যুদ্ধ বিরতির আওতায় আল কাসসাম ব্রিগেডের মুজাহিদদের কাছ থেকে যেসকল ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তি পেয়েছে, তাদের কেউই এখন পর্যন্ত নির্যাতন কিংবা অসদাচরণের কোন অভিযোগ করেনি। বরং, হামাস মুজাহিদদের কাছে সম্মান ও উত্তম অবস্থায় থাকার কথা উল্লেখ্য করছে মুক্তিপ্রাপ্ত ইসরায়েলিরা।
ইসরায়েল সরকার মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দীদের মিডিয়ায় কথা বলতে দিচ্ছে না। তবে হামাসের কাছ থেকে বিদায় নেয়ার মুহূর্তে বেশিরভাগ জিম্মিকেই দেখা যায়, তারা হাসিমুখে বিদায় জানাচ্ছেন মুজাহিদদের।
এরই মাঝে, মুজাহিদরা জিম্মিদের সাথে কেমন আচরণ করেছেন তার একটি উত্তম বর্ণনা দিয়েছেন সদ্য মুক্তি পাওয়া এক ইসরায়েলি মা।
ইসরায়েলি ঐ মায়ের নাম ড্যানিয়েল এবং তার মেয়ের নাম এ্যামিলিয়া। উভয়েই ৫০ দিনের বেশি সময় কাসসাম ব্রিগেডের মুজাহিদদের কাছে আটক থাকার পর মুক্তি পেয়েছে। মুক্তির সময় সে আল-কাসসাম ব্রিগেডের সদস্যদের উদ্দেশ্যে একটি নোট বা চিঠি রেখে যায়। মুজাহিদরা সেই চিঠিটি প্রকাশ করেছেন। প্যালেস্টাইন ইনফরমেশন সেন্টারের তথ্যানুযায়ী, চিঠিটি লিখা হয়েছে হিব্রু ভাষায়।
চিঠিতে ঐ ইসরায়েলি মা লিখেছে, “বিগত কয়েক সপ্তাহ যাদের সঙ্গে ছিলাম, সেই জেনারেলদের প্রতি। – আগামীকাল হয়তো আমরা আলাদা হয়ে যাব। তবে, আমার মেয়ে এ্যামিলিয়ার প্রতি আপনারা যে অনবদ্য মানবিকতা দেখিয়েছেন, তার জন্য আপনাদেরকে হৃদয়ের গভীর থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আপনারা তার সাথে পিতামাতার মতোই আচরণ করেছেন, যে কোন প্রয়োজনে আপনারা তাকে ঘরে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।”
“আপনাদেরকে সে নিছক বন্ধু মনে করেনি, বরং সত্যিকার ও মহৎ হৃদয়ের প্রিয় মানুষ মনে করেছে। ধন্যবাদ, ধন্যবাদ, এবং আবারও ধন্যবাদ, তার সাথে আপনাদের অনেক বেশি সময় কাটানোর জন্য, তার প্রতি যত্নশীল ভূমিকা পালনের জন্য। ধন্যবাদ তার ব্যপারে ধৈর্যশীল হওয়ার জন্য, তাকে মিষ্টি আর ফলমূল দিয়ে খুশি করার জন্য, এবং অন্য সে সব কিছুর জন্যও- যেগুলো সেখানে সহজপ্রাপ্য ছিল না।”
“শিশুরা আবদ্ধ থাকতে পছন্দ করে না। কিন্তু আপনাদেরকে ধন্যবাদ, এবং অন্যান্য দয়ার্দ্র ব্যক্তিদেরকেও ধন্যবাদ,কারণ আপনাদের জন্যই আমার মেয়ে নিজেকে গাজার রানীর মতো মনে করতো। আপনাদের কারণেই সে এমন অনুভব করতো যে, সেই হয়তো এই গোটা বিশ্বের কেন্দ্র। এই দীর্ঘ সফরে সাধারণ সৈন্য থেকে নেতাদের পর্যন্ত এমন কোন ব্যক্তিরই মুখোমুখি হইনি, যিনি এ্যামিলিয়ার সাথে দয়া, সহানুভূতি এবং ভালোবাসাপূর্ণ আচরণ করেননি।”
“আমি আজীবন এই কৃতজ্ঞতাবোধের জিম্মি হয়ে থাকব যে, আমার মেয়ে কোন স্থায়ী মানসিক আঘাত নিয়ে এই জায়গা ছেড়ে যাচ্ছে না। নিজেরা কঠিন পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে থাকা অবস্থাতেও এবং গাজায় ভয়াবহ সব ক্ষতির শিকার হতে থাকা সত্ত্বেও আপনারা তার প্রতি যে সদয় আচরণ করেছেন, আমরা তা সবসময় মনে রাখব। আমরা যদি এই দুনিয়াতে পরস্পরের দয়ালু বন্ধু হয়ে থাকতে পারতাম! আমি আপনাদের সুস্বাস্থ্য এবং কল্যাণ কামনা করছি।”
“আপনাদের এবং আপনাদের পরিবারের সদস্যদের সুস্বাস্থ্য কামনা করছি, তাদের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করছি। আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ।”
ড্যানিয়েল ও এ্যামিলিয়া