বুরকিনা ফাসোর দিয়াপাগা ও সোলি শহর বিজয়: মুজাহিদদের অভিযানে ২২০ শত্রু সেনা নিহত

0
135

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ বুরকিনা ফাসোতে জান্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট ‘জেএনআইএম’ মুজাহিদদের তীব্র আক্রমণ অব্যাহত রয়েছে। সম্প্রতি ২টি শহরে ‘জেএনআইএম’ এর পরিচালিত বিজয় অভিযানে অন্তত ২২০ জান্তা সৈন্য নিহত হয়েছে।

আয-যাল্লাকা মিডিয়া কর্তৃক গত ১৮ মে রবিবার প্রকাশিত এক রিপোর্ট থেকে জানা যায়, নাইজার এবং বেনিনের সীমান্তের কাছে সম্প্রতি ‘জেএনআইএম’ মুজাহিদিনরা বৃহত পরিসরে একটি সামরিক অপারেশন পরিচালনা করছেন। অভিযানটি গত ১৩ মে মঙ্গলবার বুরকিনা ফাসোর পূর্বাঞ্চলীয় ফাদাঙ্গুরমা প্রদেশের দিয়াপাগা শহরে জান্তা বাহিনীর একাধিক সামরিক অবস্থান লক্ষ্য করে একযোগে চালানো হয়। অভিযানে অংশ নেন ‘জেএনআইএম’ এর শতাধিক মুজাহিদ, যারা কয়েকটি সাঁজোয়া যান এবং কয়েক ডজন মোটরসাইকেলে চড়ে ভারী অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে শহরের প্রধান সামরিক ঘাঁটিতে প্রথমে হামলা চালান। এসময় জান্তা বাহিনী ভারী কোনো প্রতিরোধ ছাড়াই ঘাঁটি থেকে পিছু হটলে মুজাহিদিনরা এর নিয়ন্ত্রণ নেন।

এদিকে শত্রুর এই পলায়নের পর মুজাহিদিনরা শহরের প্রধান কারাগারের দিকে অগ্রসর হন এবং এটিরও নিয়ন্ত্রণ নেন। মুজাহিদিনরা কারাগারের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর এখানে বন্দী থাকা শত শত নিরপরাধ কারাবন্দীকে মুক্ত করেন, যারা মহান রবের শুকরিয়া আদায় ও তাকবির ধ্বনিত কারাগার প্রাঙ্গন মুখরিত করে মুক্ত আকাশের নিচে বেরিয়ে পড়েন।

সামরিক ঘাঁটি ও কারাগারের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর ‘জেএনআইএম’ মুজাহিদিনরা দিয়াপাগা শহরে শত্রু বাহিনীর অন্যান্য অবস্থানগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিতে শুরু করেন। এসময় বুরকিনান জান্তা বাহিনীর সাথে কয়েকটি স্থানে তীব্র লড়াইয়ে অবতীর্ণ হন মুজাহিদিনরা। অবশেষে দীর্ঘ ১২ ঘন্টার যুদ্ধ শেষে মুজাহিদিনরা দিয়াপাগা শহর সম্পূর্ণভাবে বিজয় করতে সক্ষম হন।

মঙ্গলবার ২০ মে, আয-যাল্লাকা মিডিয়া কর্তৃক প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, দীর্ঘ এক সপ্তাহ পরেও শহরের নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছেন ‘জেএনআইএম’ মুজাহিদিনরা। এসময় মুজাহিদিনরা একটি স্কোয়ারে দাড়িয়ে ঘোষণা করেন যে, তারাঁ দিয়াপাগা শহর ছেড়ে যাবেন না বরং এখানেই অবস্থান করবেন। মুজাহিদিনরা যেই স্থানে দাড়িয়ে এই ঘোষণা করছিলেন, তার থেকে কিছুটা দূরেই দেখা যাচ্ছিল দিয়াপাগা শহরের প্রধান বিমানবন্দর।

এদিকে ‘জেএনআইএম’ এই অভিযানের শত্রু বাহিনীতে হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে প্রাথমিক এক পরিসংখ্যানে নিশ্চিত করেছে যে, দিয়াপাগা যুদ্ধে মুজাহিদদের হামলায় জান্তা বাহিনীর ১৬০ এরও বেশি সৈন্য নিহত এবং আরও অসংখ্য সৈন্য আহত হয়েছে। এসময় মুজাহিদিনরা শহরের প্রধান সামরিক ঘাঁটি থেকে গনিমত হিসাবে অর্জন করেছেন ১টি সামরিক যান, 14.5 ক্যালিবারের ১টি ভারী অস্ত্র, ১টি দুশকা, ৩টি মর্টার, ৪টি আরপিজি, ১৪টি পিকে, ৪৭টি ক্লাশিনকোভ, ৬টি পিস্তল, ১৫টি মোটরসাইকেল, ৪০৫টি ম্যাগাজিন, দুটি ড্রোন এবং অন্যান্য বহু সামরিক সরঞ্জাম।

বীরত্বপূর্ণ এই অভিযানের ২দিন আগে অর্থাৎ ১১ মে, ‘জেএনআইএম’ মুজাহিদিনরা বুরকিনা ফাসোর লোরোম
প্রদেশের সোলি শহরে একটি সমন্বিত অপারেশন পরিচালনা করেন। কয়েক ঘন্টার তীব্র লড়াই শেষে মুজাহিদিনরা সোলি শহরেরও নিয়ন্ত্রণ নেন। এসময় মুজাহিদদের ভারী আক্রমণে বুরকিনান জান্তা বাহিনীর অন্তত ৬০ সৈন্য নিহত এবং আরও অসংখ্য সৈন্য আহত হয়।

এই বিজয় অভিযান শেষে মুজাহিদিনরা শত্রু বাহিনীর একটি সামরিক ঘাঁটি থেকে গনিমত হিসাবে অর্জন করেন ১টি সামরিক যান, ১টি 81mm মর্টার, ২টি দুশকা মেশিনগান, ৬টি আরপিজি, ১০টি পিকে, ৬২টি ক্লাশিনকোভ, ৩টি পিস্তল, ৩০০টি ম্যাগাজিন, ১২টি মোটরসাইকেল এবং অন্যান্য অসংখ্য সামরিক সরঞ্জাম।

এটা লক্ষণীয় যে, সম্প্রতি বুরকিনা ফাসোতে সামরিক অপারেশন জোরদার করেছেন জামা’আত নুসরাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন (জেএনআইএম) মুজাহিদিনরা। দলটির মুজাহিদিনরা বর্তমানে শুধু অ্যামবুশ এবং ইম্প্রোভাইজড বিস্ফোরক ডিভাইস বিস্ফোরণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই বরং আঞ্চলিক বিজয় এবং সরাসরি শহর নিয়ন্ত্রণের কৌশল নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। সেই ধারাবাহিকতায় গত সপ্তাহে দলটি ৩টি গুরত্বপূর্ণ শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে, এসময় ‘জেএনআইএম’ মুজাহিদিনের হামলায় জান্তা বাহিনীর অন্তত ৪০০ সৈন্য নিহত হয়েছে।


তথ্যসূত্র:
– https://tinyurl.com/4cb92ee9

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধটানা অবরোধে গাজায় পুষ্টিহীনতা ও ওষুধের তীব্র সংকট, শহীদ তিন শতাধিক
পরবর্তী নিবন্ধ‘নারী সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনা নারী হিসেবে আমাদের লজ্জিত করেছে’; চবির নারী শিক্ষক ও শিক্ষার্থী