সম্প্রতি বাংলাভাষী টিটিপির সংবাদ প্রচারক একটি টেলিগ্রাম চ্যানেল নিজেদেরকে টিটিপির অফিসিয়াল বাংলা মিডিয়া বলে দাবি করছে। গত ১৮ মে চ্যানেলটির একটি পোস্টে বেশ কিছু অসংগতিমূলক দাবি করা হয়।
এরমধ্যে কয়েকটি দাবি হচ্ছে-
– বিশ্বের সকল জিহাদি তানজিমগুলো থেকে টিটিপিই সবচেয়ে বড়, শক্তিশালী ও সুসৃংখল জামাআত।
– দলটির শুরা সদস্যরা হচ্ছেন পাক, ভারত ও আরবের বড় বড় আলেমগণ।
– টিটিপির লক্ষ্য হচ্ছে পাক, ভারত ও বাংলাদেশে (উপমহাদেশ) ইসলামি হুকুমত প্রতিষ্ঠা করা।
– এছাড়াও আরো কিছু মুখরোচক দাবি করা হয়েছে উক্ত পোস্টে।
তাদের দাবির সত্যতা কতটুকু:
– এই চ্যানেলে করা দাবিগুলো টিটিপির অফিসিয়াল স্টেটমেন্টের সম্পূর্ণ বিপরীত। কেননা টিটিপি সবসময়ই নিজেদেরকে একটি আঞ্চলিক জিহাদি সংগঠন হিসাবে পরিচয় দিয়ে থাকে। আর এর সদস্য এবং সমস্ত উমারাগণও পাকিস্তানি।
– টিটিপি চলতি সনের ১৭ জানুয়ারী থেকে একটি রহস্যময় নতুন নীতিতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে পরিচালিত আক্রমণগুলোর প্রতিদিনের আপডেট তথ্য অফিসিয়াল বিবৃতিতে প্রকাশ করা বন্ধ করে দিয়েছে। শুধু বড়সড় অভিযানগুলো নিয়ে ভিডিও রিপোর্ট এবং মাসিক ইনফোগ্রফির মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে। অপরদিকে বাংলায় টিটিপির অফিসিয়াল মিডিয়া বলে দাবি করা চ্যানেলটি নিয়মিত টিটিপির অভিযানের নিউজ শেয়ার করছে এবং সেসব নিউজের নিচে টিটিপির মুখপাত্র মুহাম্মদ খোরাসানি (হাফি.) এর নাম ব্যবহার করছে। উল্লেখ্য, সোস্যাল মিডিয়ায় এরকম অনেক নিউজ অনেকে প্রকাশ করে। সেগুলো সংগ্রহ করে মুখপাত্রের নামে চালিয়ে দেয়া একটি অসততা বলেই প্রতীয়মান হয়।
– টিটিপির অফিসিয়াল বাংলা মিডিয়া আছে এবং কাজ করছে- এমন তথ্য টিটিপির অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এবং টেলিগ্রাম চ্যানেল থেকে প্রকাশ করা হয় নি। যে তথ্য অফিসিয়াল মাধ্যমে জানানো হবে না, তা যেকেউ দাবী করলেই তা মেনে নেয়ার সুযোগ নেই। বরং এখানে ফাঁদ এর প্রশ্ন চলে আসে।
সবশেষে পাঠকদের উপদেশ দিচ্ছি যে, যেকেউ নিজেদেরকে অফিসিয়াল চ্যানেল বা অ্যাকাউন্ট দাবী করলেই তার দিকে ঝুঁকে না পড়েন বরং তারা যার দিকে নিসবত করে নিজেদেরকে অফিসিয়াল বলছে তাদের থেকে কোন নিশ্চয়তার দলিল খুজবেন। যদি অফিসিয়াল কোন স্টেটমেন্ট না পাওয়া যায় তাহলে তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন তাদের পাতা ফাঁদে পা দিবেন না ইনশাআল্লাহ। একই সাথে যারা নিজেদেরকে অফিসিয়াল দাবী করবে, তারা যেন মূল অফিসিয়াল প্লাটফর্ম থেকে তাদের ব্যাপারে ঘোষণা প্রকাশ করার ব্যবস্থা করে; তা নিশ্চিত করতে বলবেন। অন্যথায় তাদের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে নিজেদের ক্ষতির দিকে ঠেকে দিবেন না ইনশাআল্লাহ।
হয়তো ত্বগুতদের, নয়তো কোন আবেগি ভাইয়ের কর্মকাণ্ড।
উভয় পক্ষই প্রকৃত জিহাদের পথের পথিকদের পথচলাকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে বাধাগ্রস্থ করতে চায়।
আমাদের এইসকল ফাঁদ থেকে সতর্ক থাকা আবশ্যক।
জাযাকাল্লাহ খাইরান ভাইয়েরা, সতর্ক করার জন্য।