ইয়েমেনে আল-কায়েদার বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের ব্যর্থতার পরিধি যেনো দিন দিন আরও দীর্ঘ হচ্ছে আরব আমিরাত সমর্থিত জোটের। গত বছরের সেপ্টম্বরে শুরু হওয়া এই যুদ্ধ এখন শত্রু বাহিনীর গলার কাঁটায় পরিনত হয়েছে।
আরব আমিরাত সমর্থিত “সাউদার্ন ট্রানজিশনাল কাউন্সিল” বাহিনী ঐ বছর আল-কায়েদার বিরুদ্ধে যুদ্ধের নতুন ঘোষণা দেয়। পরে এর বিপরীতে আল-কায়েদাও পাল্টা সামরিক অপারেশনের ঘোষণা দেয়। এরফলে টানা এক বছর ধরে উভয় বাহিনীর মাঝে চলে তীব্র লড়াই। আল-কায়দার বিরুদ্ধে টানা এই লড়াইয়ে ক্লান্তশ্রান্ত হয়ে পড়ে শত্রু বাহিনী। দিন শেষে সফলতার পরিবর্তে ব্যর্থতার তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে শত্রুদেরকে। কেননা এই যুদ্ধে শত্রুরা আল-কায়েদার কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য কোনো এলাকাই দখল করতে পারে নি। উল্টো তারা যা দখল করেছিল তার চেয়েও বেশি এলাকা আল-কায়েদার হাতে ছেড়ে পালাতে হয়। জোটের সামরিক ও আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি ছিলো আকাশচুম্বী, হতাহতের সংখ্যাও ছিলো কয়েক হাজার। যাদের মাঝে শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ও সামরিক কমান্ডারও ছিল।
ইয়েমেনে আল-কায়েদার বিরুদ্ধে তাদের ঘোষিত যুদ্ধের পরিস্থিতি যখন এই, তখন শত্রুরা নিজেদের পরাজয় ঢাকতে এই অঞ্চলে নতুন আরেকটি অপারেশন ও যুদ্ধের দ্বিতীয় পর্ব শুরুর ঘোষণা দেয়। চলতি আগস্ট মাসের ৫ তারিখ নতুন এই পর্বের যুদ্ধের নামকরণ করা হয় “সোর্ডস অফ হাওস”। কিন্তু এবার অভিযানের শুরুতেই আল-কায়েদা যোদ্ধাদের কাছে বড় ধাক্কা খায় আমিরাত সমর্থিত বাহিনী।
কেননা এবার যুদ্ধের শুরুতেই আল-কায়েদার হামলার শিকারে পরিণত হয়েছে “সোর্ড অফ হাওস” অপারেশনের প্রধান।
স্থানীয় সূত্রমতে, গত ১০ আগস্ট শাবওয়া রাজ্য সংলগ্ন আল-রুবাইজের ভূমি ওয়াদি আল-রাদফ এলাকায় একটি সামরিক অভিযানের ঘটনা ঘটেছে। অভিযানটি “সোর্ডস অফ হাওস” অপারেশন ফোর্স ও হাদী সরকারি বাহিনীর একটি যৌথ সামরিক কনভয় টার্গেট করে চালানো হয়েছিল। এসময় যৌথ এই সামরিক কনভয়টির নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন দক্ষিণী বাহিনীর প্রধান কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল লতিফ আস-সাঈদ।
সূত্রমতে, অভযানের শুরুতেই কনভয়টি লক্ষ্য করে পরপর ৩টি শক্তিশালী বিস্ফোরকের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এর একটি সফলতার সাথে ঘটানো হয় উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তাদের বহনকারী গাড়ি লক্ষ্য করে। এই বিস্ফোরণের পর ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়া সৈন্যদের লক্ষ্য করে আতর্কিত আক্রমণ চালানো শুরু করেন একিউএপি তথা আনসারুশ শরীয়ার প্রতিরোধ যোদ্ধারা। ফলে অভিযানের প্রথম ধাক্কাতেই নিহত হয় দক্ষিণী বাহিনীর প্রধান জেনারেল লতিফ সাঈদ, আবিয়ান বেল্টের অপারেশনের প্রধান ক্যাপ্টেন সালাহ আল-ইউসিফি, কর্নেল শেখ মুহাম্মদ করিদ আল-জাদানী সহ উচ্চপদস্থ অন্তত ৭ কর্মকর্তা। এছাড়াও হাতাহত হয় সামরিক বাহিনীর আরও কয়েক ডজন সদস্য, যাদের সুনির্দিষ্ট সংখ্যা এখনো জানা যায় নি। তবে নিহতদের কয়েকজনের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
এদিকে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নিহতের এই ঘটনায় শোকের মাতাম শুরু হয়েছে শত্রুবাহিনীর প্রতিটি সেক্টরে। ইয়েমেনে ধ্বংসযজ্ঞ শুরুর মূল হোতা আমেরিকাও এই অভিযানে হতাহত শত্রুদের জন্য শোক প্রকাশ করেছে।
