
বাংলাদেশে জনগণের গণআন্দোলনের মুখে রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। তবে এই উদ্বেগ শুধু একটি নিষিদ্ধ ঘোষিত দলের জন্য নয়, বরং এটি আবারও প্রমাণ করছে যে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারত তার প্রভাব খাটাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
গত ১৩ মে সন্ধ্যায় দিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছে, ‘আওয়ামী লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ একটি উদ্বেগজনক ঘটনা।’ এই মন্তব্যের মাধ্যমে কার্যত বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা, সার্বভৌমত্ব এবং জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিল দিল্লি।
রণধীর জয়সওয়াল বলেছে, ‘বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা খর্ব হচ্ছে এবং রাজনৈতিক পরিসর সংকুচিত হয়ে আসছে, এতে একটি গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে ভারত উদ্বিগ্ন।’ কিন্তু অনেকের প্রশ্ন, যে ভারত নিজেই কাশ্মীর ও ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে সংখ্যালঘু মুসলিমদের কণ্ঠরোধ, দমন-পীড়ন ও অধিকার হরণের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে প্রতিনিয়ত কণ্ঠরোধ করে আসছে, সেই ভারত কীভাবে অন্য দেশের গণতন্ত্র নিয়ে কথা বলার নৈতিক অধিকার রাখে?
ভারতের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে যেন দ্রুত একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন হয়, সে দাবি তারা জোরালোভাবে জানিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের এই আহ্বান প্রকৃতপক্ষে একচেটিয়া স্বার্থ সংরক্ষণের রাজনৈতিক কৌশল, যেখানে তারা তাদের দীর্ঘদিনের মিত্র আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় ফেরাতে চায়।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের আগস্টে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকে ভারত একের পর এক বিবৃতি দিয়ে যাচ্ছে, যা সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপেরই শামিল।
তথ্যসূত্র:
1. The ban on the Awami League (in Bangladesh) without due process is a concerning development
– https://tinyurl.com/yr45mhk3