মাসিকের নামে অশ্লীলতা প্রচারের ফাঁদ: মুসলিম সমাজের জন্য সতর্কবার্তা

2
266

আল ফিরদাউস এর সম্পাদক মুহতারাম ইবরাহীম হাসান হাফিযাহুল্লাহ’র কলাম –

আজ আমাদের এই বাংলাদেশে এক নীরব ভয়ংকর সাংস্কৃতিক আগ্রাসন চলছে। তথাকথিত পশ্চিমা কালচারের একদল দালাল আমাদের সমাজে ইসলামী নৈতিকতার শেকড় কেটে ফেলার এক সুগভীর ষড়যন্ত্রে সক্রিয় উঠেছে। এর অনেকগুলো আগ্রাসনের মধ্যে সর্বশেষ প্রকাশ ঘটেছে মাসিক বা ঋতুচক্রের মতো ব্যক্তিগত ও লজ্জাশীলতার বিষয়গুলোকে কেন্দ্র করে অশ্লীলতা প্রচারের মাধ্যমে।

ইসলামে মাসিক কিংবা স্বপ্নদোষকে পবিত্রতার সঙ্গে সম্পর্কিত করা হয়েছে, কারণ এর সঙ্গে ফরজ ইবাদত যেমন সালাত ও সিয়াম ও আরো অন্যান্য ইবাদতের নিয়ম জড়িত। মুসলিম পরিবার ও মাদ্রাসাগুলোতে এসব বিষয় শালীনতা ও নৈতিকতার সীমানার ভেতরে থেকে শেখানো হয়, যাতে তরুণ প্রজন্ম সঠিক সীমারেখা বজায় রেখে জীবন পরিচালনা করতে পারে।

কিন্তু পশ্চিমা দৃষ্টিভঙ্গি সম্পূর্ণ উল্টো। ১৯৭০ সালের নারীবাদী আন্দোলনের পর থেকেই পশ্চিমে ব্যক্তিগত বিষয়গুলো জনসমক্ষে টেনে আনা, অশ্লীলতা প্রচার এবং নৈতিকতার সীমারেখা ভেঙে দেওয়ার এক ধারাবাহিক প্রক্রিয়া শুরু হয়। আজকে এদেশের পাঠ্যপুস্তকে মুসলমানদের সন্তানদের মাসিক নিয়ে নাটকীয় প্রচারণা, অল্প বয়সী শিশুদের কাছে এসব নিয়ে স্বাভাবিকীকরণ, এমনকি হস্তমৈথুনের মতো বিষয় অন্তর্ভুক্তির চক্রান্ত—এসব কোনো নিরীহ ও স্বাভাবিক উদ্যোগ নয়, বরং ইসলামী মূল্যবোধের বিরুদ্ধে এক দীর্ঘমেয়াদি ষড়যন্ত্র।

সবচেয়ে ভয়ংকর দিক হলো—এখন কিছু গ্রুপ তৃতীয় শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকেই এসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত করতে চাইছে, যেন অল্প বয়স থেকেই শিশুদের মনে শালীনতার বোধ ভেঙে দেওয়া যায়। ফলে হয়তো আগামী দিনে আমরা এমন এক প্রজন্ম দেখব, যারা খাবার টেবিলে বসে বিন্দুমাত্র সংকোচ ছাড়াই মাসিক নিয়ে আলাপ করবে—যা সমাজের দৃষ্টিতে চরম অনৈতিকতা।

এই পশ্চিমা নষ্ট সাংস্কৃতিক আগ্রাসন থেকে আমাদের সন্তানদের বাঁচাবার জন্য কয়েকটি বিষয় তুলে ধরছি:

•প্রাথমিক থেকে শুরু করে উচ্চতর সকল পাঠ্যপুস্তক থেকে অশ্লীল টপিকস বাদ দিতে হবে।

• সংগীতের শিক্ষক নিয়োগ ও এই নৈতিকতা বিরোধী অহেতুক বিষয় বন্ধ করে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।

•ইসলামী শিক্ষার পুনর্জাগরণ স্বরূপ পরিবার, মসজিদ ও মাদ্রাসা ও বিদ্যালয়ে শিশুদের পবিত্রতা, নৈতিকতা ও লজ্জাশীলতার শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।

• ইসলামী মূল্যবোধের গুরুত্ব তুলে ধরে প্রচারণা চালাতে হবে।

•শিশুদের মানসিক বিকৃতি ঘটাতে পারে এমন সব বিষয় অন্তর্ভুক্তির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

এটি কেবল একটি সামাজিক ইস্যু নয়, বরং আমাদের ঈমান, নৈতিকতা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচানোর লড়াই। যদি আমরা আজই সচেতন না হই, তবে আগামী দিনে আমাদের সন্তানরা তথাকথিত উদারতাবাদের শিকার হবে, ইসলামী আদর্শ থেকে সরে যাবে। এলজিটিবির মতো অভিশপ্ত ইস্যু গুলো আমাদের সমাজকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিবে।

তাই আমরা এদেশের সমস্ত সচেতন নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানাবো, আপনারা সবাই সজাগ দৃষ্টি রাখুন। ইসলামী চেতনা ও ঈমান নষ্ট করার জন্য হিন্দুত্ববাদী ও পশ্চিমা শকুনের নজর পড়েছে এই ভূখণ্ডের উপর।

2 মন্তব্যসমূহ

  1. আল ফিরদাউস নামে ইউটিউবে একটা নতুন চ্যানেল দেখা যাচ্ছে। যদি এটা আল ফিরদাউস প্লাটফ্রমের অফিসিয়াল চ্যানেল হয়ে থাকে তাহলে আমি মনে করি এই বিষয়গুলো ভিডিও আকারে প্রচার করলে জনসাধারনের জন্য আরও বেশি উপকার হতো। বিশেষ করে বিশ্লেষন মহলে ইবরাহিম হাসান হাফিঃ এর একটা উল্লেযোগ্য প্রভাবও তৈরী হবে ইনশাআল্লাহ।

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধইয়েমেনে দুর্বৃত্ত ইসরায়েলের ধারাবাহিক হামলা, নিহত বহু বেসামরিক
পরবর্তী নিবন্ধপশ্চিম তীরে এক সপ্তাহে ১২০ ফিলিস্তিনিকে আটক করল দুর্বৃত্ত ইসরায়েল