আল-কায়েদা আরব উপদ্বীপ শাখা জামা’আত আনসারুশ শরিয়াহ্ সংক্ষিপ্ত এক বিবৃতিতে বরকতময় এই সফল অভিযানে জেনারেল সাঈদের নিহত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছে।
স্থানীয় সূত্রমতে, নিহত এই কুখ্যাত জেনারেল ২০০০ সাল থেকে সামরিক বাহিনীর নেতৃত্ব দিচ্ছে। তার জুলুম ও নৃশংস সব শাস্তির ফলে ইয়েমেনের কয়েক হাজার নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিক কারাবন্দী অবস্থায় মারা গেছেন। এভাবেই সে ইয়েমেনের দক্ষিণাঞ্চলে নিজের জন্য এক ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল।
জানা যায় যে, তার ভয়াবহ অপরাধের পরিধি এতোটাই লম্বা ছিলো যে, দেশটির ইসলামি প্রতিরোধ যোদ্ধারা জনগণের আহ্বানে ২০১১ সাল থেকে তাকে হত্যা করতে ৭ অভিযান পরিচালনা করছেন। অবশেষে মুজাহিদগণ সম্প্রতি শাবওয়াহ রাজ্যের নিকটস্থ আবিয়ানের ওমরান উপত্যকায় তাকে ও তার বাহিনীর শীর্ষ কমান্ডারদের হত্যা করতে সক্ষম হয়েছেন, আলহামদুলিল্লাহ।
আল-মালাহিম থেকে প্রকাশিত অন্য এক বিবৃতিতে আনসারুশ শরিয়াহ্’র সামরিক নেতৃত্ব জানিয়েছে যে, শত্রুরা তাদের পূর্বের অপারেশনে মুজাহিদদের কাছে শোচনীয় পরাজয় বরণ করেছে। ফলে শত্রুরা এখন তাদের অবশিষ্ট ভাড়াটে বাহিনীর মনোবল ফিরাতে “সোর্ডস অফ হাউস” নামে একটি নতুন অভিযানের ঘোষণা দিয়েছে। এই ঘোষণার পর তারা সংঘবদ্ধ হয়ে ওমরান উপত্যকার দিকে তাদের আক্রমণের পুনরাবৃত্তি করেছে।
ভাড়াটে সৈন্যরা ওমরানের দিকে অগ্রসর হওয়া চেষ্টার প্রথম ঘন্টায়ই মুজাহিদদের ভারী অভিযানের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। মুজাহিদগণ বীরত্বের সাথে তাদের আগ্রাসন প্রতিহত করেন। এসময় মুজাহিদদের অভিযানে শত্রু বাহিনীতে ব্যাপক মৃত্যু ও আহতের ঘটনা ঘটে। ফলে শত্রুদের এই বাহিনীটি ভেঙ্গে পড়ে এবং পিছু হটতে বাধ্য হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, দ্বিতীয় পর্বের এই যুদ্ধটি আগেরটির মতো হবে না। শত্রুরা তাদের সামনে আমাদেরকে বীরত্বের সাথে যুদ্ধরত অবস্থায় খুঁজে পাবে। তারা এখান থেকে মৃত্যু আর পরাজয় ছাড়া অন্য কিছুই নিয়ে ফিরতে পারবে না। ইনশাআল্লাহ
সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ।
আল কায়েদা আরব উপদ্বীপের মুজাহিদদের এই বিজয় উম্মাহর হৃদয়কে প্রশান্ত করেছে।
A two-line rhyme to celebrate this victory by AQAP’s Mujahid brothers-
মুজাহিদদের গৌরবান্বিত বিজয়ের বার্তা
শত্রুদের সুখনিদ্রাকে করে দেয় ভর্তা
ওই দেখ খিলাফার লাল সূর্য উদিত হচ্ছে
তাগুত ও কুফফাররা কাপুরুষের ন্যায় পালাচ্ছে
الله أكبر و العزة لله
বাংলাদেশী মিডিয়াগুলো আবার চরমভাবে মিথ্যা বলতে শুরু করেছে। এর একটা সমাধান অবশ্যই করা দরকার। হতে পারে সময় টিভি, যমুনা টিভি আর একাত্তর টিভিতে দেখানো কয়েকটা ভিডিও আগে একটু দিয়ে তারপর আফগানিস্তানের বাস্তব অবস্থা তথ্যের আলোকে প্রমান করে একটা ভিডিও কন্টেন্ট তৈরি করে উম্মাহ নেটওয়ার্ক বা জনপ্রিয় কোন চ্যানেলে আপলোড করা অথবা এসব মিডিয়াগুলোকে চরমভাবে একটা হুমকি দেওয়া যে বেশি উল্টোপাল্টা করলে কিন্তু কার্যালয় থাকবে না উড়ে যাবে। যাইহোক কোনভাবে এটা থামানো দরকার। যদি কর্তৃপক্ষ বিষয়টা একটু গুরুত্ব সহকারে নিতেন…!!!
লুঙ্গি পরা মাস্তানদের হামলায় জোব্বা পরা আরব বকধার্মিক আর ওদের সাঙ্গপাঙ্গরা পায়জামা নষ্ট করে পালাবে, ইনশাআল্লাহ।