ভারতে দুর্নীতি উন্মোচন করা ‘সাহসী’ সাংবাদিকের লাশ মিলল সেপটিক ট্যাঙ্কে

0
133

‘সাহসী’ সাংবাদিক হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছিল ভারতের ছত্তিসগড়ের ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক মুকেশ চন্দ্রকর। একের পর এক চাঞ্চল্যকর সংবাদ প্রকাশ করে নজর কেড়েছিল অনেকের। প্রভাবশালীদের দুর্নীতির খবর প্রকাশই কি কাল হলো সাংবাদিক মুকেশের! যে কারণে হয়তো ‘নৃশংসভাবে হত্যার শিকার হতে হলো তাকে।

সম্প্রতি ১২০ কোটি টাকার একটি প্রকল্পে দুর্নীতির খবর ফাঁস করেছিল মুকেশ চন্দ্রকর। প্রশ্ন উঠেছে, এই তথ্য সামনে আনার জন্যই কি খুন হতে হলো তাকে?

শুক্রবার (০৪ জানুয়ারি) ছত্তিসগড়ের বিজাপুর জেলার একটি বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে মুকেশের মরদেহ উদ্ধার হয়। তার মৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড় পুরো ছত্তিসগড়ে। এরই মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মুকেশের পরিচিত ও ঘনিষ্ঠরা স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, ভয়ডর ছিল না তার। বেশ কয়েকবার তার ওপর হামলাও হয়। কিন্তু এরপরেও সত্য উদ্ঘাটনের খোঁজে ছুটে গেছে বার বার। বিজাপুর, বস্তার জেলার অনেক দুর্নীতি ও অপরাধের পর্দা ফাঁস করেছে। আর এই নির্ভীক সাংবাদিকতার জন্য বেশ জনপ্রিয়ও হয়ে উঠেছিল মুকেশ।

সাংবাদিকতায় আসার পর মুকেশ বলেছিল, বস্তারের এমন অনেক ঘটনা রয়েছে, যেগুলো সংবাদমাধ্যমগুলোতে কাটছাঁট করে দেখানো হয়। তাই এলাকার বিভিন্ন পরিস্থিতির ‘আনকাট’ ছবি তুলে ধরতে নিজের একটি ইউটিউব চ্যানেলও খোলে মুকেশ। নাম দেয় ‘বস্তার জংশন। দেড় লাখ সাবস্ক্রাইবার ছিল সেই চ্যানেলের।

স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, কোনো নতুন খবর করলেই মুকেশ এলাকার লোকজনদের ডেকে জিজ্ঞাসা করত, ঠিক হয়েছে কি না। বিজাপুর ও বস্তার চিনতেন হাতের তালুর মতো। বছর দুই-তিনেক আগে রাওঘাট প্রকল্প নিয়ে খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে দুষ্কৃতিদের হামলার শিকার হয় মুকেশ।

বস্তার জেলার মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকায় সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে খবর করেছিল মুকেশ। গঙ্গালুর থেকে হিরোলি পর্যন্ত একটি রাস্তা নির্মাণের জন্য টেন্ডার হয়েছিল ৫০ কোটি টাকার। কিন্তু, পরে সেই নির্মাণ খরচ ১২০ কোটি টাকায় পৌঁছে যায়। রাস্তা নির্মাণের ঠিকাদার সুরেশ চন্দ্রকরের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য সরকার।

পুলিশ স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, ঘটনার দিন চন্দ্রকর তার ভাই রীতেশ ও মহেন্দ্র রামটেকের সঙ্গে সুরেশ চন্দ্রকরের বাড়িতে নৈশভোজ করেছিলেন। সেই সময়ে তাদের মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হয়। রীতেশ ও মহেন্দ্র লোহার রড দিয়ে আক্রমণ করে মুকেশকে। হত্যার পরে সাংবাদিকে দেহ একটি সেপটিক ট্যাঙ্কে লুকিয়ে রেখে সিমেন্ট দিয়ে ট্যাঙ্কের মুখ জমিয়ে দেওয়া হয়।


তথ্যসূত্র:
1. Mukesh Chandrakar: Indian media bodies seek probe into murder of journalist
– https://tinyurl.com/mr9z987n
২. ভারতে দুর্নীতি উন্মোচন করা ‘সাহসী’ সাংবাদিকের লাশ মিলল সেপটিক ট্যাঙ্কে
– https://tinyurl.com/22kr9c6r

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধওয়ার্ড সভাপতির পদ নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ; আহত ০৬
পরবর্তী নিবন্ধনিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালনের সময় গ্রেফতার ০২ জঙ্গি