কমিউনিস্ট চীনের পৈশাচিক জুলুমের সমর্থনে ঐক্যমতে পৌঁছেছে নামধারী মুসলিম দেশগুলো!

2
2576
কমিউনিস্ট চীনের পৈশাচিক জুলুমের সমর্থনে ঐক্যমতে পৌঁছেছে নামধারী মুসলিম দেশগুলো!

“সকল মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলো উম্মাহর কল্যাণে একটি ঐক্যমতে পৌঁছাক” এই ছিল গোটা মুসলিম উম্মাহর প্রাণের দাবী। আমরা সব সময় এই প্রার্থনাই করতাম।

হ্যাঁ, গোটা মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ জাহানের রাষ্ট্রপ্রধানদের প্রায় সকলেই একটি ব্যাপারে ঐক্যমতে পৌঁছেছে। একই পথে হেঁটেছে সৌদি আরব ও ইরানের মত একে অপরের চরম শত্রু রাষ্ট্রও! যেখানে এসে জালিম আসাদ আর একমাত্র পরমানু শক্তিধর নামে মাত্র মুসলিম রাষ্ট্র পাকিস্তানের মতও মিলে গেছে।

কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, মুসলিমদের কোনো কল্যাণে নয় বরং পূর্ব তুর্কিস্তানের মুসলিমদের উপর হিংস্র সমাজতান্ত্রিক চীন সরকারের পরিচালিত পৈশাচিক জুলুমের সমর্থনে ঐক্যমত হয়েছে তারা।  চীন প্রশাসন যে দুই মিলিয়নের উপর মুসলিমকে বন্দী করে কেবল ইসলাম পরিত্যাগ করানোর জন্য তাঁদের উপর চালাচ্ছে অকথ্য নির্যাতন, সেটি সঠিক কাজই করছে বলে মনে করে কথিত এই মুসলিম শাসকবর্গ!

পূর্ব তুর্কিস্থান থেকে হিজরত করা মুসলিমদের দেওয়া সাক্ষাতকার এবং সেখান থেকে প্রকাশ হওয়া অসংখ্য ভিডিও ও তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে পূর্ব তুকিস্তানের মুসলিমদের বিরুদ্ধে চীন কোন ধরনের পলিসি গ্রহণ করেছে তার কিছু উদাহরণ-

*সেখানে রমজান মাসে মুসলিমদের রোজা রাখা নিষিদ্ধ, চীনা প্রশাসন সেখানে প্রতি রমজানে  দিনের বেলা গণভোজের আয়োজন করে এবং মুসলিমদের মদ ও শুকরের মাংস খেতে বাধ্য করে। আর যারা তা খেতে অস্বীকৃতি জানায়, তাদের পরিণতি হয় অত্যান্ত ভয়াবহ।

*চীনা প্রশাসন সেখানে এ পর্যন্ত শত শত মসজিদ ধ্বংস করেছে। বহু মসজিদকে  পান্থশালা, বিনোদন কেন্দ্র ও কমিউনিস্ট পার্টির অফিসে পরিণত করা হয়েছে। আর যে কয়টি মসজিদকে বাকি রাখা হয়েছে, তা কেবলই বিশ্ববাসীকে ধোঁকা দেওয়ার জন্য।

*চীনা প্রশাসন প্রতিটি মুসলিম বাড়িতে  গোয়েন্দা প্রেরণ করে, কোরআন মাজীদ তো দূরের কথা যদি কোনো বাড়িতে ইসলামী সংস্কৃতির সাথে সম্পৃক্ত ক্ষুদ্র কোনো বস্তুও পাওয়া যায় তবে বাড়ির সদস্যদের জঙ্গী সাব্যস্ত করে কথিত ‘পুনঃশিক্ষা’ ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

*মুসলিম মেয়েদের জোরপূর্বক চাইনিজ হানদের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে বাধ্য করা হচ্ছে।

*কমিউনিস্ট চীন ইসলামকে সরাসরি মানসিক রোগ (নাউযুবিল্লাহ) আখ্যা দিয়ে এর প্রতিকারের অঙ্গীকার করেছে। আর তা হচ্ছে, যেকোনোভাবেই হোক, মুসলিমদেরকে ইসলাম পরিত্যাগ করাতে হবে।

*সেখানকার সবচেয়ে ভয়ংকরতম দিক হচ্ছে, কমিউনিস্ট চীন হাজার হাজার মুসলিম শিশুকে পরিবারের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে নিজেদের অনাথ আশ্রমগুলোতে পাঠিয়ে দেয়। এই আশ্রমগুলোতে শিশুগুলোকে কমিউনিস্ট হিসেবে গড়ে তোলার সকল প্রক্রিয়াই সম্পাদন করা হয়। অদূর ভবিষ্যতে যাদেরকে মুসলিমদের বিরুদ্ধেই ব্যবহার করা হবে।

আর মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্রপ্রধানরা নিজেদের সামান্য কিছু পার্থিব স্বার্থের খাতিরে পূর্ব তুর্কিস্তানের মজলুম মুসলিমদের বিরুদ্ধে চীনের কার্যক্রমকে নির্লজ্জভাবে সমর্থন করেছে।

ইতিপূর্বে তুরস্ক ও মিশর তাদের দেশে আশ্রয় নেওয়া উইঘুর মুসলিমদের গোপনে চীনের কাছে হস্তান্তর করেছে।

আমাদের প্রাণাধিক প্রিয় রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: এমন একটি যুগ আসবে, “যখন প্রত্যেক জাতির নেতা হবে মুনাফিক।” আমরা যেন ঠিক সেই সময়টিকেই অতিক্রম করছি। আল্লাহ আমাদেরকে সকল প্রকারের ফেতনা থেকে হেফাজতে রাখুন, উম্মাহর কল্যাণময় দিনের আগমন ত্বরান্বিত করুন, আমীন।


লেখক: ত্বহা আলী আদনান ।

2 মন্তব্যসমূহ

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধআফগানিস্তানের ফারইয়াবে হামলাঃ ২০টি চেকপোস্ট বিজয়, ১৯ মুরতাদ সেনা হতাহত।
পরবর্তী নিবন্ধকুফ্ফার বাহিনীকে টার্গেট করে মিসাইল হামলা চালাচ্ছেন মুজাহিদগণ!