
গত ৩১শে অক্টোবর, বৃহস্পতিবার হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কালী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এই পূজা উৎযাপনের নামে বুয়েটের আহসানুল্লাহ হলে মোমের আলো সাজিয়ে লেখা হয় ‘জয় শ্রীরাম’। লেখার উপরে একটি ত্রিশূলও যুক্ত করা হয়। সেই সাথে বুয়েটের আহসানুল্লাহ হলকে প্রকম্পিত করা হয় জয় শ্রীরাম স্লোগান দিয়ে। এ নিয়ে সমালোচনা চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
নেটিজেনরা বলছেন, জয় শ্রীরাম আসলে কোনো ধর্মীয় স্লোগান না। এটি একটি রাজনৈতিক স্লোগান। ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগানের উৎপত্তি নিয়ে রঞ্জন বসু নামে একজন ভারতীয় লেখক বলেন, “এটা বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছিল ঠিক ৩০ বছর আগে বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদভানির বিখ্যাত (বা কুখ্যাত) রথযাত্রার সময়।”
তিনি বলেন, “রথযাত্রার উন্মাদনায় আসমুদ্রহিমাচল ভারতের হিন্দুদের সামিল করতে সেই যাত্রার সঙ্গে দরকার ছিল একটি জোরদার রক্ত-গরম-করা বজ্রনির্ঘোষ। বিজেপি নেতৃত্ব অনেক ভেবেচিন্তে তখন বের করল এই ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান, সহযোগী বিশ্ব হিন্দু পরিষদেরও খুব পছন্দ হল শব্দ দুটো।”
ভারতে মুসলিমদের ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ধ্বংসের সময় থেকেই মূলত এই জয় শ্রীরাম স্লোগানের উত্থান। সেই থেকে উগ্রবাদী হিন্দুদের মধ্যে জনপ্রিয়তা পায় এই স্লোগান। আজও ভারতে জয় শ্রীরাম স্লোগান তুলে মুসলিমদের হত্যা করা হচ্ছে, মুসলিমদেরকে জোর করে বলানো হচ্ছে ‘জয় শ্রীরাম’।
আর এখন সেই জয় শ্র্রীরাম স্লোগানে প্রকম্পিত করা হলো মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বুয়েটের আহসানুল্লাহ হল। অথচ কিছুদিন আগে এই বুয়েটে মুসলিম শিক্ষার্থীরা সীরাত সম্মেলনের আয়োজন করতে চাইলে অনুমতি দেয়নি বুয়েটের প্রশাসন।
বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরও এদেশের মানুষের প্রকৃত মুক্তি মিলেনি। ভারতীয় আধিপত্যবাদ এবং হিন্দুত্ববাদের উত্থান এখনও এদেশের মানুষের সামনে প্রচ্ছন্ন হুমকি হিসেবে রয়ে গেছে। বরং সামনের দিনগুলোতে এই হিন্দুত্ববাদ মোকাবেলাই এদেশের জনসাধারণের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন দেশপ্রেমিক বিশেষজ্ঞগণ।
তথ্যসূত্র:
১. ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগানটা এলো কোত্থেকে?
– https://tinyurl.com/5ycw3y4s
২. জয় শ্রীরাম স্লোগান
– https://tinyurl.com/y4p6hkcy