পূর্ব আফ্রিকায় আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট জনপ্রিয় ইসলামি প্রতিরোধ বাহিনী হারাকাতুশ শাবাব প্রশাসনের প্রধান মুখপাত্রকে ধরতে মরিয়া হয়ে উঠেছে আমেরিকা। সেই লক্ষ্যে ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছে তারা।
সোমালিয়ায় ইসলামের জাগরণ থামিয়ে দিতে গত বছর থেকে অপতৎপরতা বাড়িয়েছে আমেরিকা। মুজাহিদ বাহিনীকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে বিমান হামলাও বাড়িয়েছে তারা।
আমেরিকা ভাল করেই জানে, সোমালিয়ার সাধারণ জনগণ মুজাহিদদের ভালোবাসে। সোমালি জনগণের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সমর্থন না থাকলে কখনই শাবাব মুজাহিদগণ এত শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছাতে পারতেন না। আর তাই সামরিকভাবে শাবাব মুজাহিদদের দমন করতে না পেরে এখন সোমালি জনগণকে অর্থের প্রলোভন দেখাতে শুরু করেছে।
সোমালি জনগণ যদি আমেরিকার পাশে না দাঁড়ায়, তাহলে পরিণতি কী হবে তা খুব ভালো করেই জানে আফগানিস্তান ও ভিয়েতনাম থেকে পালাতে বাধ্য হওয়া আমেরিকা। এ কারণে মুজাহিদ বাহিনী ও জনগণের মাঝে ফাটল ধরাতে এত এত বিশাল অঙ্কের লোভনীয় অফার দেয় আমেরিকা।
এছাড়াও, খরচের কথা বিবেচনা করলেও দেখা যায়, একজন নেতৃস্থানীয় মুজাহিদকে ধরতে আমেরিকান সামরিক বাহিনী ও সোমালি সামরিক বাহিনীর পেছনে যে পরিমান খরচ করতে হয়, মুজাহিদ প্রতি ৫ বা ১০ মিলিয়ন ডলার সে তুলনায় কিছুই নয়। এক ঢিলে দুই পাখি মারার প্ল্যান – খরচও কম হলো, মুজাহিদ বাহিনী ও জনগণের মধ্যেও ফাটল তৈরি করা গেল।
বিশাল অঙ্কের লোভনীয় সব টোপ দেখিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত শাবাবের ৮ জন কর্মকর্তার তথ্য চেয়েছে আমেরিকা। সর্বশেষ এই তালিকায় যুক্ত হয়েছেন আশ-শাবাব প্রশাসনের কেন্দ্রীয় মুখপাত্র শাইখ আলী মুহাম্মদ রাজী (হাফিযাহুল্লাহ)।
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের ‘জাস্টিস ফর জাস্টিস’ প্রোগ্রামের দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যারা আলি মোহাম্মদ রাজী (আলি ধেরে), এবং তাঁর অবস্থান সম্পর্কে তথ্য প্রদান করবে, তাদেরকে ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পর্যন্ত পুরস্কার দেওয়া হবে।
Have information on al-Shabaab senior terrorist leader and spokesperson Ali Mohamed Rage?
Send us your tip.
You could be eligible for a reward and relocation. pic.twitter.com/IGjdboQBzj
— Rewards for Justice (@RFJ_USA) February 28, 2023
স্থানীয় সূত্র থেকে জানা যায়, শাইখ আলি মুহাম্মদ রাজী ২০০৯ সাল থেকে আশ-শাবাবের মুখপাত্রের ভূমিকা পালন করছেন। একই সাথে তিনি প্রতিরোধ বাহিনীর শুরা কাউন্সিলের একজন সদস্য। ১৯৬৬ সালে মোগাদিশুতে জন্মগ্রহণ করা এই বীর মুজাহিদের নেতৃত্বে কেনিয়া এবং সোমালিয়ায় অনেক সফল অপারেশন পরিচালিত হয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০২১ সালে ‘বিশেষভাবে মনোনীত গ্লোবাল টেররিস্ট’ তালিকায় তাঁকে অন্তর্ভুক্ত করে। এরপর ২০২২ সালে জাতিসংঘও তাঁকে নিষেধাজ্ঞার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে।
উল্লেখ্য যে, সোমালি জনগণকে বিভ্রান্ত করতে ও মুজাহিদদের জজবা নিভিয়ে দেয়ার জন্য পশ্চিমা সমর্থিত মোগাদিশু প্রশাসন এবং পশ্চিমা মিডিয়া কিছুদিন আগে দাবি করেছিল যে, ২০২২ সালের শেষের দিকে হিরান যুদ্ধে আশ-শাবাবের মুখপাত্র আলী ধেরে শহিদ হয়েছেন। এর পরপরই হিরানে একটি বড় ধরনের সামরিক অপারেশন চালান মুজাহিদগণ। তখন পশ্চিমা গোষ্ঠী ও তাদের তাঁবেদার প্রশাসনের দাবিকে মিথ্যা প্রমাণিত করে একটি অডিও বার্তা প্রকাশ করেন তিনি।
এভাবেই ইসলামের অগ্রযাত্রা থামিয়ে দিতে পশ্চিমা বিশ্ব ও তার তাঁবেদার সরকারগুলো বিভিন্ন সময় মুজাহিদদের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা চালায়, কখনও নিরীহ মানুষের উপর বৃষ্টির মতো বোমা বর্ষণ করে, কখনও আবার সাধারণ জনগণকে মুজাহিদদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেয়ার জন্য বিশাল অঙ্কের প্রলোভন দেখায়।
লিখেছেন : ত্বহা আলী আদনান
আল্লাহ ভাইকে হিফাজত করুন