
চট্রগ্রাম নগরের বায়েজিদ বোস্তামী, পাঁচলাইশ, চান্দগাঁও, খুলশী থানা এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী ৩৫টি মামলার আসামি, বহিষ্কৃত স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মো. সবুজ ওরফে বার্মা সবুজ এবার জামিন পেয়ে জেল থেকে মুক্তির আগেই অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে।
জানা যায়, তার জামিনের দিন গত ৪ ডিসেম্বরই নগরের আগ্রাবাদ এলাকায় দুই কাস্টমস কর্মকর্তার উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা তার ইন্ধনেই হয়েছে। এতে অংশ নেওয়া সন্ত্রাসীরা তারই সহযোগী। হামলার সময় রাজস্ব কর্মকর্তাদের উপর গুলি করারও নির্দেশ দেয় হামলকারীদের একজন। পুলিশ এ ঘটনায় গতকাল রাতে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে মূল হোতা পাঁচলাইশ থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের বহিস্কৃত নেতা শীর্ষ সন্ত্রাসী বার্মা সবুজসহ অপর এক হামলকারী।
এর আগে গত ৪ ডিসেম্বর সকাল দশটায় কাস্টমস কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান খান ও বদরুল আরেফিন ভূঁইয়্যাকে বহনকারী একটি প্রাইভেটকার আটকে হামলা করা হয়। এতে কোনমতে প্রাণে বাঁচেন দুই রাজস্ব কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান খান ও বদরুল আরেফিন ভূঁইয়্যা। এসময় তাদের গাড়ির গ্লাসে চাপাতি দিয়ে কোপ দেওয়া হয় এবং দরজায় লাথি মারা হয়। পরে এক যুবককে গুলি কর, গুলি কর, বলে চিৎকার করতে শোনা যায়। এসময় একটি মোটরসাইকেলে তিনজন পালিয়ে যায়। পাশে আরও একটি মোটরসাইকেলও দেখা যায়। এ সংক্রান্ত ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। পরে কাস্টমস কর্মকর্তারা থানায় তিনজনের বিরুদ্ধে অজ্ঞাতনামা হিসেবে মামলা করেন।
একটি সূত্র জানিয়েছে, হামলায় মোট ছয়জন অংশ নেয়। তারা তিনটি মোটরসাইকেল ব্যবহার করে। তারা সবাই শীর্ষ সন্ত্রাসী মো. সবুজ ওরফে বার্মা সবুজের অনুসারী। অভিযোগ ওঠেছে, ইতিমধ্যে হামলায় অংশ নেওয়া সোহাগকে বাইরে নিরাপদে সরিয়ে দিয়েছেন বার্মা সবুজ।
কাস্টমস কর্মকর্তারা জানায়, আমদানি নিষিদ্ধ পপি বীজ ও ঘনচিনি, নিষিদ্ধ কসমেটিকসসহ একাধিক অবৈধ চালান তারা আটক করেছে। এসব ঘটনায় হামলার শিকার দুই রাজস্ব কর্মকর্তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। এতে অনেকে তাদেরকে টার্গেট করে হামলা করতে পারে। এ ঘটনায় কাস্টমস কর্মকর্তা ও তাদের পরিবার উদ্বেগ-উৎকন্ঠায় আছেন বলে জানিয়েছে একাধিক কর্মকর্তা। ধারণা করা হচ্ছে, চোরকারবারীরা শীর্ষ সন্ত্রাসীদের ভাড়া করে কাস্টমস কর্মকর্তাদের হত্যা করতে চেয়েছিল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২৯ জুন শীর্ষ সন্ত্রাসী বার্মা সবুজ বায়েজিদের হিলভিউ কলোনী থেকে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার করা হয়। সেই থেকে সে পাঁচ মাস ধরে কারাগারে ছিল। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, হত্যা, চাঁদাবাজি, হামলাসহ ৩৫টির বেশি মামলা রয়েছে। কারাগারে থাকাকালে তার সাথে সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদের সাথে অপরাধ নিয়ন্ত্রণের ডিল হয়। বর্তমানে সাজ্জাদের হয়ে বার্মা সবুজ কাজ করছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। এমনকি শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের অনুসারীরা তার দলে যোগ দিয়েছে বলে জানা গেছে।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের ডেপুটি কমিশনার মো. তারেক মাহমুদ জানান, আমরা সত্যিকার অর্থে উদ্বিগ্ন। জড়িত সব আসামিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে পারলেই আমরা মনে করব আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আমাদের নিরাপত্তা দিতে পেরেছে। অন্যথায় দেশের জন্য কাজ করতে কমিশনাররা উৎসাহিত হবেন না। তারা মানসিকভাবে যেন ভেঙে না পড়েন সেটাই আমরা চাই। আমদানি নিষিদ্ধ পণ্যে আমদানি আটকে দেওয়া ও কয়েকটি চালান আটকের ঘটনায় ক্ষুদ্ধ হয়ে চোরাকারবারীরা এসব করছে।
তথ্যসূত্র:
১। জামিন পেয়ে জেল থেকে মুক্তির আগেই অপরাধ চক্রে সন্ত্রাসী সবুজ
– https://tinyurl.com/2fe4vkz3


