বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে গুলিবিদ্ধ হন হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার রঘু চৌধুরী পাড়ার ইসমাইল মিয়ার ছেলে তকবির মিয়া। তার চিকিৎসা করাতে গিয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছে পরিবার।
বিক্রি করে দিতে হয়েছে উপার্জনের একমাত্র মাধ্যম সিএনজিচালিত অটোরিকশাটিও। তবুও চিকিৎসার কূল-কিনারা পাচ্ছে না পরিবারটি। এ অবস্থায় প্রতিনিয়ত মৃত্যুর প্রহর গুনছেন তকবির মিয়া।
ইসমাইল মিয়ার চার ছেলে ও চার মেয়ে। তিন মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। তিনি এখন কাজ না করলেও বড় ছেলে তানভির মিয়া অটোরিকশা চালিয়ে সংসার চালাচ্ছিলেন। তবে তকবির মিয়ার চিকিৎসার টাকা জোগাতে অটোরিকশাটি বিক্রি করে দিয়েছেন। তার ছোট তিন ভাই ও এক বোন লেখাপড়া করছে। তকবির স্থানীয় জনাব আলী কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র।
গুলিবিদ্ধ তকবির মিয়ার মা ফুলবাহার বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে দেশের জন্য যুদ্ধ (আন্দোলন) করতে গিয়েছিল। এখন তাকে নিয়ে আমরা পুরো পরিবার যুদ্ধ করছি। জানি না আমার ছেলে বাঁচবে না মরবে।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমার বড় ছেলের একটি অটোরিকশা ছিল। সেটির আয় দিয়ে পরিবার চলতো। এখন আরেক ছেলের চিকিৎসা করতে গিয়ে সেটিও বিক্রি করে দিতে হয়েছে। বাকি জীবন আমরা কীভাবে চলবো তা ভেবে দিশেহারা হয়ে পড়েছি।’
আক্ষেপ প্রকাশ করে তকবিরের বড় ভাই তানভির মিয়া বলেন, ‘তকবিরের চিকিৎসা করাতে আমাকে এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতাল যেতে হচ্ছে। চিকিৎসা ব্যয় এত বেশি যে, আমাদের পক্ষে বহন করা সম্ভব হচ্ছিল না। তাই বাধ্য হয়ে উপার্জনের একমাত্র সম্বলটি বিক্রি করে দিয়েছি। জানি না কীভাবে পরিবার চালাবো! এখন পর্যন্ত চিকিৎসা করাতে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে।’
উল্লেখ্য, গত ০৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলাকালে তকবির মিয়ার পেটে গুলি লাগে। গুলি বের করতে অপারেশন প্রয়োজন। কিন্তু অপারেশন বাংলাদেশে সম্ভব নয়। বিদেশে চিকিৎসা করার মতো সামর্থ্য নাই পরিবারের। সরকারের পক্ষ থেকে কোনও ধরণের আর্থিক সহায়তাই পায়নি বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন আহত তকবিরের পরিবার।
তথ্যসূত্রঃ
১.গুলিবিদ্ধ হয়ে সর্বস্বান্ত তকবিরের পরিবার, এখনো খোঁজ নেয়নি সরকার
– https://tinyurl.com/bdz7tykv