আফ্রিকাজুড়ে মুসলিমদের বিরুদ্ধে গণহত্যায় অংশ নিচ্ছে তুর্কি ড্রোন

0
337
তুর্কি ড্রোন হামলায় নিহত মুসলিমদের ঝলসে যাওয়া কিছু দেহ

পূর্ব ও পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোর ক্ষমতার মসনদগুলো দখল করে আছে ইসলাম বিরোধী ও জনসমর্থন শূন্য অবৈধ কিছু সরকার। এরমধ্যে মালি ও সোমালিয়া অন্যতম। ফলে দেশ দুটিকে বিদেশি দখলদারিত্ব ও তাদের সমর্থিত অবৈধ সরকার থেকে মুক্ত করতে এবং ইসলামি শরিয়াহ্ শাসন ফিরিয়ে আনতে গত দুই দশক ধরে সশস্ত্র ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন মুসলিমরা।

কিন্তু এই অঞ্চলের মুসলিমদের ন্যায্য প্রতিরোধ আন্দোলনকে দমন করতে পশ্চিমাদের পাশাপাশি অবৈধ সরকারগুলোকে সর্বাত্মক সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে কিছু নামধারি মুসলিম রাষ্ট্রও। এসব মুসলিম দেশেরগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ন্যাটোভুক্ত তুরস্ক। অবৈধ সরকারগুলোর সামরিক বাহিনীকে প্রশিক্ষণ এবং সামরিক সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি তুরস্ক তার তৈরি ড্রোনগুলো দিয়েও সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তুর্কি এই ড্রোনগুলোর হামলার প্রধান টার্গেটে পরিণত হচ্ছেন আফ্রিকার বেসামরিক মুসলিমরা। ফলে গত ১৭ ও ১৮ মার্চ মালি এবং সোমালিয়ায় তুর্কি ড্রোনগুলোর হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৪ শিশু ও ৯ জন মহিলা সহ অন্তত ৩৪ জন বেসামরিক মুসলিম।

স্থানীয় সূত্রমতে, তুর্কি ড্রোনগুলো থেকে গত ১৭ মার্চ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয় মালির গাও রাজ্যের আমাসিন এলাকায়। এলাকাটির একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র লক্ষ্য করে তুর্কি ড্রোন থেকে পরপর ২টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়। ফলে উক্ত স্বাস্থ্য কেন্দ্রের একজন চিকিৎসক সহ অন্তত ১৩ জন নিহত হন। তাদের মধ্যে ৩ শিশু সহ ৪ জন মহিলাও রয়েছেন। আর এই হামলায় আহত হন আরও ১০ জনেরও বেশি বেসরকারি নাগরিক।

মালিতে বর্বরোচিত এই গণহত্যার একদিন পর অর্থাৎ গত ১৮ মার্চ সোমবার, পূর্ব আফ্রিকার দেশ সোমালিয়াতেও বেসরকারিকদের বিরুদ্ধে আরও একটি গণহত্যা চালায় তুর্কি ড্রোনগুলো।

শাহাদাহ এজেন্সির তথ্য অনুযায়ী, তুর্কি ড্রোনগুলো এদিন রাতে তারাবিহ সালাতরত মুসলিমদের উপর পরপর দুই দফা ড্রোন হামলা চালায়। রাজধানী মোগাদিশুর আফগোয়া শহরের একটি মসজিদ লক্ষ্য করে প্রথমে হামলা চালানো হয়। এসময় হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া অনেকে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে খামারে অবস্থান নেন। কিন্তু সেখানেও বেসামরিক লোকদের লক্ষ্য করে হামলা চালায় তুর্কি ড্রোনগুলো।

ফলে সেখানে ১১ শিশু ও ৬ মহিলা সহ ২১ জন বেসামরিক মুসলিম শহিদ হন। আহত হন আরও ১৯ জন বেসামরিক নাগরিক।

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, তুর্কি ড্রোনগুলো দুবার বোমা বর্ষণ করে। প্রথমটি সরাসরি মসজিদে, যার ফলে অনেক মুসল্লি শহিদ ও আহত হয়। তারপর ড্রোনগুলো দ্বিতীয়বার বোমাবর্ষণ করে প্রথম বোমা হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা যখন তাদের জীবন বাঁচাতে গ্রামে প্রবেশ করেন।

সোমালিয়া এবং মালিতে উভয় গণহত্যার পর সরকারি বাহিনী দাবি করে যে, এই ড্রোন হামলাগুলোর মাধ্যমে সশস্ত্র প্রতিরোধ যোদ্ধাদের নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। কিন্তু স্থানীয় সূত্রগুলোর প্রচারিত ছবি ও ভিডিওগুলো সামরিক বাহিনীর এমন দাবিকে সুস্পষ্ট মিথ্যা বলেই প্রমাণিত করে।

শাহাদাহ এজেন্সির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মিডিয়া সাধারণত আন্তর্জাতিক বাহিনীর গণহত্যাকে গোপন করে। আর তাদের এমন অবস্থান উপজাতিদের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দেয়। ফলে তারা একসময় তাদের আত্মরক্ষা ও সমস্যার সমাধান খুঁজে পায় জিহাদি দলগুলোতে। তারা বুঝতে পারেন জিহাদ ও শরিয়াহ্ শাসনই একমাত্র মুক্তির পথ। আর একারণেই স্থানীয়রা দলে দলে সশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধের জন্য হাতে অস্ত্র তুলে নেন এবং পশ্চিমাদের চাপিয়ে দেওয়া গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন।

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধদারসে রমাদান।। দারস-৫।। আল্লাহর সাথে মুরাকাবা।।
পরবর্তী নিবন্ধগাজায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা বেড়ে ৩১৭২৬