
ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের পতনে বিএনপি রাজনীতির মাঠে সরব হয়। দেশের বিভিন্ন সংস্কার ইস্যুকে পাশ কাটিয়ে এখন তাদের প্রধান লক্ষ্য চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তার করা।
সারা দেশের কাছে রাজশাহী বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। এখানে দলটির জেলা ও মহানগর বিএনপিতে বিভিন্ন গ্রুপের অভ্যন্তরীণ রেষারেষিতে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। সাংগঠনিক দ্বন্দ্ব ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে বেশকিছু সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।
শুধু মার্চ মাসেই পাল্টাপাল্টি হামলা-ভাঙচুর ও সংঘর্ষে তিনজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। এসব ঘটনায় প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। কমিটির বাইরে থাকা নেতাকর্মীদের অভিযোগ, দলীয় পদে থাকা বিএনপির কতিপয় নেতা পদ-পদবি ভাঙিয়ে বিভিন্ন ধরনের অনিয়মে জড়িয়েছে।
তারা আওয়ামী লীগের দোসরদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে। করছে মামলা বাণিজ্য। এতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। ক্ষুব্ধ হচ্ছে দলের নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মীরা, যারা গত ১৬ বছর জেলজুলুমসহ স্বৈরাচারী সরকারের অবর্ণনীয় নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়েছে।
জানা গেছে, ১৪ মে সন্ধ্যার পর একটি সরকারি জলাশয়ের ইজারাকে কেন্দ্র করে রাজশাহীর পুঠিয়ায় বিএনপির সক্রিয় দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় বিএনপির একটি কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। আগুন দেওয়া হয় চারটি মোটরসাইকেলে। সংঘর্ষে বিএনপির দুই গ্রুপের ১২ নেতাকর্মী আহত হয়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
১০ মার্চ নগরীর দড়িখড়বনা রেলগেট এলাকায় বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক বোমাবাজি ও সংঘর্ষের সময় গোলাম হোসেন রকি (৪৪) নামের একজন অটোচালক নিহত হয়। এ ঘটনায় শাহমখদুম থানা বিএনপির আহ্বায়ক সুমন সরদারসহ কয়েকজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করা হয়।
নগরীর রাজপাড়া থানা বিএনপির কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে ২৩ জানুয়ারি যুগ্ম আহ্বায়ক রুহুল আমিন বাবলুর বাড়িতে হামলা, গুলিবর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। প্রতিপক্ষের হামলায় বিএনপি নেতার পরিবারের নারী ও শিশুরাও সহিংস নির্যাতনের শিকার হয়। এ ঘটনায় রাজপাড়া থানা বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মুরাদ পারভেজ পিন্টুসহ ৩১ জন বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
তথ্যসূত্র:
১. রাজশাহী বিএনপিতে বাড়ছে অভ্যন্তরীণ সংঘাত, এক মাসে নিহত ৩
– https://tinyurl.com/mr79bwc3