পূর্ব তুর্কীস্তান: কংগ্রেসের নিরাপত্তার অজুহাতে উইঘুরদের ব্যাপক ধরপাকড়

আবু উবায়দা

0
493

সদ্য শেষ হওয়া চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কংগ্রেসের ‘নিরাপত্তার’ অজুহাতে উইঘুর মুসলিমদের ব্যাপকভাবে ধরপাকড় করেছে দখলদার চীনা প্রশাসন। বিভিন্ন আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষের বরাতে জানা যায়, দখলদাররা “দৃঢ়ভাবে আঘাত করো” (ইংরেজিতে- ‘স্ট্রাইক হার্ড’) প্রচারাভিযানের নামে শত শত উইঘুর মুসলিমকে বন্দী করেছে।

মূলত পার্টি কংগ্রেস চলাকালীন সময়ে উইঘুররা যেন কোন প্রকার ‘সমস্যা সৃষ্টি করতে না পারে’ সেজন্যই এই ধরপাকড় অভিযান শুরু করেছে তারা। তবে এই গ্রেপ্তারের ঢেউ শুরু হয় পার্টি কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হওয়ার কয়েক মাস আগে জুলাই মাস থেকেই।

উল্লেখ্য যে, এবারেও চীনের কমিউনিস্ট পার্টি কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তৃতীয়বারের মতো নির্বাচিত হয়েছে উইঘুর মুসলিমদের উপর দমন-নিপীড়ন চালানোর প্রধান কারিগর শি জিনপিং।

অক্টোবরের প্রথম দিকে দেয়া হয় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা। এরপর আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলে ‘কঠোর আবাসিক লকডাউন’। এর মাধ্যমে মূলত উইঘুর এবং অন্যান্য তুর্কি সংখ্যালঘুদেরকে নিজেদেরই ঘরে বন্দী করে রাখে দখলদার চীন। এতে অপুষ্টি ও চিকিৎসার অভাবে মারা যায় শত শত মুসলিম।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক উইঘুর মুসলিম জানান, যাদের বয়স ১৮ হয়েছে, যারা সাম্প্রতিক সময়ে দখলদারদের বন্দী শিবির থেকে মুক্তি পেয়েছে এবং যারা সাম্প্রতিক সময়ে দখলদারদের নজরদারি এড়িয়ে চলতে সক্ষম হয়েছিল, তাদেরকেই বেশি গ্রেপ্তার করেছে চীনা সন্ত্রাসীরা।

তিনি আরও বলেন, কংগ্রেস চলাকালীন সময়ে উইঘুর মুসলিমদের ভয় দেখাতে ও হয়রানি করতে প্রায়ই দখলদারদের পুলিশ বাহিনী শহর ও গ্রামাঞ্চলে সাইরেন বাজিয়ে টহল দিয়েছে।

হোতান শহরের ‘SWAT লিডার’ এলিজান ওবুলহেসেনের বাড়িতে ফোন দিয়েছিল রেডিও ফ্রি এশিয়া (আরএফএ)। ওবুলহেসেনকে না পেয়ে তার মায়ের সাথে কথোপকথন হয় তাদের। ওবুলহেসেনের মা আরএফএ-কে জানায় যে তার ছেলে উইঘুরদের ধরপাকড়ে খুব ব্যস্ত আছেন। তার ছেলে অফিসেই খাওয়া দাওয়া করে ও ঘুমায়।

কতজন উইঘুরকে আটক করা হয়েছে এ ব্যাপারে ওবুলহেসেন কিছু বলেছে কিনা জানতে চাইলে, ঐ মহিলা অনুমান করে বলেন, ‘কমপক্ষে এক থেকে দুই হাজার উইঘুরকে আটক করা হয়েছে।’

এদিকে ঘুলজা শহরের এক কর্মকর্তা আরএফএ-কে বলেছে, সাম্প্রতিক ধরপাকড়ের সময় পুলিশ ১২৫ জন উইঘুরকে আটক করেছে।

অবস্থাদৃষ্টে এটা প্রতীয়মান হয় যে, মুসলিমদের দমন-পীড়ন ও গ্রেপ্তারের জন্য কোন যৌক্তিক কারণ দরকার হয় না। দখলদার চীনা প্রশাসন যেকোন অজুহাতেই তাদের বন্দী করতে পারে, জেল, জুলুম, নির্যাতন করতে পারে। সন্ত্রাসী চীনের হাত থেকে উইঘুর মুসলিমদের বাঁচানোর জন্য প্রয়োজন সকল মুসলিমের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা।



প্রতিবেদক :  আবু-উবায়দা




তথ্যসূত্র:

——–
1. Authorities in Xinjiang increased detentions of Uyghurs before party congress
https://tinyurl.com/4suu94x3

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধআবারও হালাল বিয়েতে দালাল প্রশাসনের বাঁধা
পরবর্তী নিবন্ধসোমালিয়া | সেক্যুলার তুর্কিয়ের (তুরস্ক) বিমান হামলায় ধ্বংস শহরের একমাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান