যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে রাজি হওয়ার পরও গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে দখলদার সেনারা। সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, কাতারের আমিরের ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অন্তত ৮০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে সন্ত্রাসী ইসরায়েল। নিহতদের মধ্যে ২০ শিশু এবং ২৫ নারী রয়েছে। এর মধ্যে শুধু গাজা সিটিতেই প্রাণ হারিয়েছেন ৩০ জন। এ ছাড়া দখলদারদের হামলায় আহত হয়েছে প্রায় ২০০ জন ।
আলজাজিরা অ্যারাবিকের সংবাদদাতা জানিয়েছেন, ১৬ জানুয়ারি, বৃহস্পতিবার গাজা সিটির ইঞ্জিনিয়ার্স ইউনিয়ন বিল্ডিংয়ের কাছের একটি ভবনে ভয়াবহ হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। ওই হামলায় নিহত হন ১৮ ফিলিস্তিনি। অপরদিকে ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, গাজা সিটির রেদওয়ান এলাকা থেকে ১২ জনের লাশ উদ্ধার করেছেন তারা। এ ছাড়া মধ্য গাজার বুরুজি ক্যাম্পের কারাজ এলাকায় ড্রোন হামলায় নিহত হন আরও পাঁচজন। নিহতরা সেখানে জড়ো হয়েছিলেন।
হামাস ও ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতির ঘোষণা শোনার পর গাজার সাধারণ মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে আসেন। তবে কিছুক্ষণ পরই সন্ত্রাসী ইসরায়েলি হামলার আশঙ্কায় বাসিন্দারা আবারও নিজ নিজ তাঁবুতে ফিরে যান। আলজাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ মধ্য গাজার দের এল-বালাহ থেকে বলেছেন, যুদ্ধবিরতির কার্যকারিতা যেহেতু রবিবারের আগে শুরু হবে না, তাই গাজার মানুষের শঙ্কা ইসরায়েলিরা শেষ মুহূর্তে হামলার তীব্রতা বাড়িয়ে দিতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আশঙ্কা করছি ড্রোন ও কামান হামলা বৃদ্ধি পাবে।
গাজা শহর থেকে ভূখন্ডের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত নুসাইরাত ক্যাম্পে বাস্তুচ্যুত ৪৫ বছর বয়সি রান্ডা সামেহ বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করতে পারছি না, এক বছরেরও বেশি সময় ধরে এ দুঃস্বপ্ন অবশেষে শেষ হচ্ছে। আমরা অনেক মানুষকে হারিয়েছি, আমরা সবকিছু হারিয়েছি।’ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে রবিবার থেকে। যুদ্ধে অবরুদ্ধ উপত্যকাটির প্রায় প্রতিটি পরিবারের এক বা একাধিক সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন। অনেক পরিবার নির্বংশ হয়েছে। ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ঘরবাড়ি, স্কুল-হাসপাতাল এবং রাস্তা-ঘাটসহ নানা অবকাঠামোর যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা কাটিয়ে উঠতে দীর্ঘ সময় লাগবে।
তথ্যসূত্র:
1. Israeli attacks kill at least 80 in Gaza after ceasefire deal announced
– https://tinyurl.com/5n793vs5