প্রায় দুই দশক ধরে সোমালিয়ায় দখলদারিত্ব বজায় রেখেছে পশ্চিমা মদদপুষ্ট সামরিক জোট “আফ্রিকান ইউনিয়ন ট্রানজিশন মিশন” (এটিএমআইএস/এইউ)। ২০০৬ সালে সোমালিয়ার ইসলামি ইমারত প্রশাসনকে ক্ষমতা থেকে হটাতে আগ্রসন চালায় পশ্চিমা ও তাদের সমর্থিত বিদেশি সেনা ও মিলিশিয়ারা। সেই থেকে আজ অবধি ইসলামি প্রতিরোধ বাহিনী আশ-শাবাব তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধ চালিয়ে আসছে, যার তীব্রতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
গত মে মাসের শেষ দিকেও শাবাব যোদ্ধাদের বড় দু’টি সামরিক অভিযানে পশ্চিমা সমর্থিত জোটের অংশীদার উগান্ডান ও ইথিওপিয়ান বাহিনীর অন্তত সাড়ে ৪ শতাধিক সৈন্য হতাহত হয়েছে।
এমতাবস্থায় বাধ্য হয়েই গত মাসে সোমালিয়া থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের প্রথম পর্ব শুরু করে সামরিক জোটটি। গত ৩০ জুন শুক্রবার জোটের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে যে, সামরিক জোট এইউ (আফ্রিকান ইউনিয়ন) জাতিসংঘ এবং সোমালি ফেডারেল সরকারের সহযোগিতায় নির্ধারিত সেনাদের প্রত্যাহারের প্রথম পর্যায়ের সমাপ্তি ঘটিয়েছে।
বিবৃতিতে জোটটি জানিয়েছে যে, এইউ এবং সোমালি সরকারের মধ্যে সম্পাদিত একটি রূপান্তর পরিকল্পনার অংশ হিসাবে মির্তুগো, জাজিরা-১, হাজি আলী, আদালে, ঘেরিল এবং আরবাও সহ সাতটি সামরিক ঘাঁটি থেকে এটিএমআইএস তার সৈন্যদের প্রত্যাহার করেছে এবং ঘাঁটিগুলো সোমালি সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে জুনের শেষ নাগাদ আফ্রিকান ইউনিয়নের প্রায় ২,০০০ সৈন্য সোমালিয়ার ৫টি সামরিক ঘাঁটি ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও, এসময়ের মধ্যে এটি মোট ৭টি সামরিক ঘাঁটি ছেড়ে গেছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যে আরও ৩,০০০ সৈন্য সোমালিয়া ছেড়ে যাবে বলে জানা গেছে। আর ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের আগেই সোমালিয়া থেকে তাদের সমস্ত সৈন্য প্রস্থানের কথাও রয়েছে।
তবে অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, আফগানিস্তান থেকে ন্যাটো জোটের তড়িঘড়ি প্রত্যাহারের মতোই সোমালিয়া থেকেও দ্রুত সেনাদের সরিয়ে নেওয়ায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে পশ্চিমা সমর্থিত এই জোটটি।
অফিসিয়াল হিসাব মতে, বর্তমানে সোমালিয়ায় এইউ-এর অংশীদার ৬টি দেশের মোট ২০,৮৬০ হাজার দখলদার সৈন্য রয়েছে, যদিও এই জোটের অধীনে সেনাসংখ্যা আরও অনেক বেশি।