গত ৩১ ডিসেম্বর রবিবার কাবুলে সরকারি মিডিয়া ও তথ্য কেন্দ্রের সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ও নিরাপত্তা ক্লিয়ারেন্স কমিশনের চেয়ারম্যান শ্রদ্ধেয় মৌলভী মুহাম্মাদ ইয়াকুব মুজাহিদ প্রতিরক্ষা বিভাগের অবদান সম্পর্কে তথ্য শেয়ার করেন। উক্ত অনুষ্ঠানে তিনি ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নয়নের চিত্রও তুলে ধরেন।
মৌলভী মুহাম্মাদ ইয়াকুব মুজাহিদ আফগানিস্তানে দখলদারিত্ব অবসান করতে দোহা চুক্তির প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে অঙ্গীকার পূনর্ব্যক্ত করেন। সেই সাথে আফগানিস্তানে বিদ্রোহী এবং বিভক্তি সৃষ্টিকারী বিভিন্ন দলের কার্যক্রম ৯০ শতাংশ কমে এসেছে বলেন জানান। এসময়, আফগানিস্তানে দায়েশের (আইএস) কোন শিকড় নেই বলেও তিনি জোর দিয়ে উল্লেখ করেন। আর আইএসআইএসের সৃষ্টিকারী এবং এর অর্থনৈতিক ডোনারদেরকে এবিষয়টি অনুধাবন করতে আহ্বান জানান তিনি।
মৌলভী মোহাম্মদ ইয়াকুব মুজাহিদ আরো জানান যে, কিছু অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক শক্তি আফগানিস্তান সম্পর্কে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পর্যায়ে উত্তেজনা বৃদ্ধি করতে গুজব ছড়াচ্ছে। এধরনের গুজবে কান না দেওয়ার জন্য মৌলভী মুহাম্মাদ ইয়াকুব মুজাহিদ নিজ দেশের জনগণের প্রতি এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশের প্রতি আহ্বান জানান।
সাম্প্রতিক সংঘটিত কিছু ঘটনা সম্পর্কে মৌলভী মোহাম্মদ ইয়াকুব মুজাহিদ বলেন, আফগানিস্তান বিজয়ের পর কতক বিদেশী নাগরিক- বিশেষ করে তাজিখ ও পাকিস্তানি কিছু লোক মসজিদ, সম্মানিত উলামায়ে দ্বীন, তাঁদের আশ্রম ও জনাসমাবেশে হামলার সাথে জড়িত ছিলো। নিরাপত্তা বাহিনী হামলাকারীদের নির্মূলে তাদের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়, ফলে বেশ কিছু হতাহত এবং গ্রেফতারের ঘটনা ঘটে। যেসকল দেশ থেকে সন্ত্রাসীরা আফগানিস্তানে প্রবেশ করছে, সেসকল দেশকে তাদের সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি করতে আহ্বান জানান মৌলভী মোহাম্মদ ইয়াকুব মুজাহিদ।
ভার্চুয়াল জগতের কিছু উদাহরণ ব্যতীত আফগানিস্তানে মন্দ এবং দূর্নীতির কোন স্থান নেই উল্লেখ করে মৌলভী মোহাম্মদ ইয়াকুব মুজাহিদ ভার্চুয়াল জগতের অপরাধীদের প্রতি সতর্কতা উচ্চারণ করেন। তিনি এই ধরনের কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত ব্যক্তিদেরকে ঘোষিত সাধারণ ক্ষমার সুযোগ নেওয়ার তাগিদ দেন। পাশাপাশি, এসকল ব্যক্তি ও হামলাকারীকে নিজেদের প্রক্সি বা ভাড়াটে সৈন্য হিসাবে ব্যবহার করে আফগানিস্তানকে শোষণ করার অনুমতি দেওয়ার ব্যপারে তিনি অন্যান্য দেশকেও সতর্ক করেন।
জনাব মুজাহিদ অপহরণকারী এবং সশস্ত্র ও নিরস্ত্র ডাকাতদের দমন করার ক্ষেত্রে ইমারতে ইসলামিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর সাফল্য তুলে ধরেন। এধরণের অসংখ্য সন্দেহভাজন অপরাধীকে হত্যা বা গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ২০০ জনের অধিক আফগানীকে তাদের খপ্পর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
মৌলভী মোহাম্মদ ইয়াকুব মুজাহিদ (হাফি.) আফগানিস্তানকে অবৈধ অস্ত্র পাচারের রুট হিসেবে ব্যবহার সংক্রান্ত দাবিকে ভিত্তিহীন উল্লেখ করে তা প্রত্যাখান করে। তিনি বলেন, এই জাতীয় দাবিগুলো সত্য থেকে অনেক দূরে। কেননা, অবৈধ অস্ত্র পাচার কার্যকরভাবে প্রতিরোধ করা হয়েছে এবং আফগানিস্তানের অস্ত্রগুলো সুরক্ষিতভাবে রয়েছে।
জনাব মুজাহিদ ইমারতে ইসলামিয়ার প্রতিরক্ষা বাহিনী কর্তৃক সর্বোচ্চ নেতা আমির-উল-মুমিনিনের ডিক্রিসমূহ মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নের বিষয়টি উল্লেখ করেন। এই ধারাবাহিকতায় আফগানিস্তানজুড়ে ৮৩৪ টি মাদক প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা, ৫৭ টি অ্যালকোহল উৎপাদন স্থাপনা এবং ২২ টি ড্রাগ ট্যাবলেটের কারখানা ধ্বংস করা হয়েছে। তাছাড়া ৮,২৮২ জন মাদকাসক্ত ও সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, ১৩৯০৩ হেক্টর আফিম খেত ধ্বংস করা হয়েছে এবং পুনর্বাসন কেন্দ্রে ৯৫,২০৫ জন মাদকাসক্ত ব্যক্তির চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তথ্যসূত্র:
1. Minister of Defense Highlights Achievements and Improved Security in The Country
– http://tinyurl.com/yfhe9j9r