রাজশাহীর সাবেক এক বিএনপি নেতা নওগাঁর এক ঠিকাদারকে চাঁদা দাবী করে মোবাইলে হুমকি দিয়েছে। সড়ক বিভাগের ঠিকাদারি কাজের বিষয়ে ঈদের আগেই তার সঙ্গে বসে সমাধান করার জন্য চাপ দিয়েছে ভুক্তভোগী ওই ঠিকাদারকে। ফাঁস হওয়া একটি অডিও ক্লিপে এই তথ্য পাওয়া বেরিয়ে এসেছে।
অভিযুক্ত বিএনপির সাবেক ওই নেতার নাম মাহমুদুল হক রুবেল। সে রাজশাহী নগরীর রাজপাড়া থানা বিএনপির থেকে পদত্যাগ করা যুগ্ম আহ্বায়ক। আর ভুক্তভোগী ওই ঠিকাদারের নাম শাহজাহান আলী। সে মান্দার একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলে ফোনালাপ সূত্রে জানা গেছে।
দুজনের মধ্যে ফোনালাপে শোনা যায়, রুবেল ঐ ঠিকাদারকে বলছেন— ‘রোডসে আর টেন্ডার সাবমিট করবেন না।’ শাহজাহান প্রশ্ন করলেন, ‘কেন?’ জবাবে রুবেল বলেন, ‘কারণ, আমরা নিজেরাই খাইতে পাচ্ছি না। আমার কথা হলো, আপনি ভাই টেন্ডার-মেন্ডার দিয়েন না, আমার অনুরোধ থাকল। আমরা ১৭ বছর খাইতে পারিনি। এখন আমরা খাব।’
জানা গেছে, কলরেকর্ডটি সোমবার (১৯ মে) দুপুরের। পৌনে ১০ মিনিটের ওই কথোপকথনে রুবেলের সঙ্গে হারুন নামে একজন কথা বলতে শোনা যায়।
গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি সড়ক ও জনপদ বিভাগের (সওজ) রাজশাহীর বৃক্ষপালনবিদের কার্যালয় থেকে ৯টি লটে গাছ বিক্রির জন্য ঠিকাদারদের কাছ থেকে দরপত্র আহ্বান করা হয়। এতে অংশ নেয় শাহজাহান আলী। শাহজাহান আলী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে রাখা বাক্সে দরপত্র জমা দিয়ে এতে সে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টাকায় দুটি লটের কাজ পায়।
এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ঠিকাদার শাহজাহান আলীকে ফোন করে রুবেল। ফোনে রুবেল ঠিকাদার শাহজাহানকে বলে, ‘আপনি এই কাজগুলা কইরেন না, জাস্ট সমস্যা হবে।’
শাহজাহান বলে, ‘আপনারা যদি নিষেধ করেন, তাহলে বিষয়টা কেমন হয় না?’ রুবেল বলেন, ‘এখন এমন অবস্থা হয়েছে, মান্দার লোক শুনলেই চার-পাঁচটা থাপ্পড় মারবে।’ শাহজাহান বলেন, ‘মান্দার লোক তো আরও টেন্ডার করছে।’
জবাবে রুবেল বলে, ‘একটার পর একটা অপমান হবেই, দেখবেন। আপনাকে আমি বললাম ভাই ব্যক্তিগতভাবে। মাথায় রাইখেন।’
শাহজাহান জানতে চায়, ‘কী করলে অপমান হবে না সেইটা বলেন।’ রুবেলের জবাব, ‘টেন্ডার না দিলেই অপমান হবেন না।’ ‘টেন্ডার তো হয়েই গেছে’, শাহজাহান এ কথা জানালে এরপর অশ্লীল ভাষায় কথা বলে বিএনপি নেতা রুবেল।
শাহজাহান বলে, ‘আপনি টেন্ডার করবেন, করে কাজ নিবেন আপনি।’ শাহজাহান বলেন, ‘নিজের এলাকাতে এখন কুইত্তাও ভাগ দেয় না, জানেন? কুইত্তাও বুলছে যে, তোর এলাকা তুই খা, আমার এলাকা আমি খাই।’
এ সময় শাহজাহান রুবেলের দলীয় পরিচয় জানতে চায়। তখন রুবেল বলেন, ‘আমি বিএনপির সভাপতি, রাজপাড়া থানার।’ যদিও রাজপাড়া থানা বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান নামে এক ব্যক্তি।
তথ্যসূত্র:
১. ‘১৭ বছর খাইতে পারিনি, এখন খাব’ ঠিকাদারকে বিএনপি নেতা
-https://tinyurl.com/mpaek79h
