আট মাস ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ছিলেন গাজার আল শিফা হাসপাতালের পরিচালক ড. মুহাম্মদ আবু সালমিয়া। এরপর তাকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। ইসরায়েলে বন্দি অবস্থায় নির্মম নির্যাতন করা হতো বলে দাবি করেছেন তিনি। ১ জুলাই, সোমবার তিনিসহ বেশ কয়েকজন ইসরায়েলের বন্দিশিবির থেকে মুক্ত হয়ে গাজায় ফেরেন।
ইসরায়েলের সব জেলখানা বন্দিতে পূর্ণ। এ কারণে ড. মুহাম্মদ আবু সালমিয়া সহ ৫৫ জন বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল। মুক্তি পাওয়ার পর ড. মুহাম্মদ আবু সালমিয়া ইসরায়েলি বন্দিশিবিরগুলোর অবস্থা তুলে ধরেছেন। তিনি মুক্তি পেয়ে খান ইউনুসে বলেন, সীমা লঙ্ঘন নিয়ে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর কোনো অনুশোচনা নেই। তারা বন্দিদের সঙ্গে এমন আচরণ করছে, যেন তারা জড় পদার্থ। তারা ফিলিস্তিনি বন্দিদেরকে রাতদিন নির্যাতন করছে। এমনকি ফিলিস্তিনি বন্দিদেরকে স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার পরিবর্তে ইসরায়েলি মেডিকেল স্টাফরা তাদেরকে প্রহার, মারধর ও নির্যাতন করছে।
আল শিফা হাসপাতালের পরিচালক ড. মুহাম্মদ আবু সালমিয়া ইসরায়েলি জেলখানায় নিজের অভিজ্ঞতা সংবাদ সম্মেলন করে তুলে ধরেন। এতে তিনি বলেন, ইন্টারোগেশন সেলে বা জিজ্ঞাসাবাদের সময়ই অনেক বন্দি মারা গেছেন। ইসরায়েলি বাহিনীর কাছে ফেলে এসেছি ফিলিস্তিনের হাজারো বন্দিকে। ফিলিস্তিনি বন্দিদেরকে প্রহার ও নির্যাতন করে ইসরায়েলি চিকিৎসক ও নার্সরা। তাদের সঙ্গে এমন আচরণ করেন যেন তারা অনুভূতিহীন জড় পদার্থ। ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে থাকা বন্দিরা প্রতিজন প্রায় ৩০ কেজি করে ওজন হারিয়েছেন। তাদেরকে খাবার দেয়া হয় না। তিনি আরও বলেন, আমার বিরুদ্ধে তিনবার বিচার বসালেও কোনো অভিযোগ আনতে পারেনি দখলদার বাহিনী। এর অর্থ তারা আমাকে গ্রেপ্তার করেছিল রাজনৈতিক উদ্দেশে। আমাদেরকে নির্যাতন করা হয়েছে। প্রতিদিনই ইসরায়েলি সেনারা বন্দিদের সেলে প্রবেশ করে এবং তাদেরকে নির্যাতন করে। বন্দি থাকার সময়ে আমাদেরকে কোনো আইনজীবীর সুবিধা দেয়া হয়নি। আমাদের সঙ্গে কোনো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানকে সাক্ষাৎ করার অনুমতি দেয়া হয়নি। দু’মাস ধরে কোনো বন্দিকেই দিনে এক পিস পাউরুটির বেশি খাবার দেয়া হয় না।
তিনি বলেন, বন্দি ও চিকিৎসাকর্মীদের সঙ্গে ইসরায়েলি বাহিনী চরম নিষ্ঠুরতার পরিচয় দিয়েছে। শত শত চিকিৎসাকর্মীকে টার্গেট করা হয়েছে এবং দখলদারদের কারাগারে তাদের নির্যাতন করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, তাদেরকে আমি খুবই করুণ অবস্থায় ফেলে এসেছি। আমার বার্তা হলো- সব ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তি না দেয়া হলে কোনো রকম সমঝোতা হতে পারে না। তিনি আরও বলেন, আল শিফা হাসপাতাল পুনর্নির্মাণ করা হবে। এটা শুধু গাজার মানুষ নয়, সব ফিলিস্তিনির স্বাস্থ্যসেবার এক আলোকবর্তিকা হবে। উপযুক্ত সময়ে দ্রুতই আমি দায়িত্ব শুরু করবো।
তথ্যসূত্র:
1.Leader of Gaza’s Al-Shifa Hospital accuses Israel of abusing Palestinian prisoners
– https://tinyurl.com/dpvbc2ep
2.Gaza doctor claims Israel tortured him
– https://tinyurl.com/4dzj74ec