ্যক্রম চলতে থাকলে আমাদের সন্তানদের মন-মানসিকতা বিকৃত হয়ে যাবে। এগুলো তাদের হৃদয়ে ইসলাম ও ইমারাহ বিরোধী মনোভাব তৈরি করবে। আর তা একটি জাতির আদর্শিক পরাজয়ের জন্য যথেষ্ট।”
জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ (হাফিযাহুল্লাহ) এর এই বক্তব্য আফগান নারীদের শিক্ষার ব্যাপারে পশ্চিমাদের দালাল মিডিয়ার অপতৎপরতার উপযুক্ত জবাব বলা যায়। এছাড়া ইত্তেহাদুল উলামা থেকে থেকে সারা বিশ্বের আলেমদের প্রতি যে আহ্বান জানানো হয়েছ, তাতে সকল মুসলিমের কাছে ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের গ্রহণযোগ্যতা আরো বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।