
ভারতের বিহার রাজ্যের গোপালগঞ্জ জেলায় গরুর মাংস বহনের সন্দেহে আবারও এক মুসলিম যুবককে মারধর করেছে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা। তাকে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে ভয়াবহভাবে পেটানো হয়েছে। মজলুম মুসলমান পেটানোর এই দৃশ্য তারা মোবাইলে ধারণ করেছে। এই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হলে জনমনে আতঙ্ক ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
দি অবজারভার পোস্ট নিউজের প্রতিবেদনে গত ২৯ ডিসেম্বর এই তথ্য জানানো হয়েছে।
ভুক্তভোগী ব্যক্তির নাম আহমেদ আজাদ। তিনি পার্শ্ববর্তী সিওয়ান জেলার এলাকার বাসিন্দা।
স্থানীয়রা জানায়, আজাদ মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছিলেন, তখন একদল উগ্র লোক তার বাইক থামায়। কোনও আইনি কর্তৃত্ব ছাড়াই উগ্র হিন্দু সন্ত্রাসীরা তাকে তল্লাশি শুরু করে, তার নিকট গরুর মাংসের একটি বাক্স পাওয়া গেছে বলে অভিযোগ তুলে।
তখন ঘটনাস্থলে আরও মানুষের ভিড় তৈরি। শীতকালীন আবহাওয়ায় ভুক্তভোগীকে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে বেঁধে প্রকাশ্যে মারধর করা হয়।
ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে এক উগ্র ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, আমরা তাকে গরুর মাংসসহ আটক করেছি। কাছাকাছি একটি মন্দির রয়েছে, এই লোক অসৎ উদ্দেশ্যে গরুর মাংস নিয়ে এসেছে।
অপর এক উগ্র ব্যক্তি দাবি করে, মোটরসাইকেলটি চুরি করে এনেছে বলে মনে হচ্ছে।
তবে ভুক্তভোগীর নিকট এই ধরনের কিছুর প্রমাণ মেলেনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক দোকানদার বলেন, এই নির্যাতনের দৃশ্য ভয়াবহ। তিনি কাঁদছিলেন আর সাহায্য চাইছিলেন, কিন্তু লোকজন তার সাহায্যে এগিয়ে আসতে ভয় পাচ্ছিল।
স্থানীয় এক প্রবীণ মুসলমান জানায়, আজ আহমেদ আজাদ। আগামীকাল অন্য কেউ এমন নির্যাতনের শিকার হবে। উগ্র সন্ত্রাসীরা রাস্তায় বিচারক ও পুলিশের মতো আচরণ করছে।
সচেতন নেটিজেনরা প্রশ্ন তুলেছেন, কিছু ব্যক্তিগত গোষ্ঠী কীভাবে কারও দোষ ও শাস্তি নির্ধারণ করতে পারে? তারা এই ধরনের নির্যাতনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আজাদকে উদ্ধার করে। তবে যারা তাকে নির্যাতন করেছিল তাদের কাউকে গ্রেপ্তার করে নি পুলিশ।
এই ঘটনায় গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মানবাধিকার কর্মীরা। তাদের মতে, এই ধরনের ঘটনা ভারতে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান গণসহিংসতা প্রতিফলিত করছে।
তথ্যসূত্র:
1. https://tinyurl.com/333m3bcw


