চাঁদাবাজ নেতাকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নিল হান্নান মাস‌উদ

0
28

রাজধানীর ধানমন্ডিতে পুলিশের সঙ্গে ‘অসৌজন্যমূলক’ আচরণের অভিযোগে আটক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মোহাম্মদপুর থানার আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম রাব্বিসহ তিনজনকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সমন্বয়ক হান্নান মাসউদ। মঙ্গলবার (২০ মে) বিকেলে হান্নান মাস‌উদের জিম্মায় থানা থেকে ছাড়া পায় ওই তিন নেতাকর্মী। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছে ধানমন্ডি মডেল থানার ওসি ক্যশৈনু। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।

সোমবার (১৯ মে) রাতে ধানমন্ডিতে মব সৃষ্টি করে একজন প্রকাশককে স্বৈরাচারের দোসর আখ্যা দিয়ে তার বাসার সামনে পুলিশের সঙ্গে ঝামেলা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক। পরে সেখান থেকে পুলিশ তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে। ধানমন্ডি থানা হেফাজতে নেওয়ার পর সাইফুল ইসলাম রাব্বি নামে এক সমন্বয়ককে সব ধরনের সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

ডিএমপির বিজ্ঞপ্তি: মঙ্গলবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, ‘সোমবার রাত সাড়ে ১২টায় জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে ধানমন্ডি থানায় সংবাদ আসে, ধানমন্ডি ৪ নম্বর সড়কের একটি বাড়িতে কতিপয় ব্যক্তি বাড়ির গেট ভেঙে জোরপূর্বক প্রবেশের চেষ্টা করছে। সংবাদ পাওয়ার পর ধানমন্ডি থানার ওসি ফোর্স নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যান। গিয়ে দেখে ১৫-২০ লোক সেখানে অবস্থান করছেন। তারা বাড়িতে জোরপূর্বক ঢোকার চেষ্টা করছেন। এ সময় পুলিশ তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলে তারা উত্তেজিত ও মারমুখী আচরণ করেন। তারা এক ব্যক্তিকে (প্রকাশক) গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের ওপর চাপ প্রয়োগ করে। একপর্যায়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে থানায় নিয়ে আসে।’

তালেবুর রহমান আরও বলেন, ‘পরবর্তী সময়ে এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ভবিষ্যতে এ ধরনের কোনো বেআইনি কর্মকাণ্ডে জড়িত না হওয়ার শর্তে তাদের বিকেলে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।’

কে এই তিন সমন্বয়ক: ধানমন্ডিতে মব সৃষ্টি করে এক প্রকাশকের বাড়িতে জোর করে ঢোকার চেষ্টা এবং তাকে গ্রেপ্তারে পুলিশকে চাপ দেওয়ার মূল হোতা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মোহাম্মদপুর থানার আহ্বায়ক (পরে বহিষ্কৃত) সাইফুল ইসলাম রাব্বি। আরেকজন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা মহানগর শাখার সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ফারহান সরকার দিনার। অন্যজন মোহাম্মদপুর ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে সহায়ক হিসেবে কাজ করা ‘ট্রাফিক সহকারী’ মোহাম্মদ উল্লাহ জিসান। এই তিনজনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মব সৃষ্টি ও চাঁদা দাবিসহ নানা অভিযোগ আছে।

রাব্বির বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুরে ইসমাইল নামে এক ব্যবসায়ীকে দোকান দখলমুক্ত করে দেওয়ার কথা বলে অগ্রিম টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। পরে দোকান দখলমুক্ত করে না দিলে ভুক্তভোগী টাকা ফেরত চাওয়ায় তাকে হুমকিও দেয় সে।

ভুক্তভোগী ইসমাইল হোসাইন গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, ‘আমার একটা দোকান আওয়ামী লীগের এক নেতা দখল করে রেখেছে। সেই দোকান দখলমুক্ত করতে প্রথমে এক লাখ টাকা চায় রাব্বি। আমি ৫০ হাজার দিতে রাজি হই। তারা ১০ হাজার টাকা অগ্রিম চেয়েছিল, আমি ৫ হাজার দিয়েছিলাম। পরে দোকানও উদ্ধার করতে পারে না, আমার টাকাও দেয় না। এটা সাংবাদিকদের জানালে অগ্রিম নেওয়া ৫ হাজার টাকা দিয়ে যায়। এটার চুক্তি হয়েছিল রাব্বির সঙ্গে। আর টাকা লেনদেন হয়েছিল সিয়াম নামের একজনের সঙ্গে।’


তথ্যসূত্র:
১. চাঁদাবাজ নেতাকে থানা থেকে ছাড়ালেন হান্নান মাসউদ
– https://tinyurl.com/58m35umk

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিএনপি নেতার গুদাম থেকে ১০৪ বস্তা সরকারি চাল উদ্ধার
পরবর্তী নিবন্ধরাজশাহীতে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে এক মাসে নিহত ০৩ জন