
জুলাই আন্দোলনে আহত রাজধানীর জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া ১১ জন দুই চোখের দৃষ্টি চিরতরে হারিয়েছেন। আর ৪৯৩ জনের এক চোখের আলো চিরদিনের জন্য নিভে গেছে। ২৮ জন দুই চোখে এবং ৪৭ জন এক চোখে দৃষ্টিস্বল্পতায় ভুগছেন।
সোমবার (২৫ আগস্ট) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ দেওয়া জবানবন্দিতে এসব কথা বলেন ইনস্টিটিউটের রেটিনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জাকিয়া সুলতানা নীলা। জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে সারা দেশে চালানো হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ সাক্ষ্য গ্রহণ করে।
ট্রাইব্যুনালে দেওয়া জবানবন্দিতে ডা. নীলা বলেন, ‘৪, ৫ ও ৬ আগস্ট আমরা অসংখ্য আহত রোগী গ্রহণ করি, যাদের চোখে অপারেশন করতে হয় ।’ তিনি বলেন, গত বছর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ১৭ জুলাই থেকে আমাদের হাসপাতালে রোগী আসা শুরু হয়। ওইদিন আমরা বুলেটবিদ্ধ পাঁচজন রোগী পেয়েছিলাম। ১৮ জুলাই ছিল একটি রক্তস্নাত দিন। ওইদিন দুপুরের দিকে আমার কাছে খবর আসে হাসপাতালে অনেক আহত রোগী এসেছে। ওইদিন প্রায় ১০০ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়। এর বাইরে আনুমানিক আরো ১০০ রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে আমি জরুরি বিভাগে এসে একটি ভয়াবহ চিত্র দেখতে পাই।
ডা. জাকিয়া সুলতানা নীলা বলেন, যারা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছিল, তাদের বয়স ১৪ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। তাদের কেউ কেউ এক হাত দিয়ে এক চোখ, দুই হাত দিয়ে দুই চোখ ধরে ছিল। ওইদিন রাত ৯টায় আমরা ১০টা টেবিলে অপারেশন করতে থাকি। ১৯ জুলাই প্রায় একই চিত্র দেখতে পাই। ওইদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১০ পর্যন্ত ১০টা টেবিলে অস্ত্রোপচার চলতে থাকে। আমাদের হাসপাতালে যারা চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন, তাদের অধিকাংশ বুলেট দ্বারা আহত হন। অধিকাংশ রোগীর কর্ণিয়া ছিদ্র হয়ে গেছে, তাদের চোখের ভেতরের সাদা অংশ ছিদ্র হয়ে যায়, অনেকের চোখ ফেটে গিয়েছিল। চোখের রেটিনায় আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ায় রক্তক্ষরণ হচ্ছিল।
তথ্যসূত্র:
১. গুলিতে ৪৯৩ জনের এক চোখ ও ১১ জনের দুচোখ চিরতরে অন্ধ
– https://tinyurl.com/25vukca5


