আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশের ওলামায়ে কেরামের বৈঠক অনুষ্ঠিত

1
330

ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে সফররত বাংলাদেশি শীর্ষ আলেমদের একটি প্রতিনিধি দল দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাওলানা আমির খান মুত্তাকীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

আজ শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) প্রসপার আফগানিস্তান তাদের সোশ্যাল মিডিয়ায় জানায়, কাবুলে আফগান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সদর দফতরে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশি উলামাদের প্রতিনিধি দলে রয়েছেন মধুপুরের পীর মাওলানা আব্দুল হামিদ, মাওলানা আব্দুল হক, মাওলানা আব্দুল আউয়াল, মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা মনির হোসাইন কাসেমী, মাওলানা মাহবুবুল্লাহ কাসেমী, মুফতি মুহাম্মদ হিদায়াতুল্লাহ।

সফর আয়োজন ও ব্যবস্থাপনা করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংস্থা প্রসপার আফগানিস্তান। যুদ্ধোত্তর আফগানিস্তানে সংহতি ও উন্নয়নকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করা এই সংস্থা দীর্ঘদিন ধরে আলেম, চিকিৎসক ও অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের প্রতিনিধি দল আফগানিস্তানে নিয়ে যাচ্ছে। এবার বাংলাদেশি উলামাদের সফরও তাদের ব্যবস্থাপনাতেই হয়েছে।

আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাওলানা আমির খান মুত্তাকীর সাথে বৈঠকে আলোচনায় মূলত তিনটি বিষয় প্রাধান্য পায়, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের মধ্যে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন, ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ এবং আলেমদের পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদার।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাওলানা আমির খান মুত্তাকী বাংলাদেশি প্রতিনিধি দলকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানান এবং আফগান-বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বাণিজ্য প্রসঙ্গে তিনি আফগানিস্তানের বিপুল অর্থনৈতিক সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে বলেন, এখানে তুলা, কার্পেট, শুকনো ফল এবং মার্বেলসহ বহুবিধ খাতে ব্যবসার সুযোগ রয়েছে। তিনি জানান, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের একটি প্রতিনিধি দল কাবুল সফরে আসবেন।

তিনি আরও বলেন, ‘আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন হলে স্বাভাবিকভাবেই বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে। বাংলাদেশ থেকে যে আগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছে, তা আমাদের উৎসাহিত করেছে। আমরা বিশ্বাস করি, পারস্পরিকভাবে লাভজনক অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে।’

কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রসঙ্গে মন্ত্রী উল্লেখ করেন, আফগানিস্তানের প্রায় সব আঞ্চলিক দেশের সঙ্গে ইতোমধ্যেই আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক রয়েছে, তবে বাংলাদেশ সেই তালিকার বাইরে। এ বিষয়ে তিনি সফররত উলামাদের দেশে ফিরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি তুলে ধরার অনুরোধ জানান। প্রতিনিধি দল এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানায় এবং পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেয়।

বাংলাদেশি প্রতিনিধিরা আফগান সরকারের আতিথেয়তার প্রশংসা করেন এবং আশা প্রকাশ করেন, এই সফরের মধ্য দিয়েই দুই দেশের মধ্যে আরও নিয়মিত ও ফলপ্রসূ আদান-প্রদানের সূচনা হবে।

মধুপুরের পীর মাওলানা আব্দুল হামিদ বলেন, ‘এই সফর একটি নতুন দুয়ার খুলে দিল। আমি দীর্ঘদিন ধরে দেখতে চেয়েছি আফগানিস্তান কীভাবে পুনর্গঠন ও উন্নয়ন করছে, আলহামদুলিল্লাহ, এবার আমি তা সরাসরি দেখার সুযোগ পেলাম। অনেকদিনের ইচ্ছা ছিল পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকীর সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাতের, আজ তা পূর্ণ হলো। বাংলাদেশের উলামা ও আমাদের আন্দোলনের পক্ষ থেকে আমি তাঁকে আসন্ন খতমে নুবুওয়াত সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানিয়েছি। যদি তাঁর সময় না মেলে, তবে প্রতিনিধি পাঠানোর অনুরোধও করেছি। আমরা বিশ্বাস করি, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের মানুষ আরও ঘনিষ্ঠ হলে এর সুফল দুই দেশের সরকারই নয়, বরং উলামা, সমাজ ও প্রতিষ্ঠানগুলোও ভোগ করবে।’

বাংলাদেশি প্রতিনিধি দলের কর্মসূচির অংশ হিসেবে তারা কাবুলে উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন, পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও সিভিল সোসাইটি নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।


https://files.fm/u/64wdfy58rv

১টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধগাজায় যুদ্ধবিরতি আটকে দিয়ে গণহত্যা চালাতে ইসরায়েলকে ৬৪০ কোটি ডলারের অস্ত্র দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
পরবর্তী নিবন্ধবিয়ানীবাজারের ঘটনা: হিন্দুত্ববাদী ভয়াল থাবায় মুসলিম বোনেরা