গাজায় ত্রাণ ঢুকতে মোটা অঙ্কের ফি নিচ্ছে জর্ডান, প্রকাশ করায় ‘মিডল ইস্ট আই’ ব্লক

0
71

দখলদার ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েলের চলমান অবরোধ ও আগ্রাসনে গাজায় বসবাসরত মানুষের মধ্যে খাবারের জন্য হাহাকার চলছে। সেখানে বসবাসরত প্রায় ২১ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের ‘গুরুতর ঝুঁকিতে’ রয়েছে। এ সত্ত্বেও অবরুদ্ধ গাজায় আন্তর্জাতিক সাহায্য পৌঁছাতে জর্ডান সরকার বিপুল অর্থ নিয়েছে। এক প্রতিবেদনে মিডল ইস্ট আই এ তথ্য জানিয়েছে।

সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, গাজায় আন্তর্জাতিক সাহায্য সরবরাহ তদারকি করার সময় ‘হাশেমাইট কিংডম’ অতিরিক্ত ফি আদায় করেছে বলে একটি তদন্ত প্রকাশ করা হয়। এর কয়েকদিন পরই মিডল ইস্ট আইয়ের ওয়েবসাইটে প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দেয় জর্ডান কর্তৃপক্ষ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থার সূত্র মিডল ইস্ট আইকে জানিয়েছে, গাজায় প্রবেশকারী প্রতিটি ত্রাণ ট্রাকের জন্য এনজিওগুলোকে ২ হাজার ২০০ ডলার দিতে হচ্ছে। গাজার ওপর দিয়ে বিমান থেকে ত্রাণ ফেলতে জর্ডান কর্তৃপক্ষ ২ লাখ ডলার থেকে ৪ লাখ ডলার পর্যন্ত চার্জ করছে।

সূত্র অনুসারে, প্রতিটি বিমান আধ ট্রাকেরও কম সাহায্য বহন করলেও, সেগুলো এলোমেলোভাবে নিচে ফেলের জন্য প্রায় ২০০,০০০ ডলার এবং নির্দিষ্টভাবে ফেলার জন্য ৪০০,০০০ ডলার চার্জ করা হয়েছিল।

প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হওয়ার একদিন পর জর্ডান হাশেমাইট চ্যারিটি অর্গানাইজেশন (জেএইচসিও) মিডল ইস্ট আই-এর প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে। জেএইচসিও মূলত দেশটির মধ্য দিয়ে সাহায্য পাঠানোর একমাত্র পথ হিসেবে কাজ করে।

মিডল ইস্ট আইয়ের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান সম্পাদক ডেভিড হার্স্ট এই প্রবন্ধটির বিষয়ে বলেছেন, এটি একটি অনবদ্যভাবে সংগৃহীত এবং গবেষণামূলক প্রতিবেদন, যা গাজায় সাহায্য প্রদানকারী যে কোনো দাতার জন্য আগ্রহের বিষয় এবং তাই এটি জনসাধারণের জন্য তীব্র তাৎপর্যপূর্ণ। জর্ডান সরকার মিডল ইস্ট আই-এর ওয়েবসাইট এবং অন্যান্য ১১টি প্রতিষ্ঠানকে ব্লক করে নিজের কোনো উপকার করছে না। কারণ জর্ডানবাসীরা এখনো আমাদের বিষয়বস্তু সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পাবে এবং আমরা তাদের সরকারের কাছে সঠিক প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে থাকব।

৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামলার পর থেকে জর্ডান ফিলিস্তিনিপন্থী মুজাহিদদের বিরুদ্ধে ব্যাপক দমন-পীড়ন শুরু করেছে,। শত শত মানুষকে নির্বিচারে আটক করা হয়েছে।

অথচ জর্ডানের কোম্পানিগুলো গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনের সময় জর্ডানের ভূখণ্ড দিয়ে ইসরায়েলে পণ্য পরিবহন করার সুযোগ করে দিয়েছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতে, জর্ডান কর্তৃপক্ষ কমপক্ষে ১,৫০০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি বিক্ষোভে পুলিশকে লাঠিচার্জ এবং কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করতে দেখা গেছে। সেই সঙ্গে জর্ডানের বিতর্কিত সাইবার অপরাধ আইনের অধীনে সোশ্যাল মিডিয়ায় ফিলিস্তিনপন্থী বক্তব্য পোস্ট করার জন্য বহু লোকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।

গত বছর, জর্ডানের কর্তৃপক্ষ সাংবাদিক হিবা আবু তাহাকে সাইবার অপরাধ আইন লঙ্ঘনের অভিযোগের নামে এক বছরের কারাদণ্ড দেয়।


তথ্যসূত্র:
1.Jordan confirms high costs of Gaza aid deliveries but denies profiting
– https://tinyurl.com/4rkmbyxv

2. Jordan blocks access to Middle East Eye after investigation on Gaza aid drops
– https://tinyurl.com/5cnhhs49

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৮ বছরের শিশুকে বলাৎকার করলো নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগ কর্মী
পরবর্তী নিবন্ধছাত্রদলের মিছিলে সাংবাদিক কে মারধর ও ছুরিকাঘাত