
গাজায় চলমান ভয়াবহ মানবিক সংকট ও যুদ্ধবিরতির আন্তর্জাতিক আহ্বানের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন দখলদার ইসরায়েলের কাছে ৬৪০ কোটি ডলারের (৬.৪ বিলিয়ন ডলার) নতুন অস্ত্র বিক্রির ঘোষণা দিয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই উদ্যোগ সরাসরি গাজার রক্তক্ষয়ী হামলাকে আরও তীব্র করবে এবং দখলদার ইসরায়েলের গণহত্যামূলক অভিযানে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
রয়টার্সের তথ্যমতে, প্রস্তাবিত অস্ত্রচুক্তিতে রয়েছে ৩০টি এএইচ-৬৪ অ্যাপাচি অ্যাটাক হেলিকপ্টার, ৩ হাজার ২৫০টি ইনফ্যান্ট্রি অ্যাসল্ট ভেহিকল বা সাঁজোয়া যান, এবং বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ ও যন্ত্রাংশ। এর মধ্যে হেলিকপ্টারের দাম ধরা হয়েছে প্রায় ৩৮০ কোটি ডলার, ট্যাংক ও সাঁজোয়া যান ১৯০ কোটি ডলার এবং অবশিষ্ট ৭০ কোটি ডলার নির্ধারিত হয়েছে গোলাবারুদ ও যন্ত্রাংশের জন্য। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছে, এগুলো ইসরায়েলের চলমান গণহত্যামূলক সামরিক অভিযানে সরাসরি ব্যবহৃত হবে।
এই ঘোষণার ঠিক আগে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় অবিলম্বে ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং ত্রাণ সরবরাহ নিশ্চিত করার প্রস্তাব আনা হয়েছিল। পরিষদের ১৪ সদস্য দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিলেও, একমাত্র যুক্তরাষ্ট্র সেটিকে ভেটো দেয়। আন্তর্জাতিক মহল বলছে, যুদ্ধবিরতি আটকে দিয়ে ওয়াশিংটন দখলদার ইসরায়েলের পাশে অটল অবস্থান নিয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের এই অস্ত্রচুক্তি ইসরায়েলকে গণবিধ্বংসী হামলা চালাতে আরও উৎসাহিত করবে। বিশেষ করে অ্যাপাচি হেলিকপ্টার ও সাঁজোয়া যানগুলো জনবসতিপূর্ণ এলাকায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর জন্য কুখ্যাত। সমালোচকরা প্রশ্ন তুলেছেন—যখন যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করা সবচেয়ে জরুরি, তখন যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে এ ধরনের বিপুল অস্ত্র সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিতে পারে?
আন্তর্জাতিক মহলের তীব্র সমালোচনার মধ্যেই ওয়াশিংটনের এই সিদ্ধান্ত আবারও স্পষ্ট করে দিয়েছে—দখলদার ইসরায়েলের গণহত্যায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ ভুমিকা রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই অস্ত্রচুক্তি শুধু মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিতিশীলতাই বাড়াবে না, বরং গাজার সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ ও গণহত্যাকে দীর্ঘায়িত করবে।
তথ্যসূত্র:
1. Trump administration plans $6.4 billion in weapons sales to Israel, sources say
– https://tinyurl.com/bdd24ys4
2. Trump administration proposes selling nearly $6 billion in weapons to Israel
– https://tinyurl.com/5n6fdy5h


