সম্প্রতি ভারতের একটি স্কুলে মুসলিম শিশুদের প্রতি হিন্দু শিক্ষিকার বিদ্বেষপূর্ণ আচরণের একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এতে দেখা গেছে, হিন্দু শিক্ষিকা শিশুদেরকে তাদের অন্য মুসলিম সহপাঠীকে মারধোর করার নির্দেশ দিচ্ছে।
ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৪ আগস্ট বৃহস্পতিবার, ভারতের উত্তর প্রদেশের কোবাপুর গ্রামের “নেহা পাবলিক প্রাইমারী স্কুলে।
معلمان هنديان يأمران طفلا هنديا مسلما عمره 7 سنوات بالوقوف أمام زملائه وتلقي الصفعات والإهانات ويطلبان طرده بسبب دينه pic.twitter.com/9xOycar0UM
— قناة الجزيرة (@AJArabic) August 25, 2023
ভিডিও ক্লিপটিতে দেখা যায়, হিন্দু শিক্ষিকা ত্রিপ্ত ত্যাগী তার চেয়ারে বসে ছাত্রদেরকে নির্দেশ দিচ্ছে, তারা যেনো মুসলিম শিশু শিক্ষার্থীকে মারধর করে। তার এই নির্দেশের পর ছাত্ররা পালাক্রমে মুসলিম সহপাঠীকে মারধর করতে শুরু করে। তখন কোনো কোনো শিক্ষার্থী হালকা মারধর করলে তাকে বলা হচ্ছিল, কেন তাকে হালকাভাবে আঘাত করছো? তাকে জোরে আঘাত কর, তার মুখ, পেট ও কোমরে আঘাত কর।
নির্যাতনের শিকার ৭ বছর বয়সী শিশু মুহাম্মদ আল-তামাশ একটি প্রেস সাক্ষাৎকারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানায়, “নির্যাতনের দৃশ্যের এই ঘটনাটি এক ঘন্টা ধরে চলেছে।”
শিশুটির মা রুবিনা যোগ করেছেন, “আমার ছেলে কাঁদতে কাঁদতে বাড়িতে এসেছিল, সে শারীরিক আঘাতের পাশাপাশি প্রচন্ড মানসিক আঘাত পেয়েছে।”
আর শিশুটির বাবা বলেন, “তার সাথে এমন আচরণে এটাই মনে হচ্ছে যে, শিক্ষকের অন্তর ঘৃণাতে পরিপূর্ণ।”
मुजफ्फरनगर वायरल वीडियो पर बच्चे ने दिया बयान
कहा- "5 का पहाड़ा सही से याद नहीं था इसलिए मुझे करीब एक घंटे तक टीचर ने पिटवाया"#NehaPublicSchool #Muzaffarnagar #Viralvideo #TIME8 pic.twitter.com/xdcvnH5fbn
— TIME8 (@TIME8News) August 26, 2023
ঐ শিক্ষিকা অবশ্য দাবি করেছেন যে, সে নিজে শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী হওয়ায় অন্য ছাত্রদের দিয়ে ঐ মুসলিম শিশুটিকে মার দেওয়ানোর কাজটি করিয়েছে। কিন্তু ভিডিওতে ঘটনার সময় তার কণ্ঠস্বরে শোনা যায়, “আমি ঘোষণা করছি, এসমস্ত মুসলিম শিশুদের অবশ্যই চলে যেতে হবে।”
তৃপ্তি ত্যাগী ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা। তৃপ্তি ত্যাগী বলেছে, তার আচরণের জন্য সে লজ্জিত নয়। সে আরো বলে, তারা আইন বানিয়েছেন। তবে স্কুলে শিশুদের নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। তারা এভাবেই শিশুদের নিয়ন্ত্রণ করে।
ওই শিক্ষিকা আরও বলে, “আমি এই গ্রামের শিক্ষিকা। সবাই আমার সঙ্গে রয়েছে।”
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশটির প্রধান বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধী পর্যন্ত টুইট করে লিখেছে, নিরীহ শিশুদের মনে বৈষম্যের বিষ বপন করা, স্কুলের মতো একটি পবিত্র স্থানকে ঘৃণার বাজারে পরিণত করা; একজন শিক্ষকের জন্য এর চেয়ে খারাপ আর কিছু হতে পারে না।
তিনি ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টিকে রাজনৈতিকভাবে জড়িয়ে বলেন, এটি বিজেপি দ্বারা ছড়িয়ে দেওয়া একই কেরোসিন, যা ভারতের প্রতিটি কোণায় আগুন দিয়েছে।
তথ্যসূত্র:
1. UP school where teacher got kids to beat Muslim student shut
– https://tinyurl.com/ycx8x422
2. স্কুলে মুসলিম শিক্ষার্থীকে থাপ্পড়ের ঘটনায় তোলপাড় ভারত
– https://tinyurl.com/ye4kk9up
3. ভারতে সহপাঠীদের মুসলিম শিশুকে চড় মারতে নির্দেশ: লজ্জিত নন সেই শিক্ষিকা
– https://tinyurl.com/syjwz83t