৪ ছাত্রকে রাতভর ‘গেস্টরুমে’ পিটিয়ে পুলিশে দিল সন্ত্রাসী ছাত্রলীগ

0
1198
৪ ছাত্রকে রাতভর ‘গেস্টরুমে’ পিটিয়ে পুলিশে দিল সন্ত্রাসী ছাত্রলীগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ‘শিবির সন্দেহে’ আবরার মাহমুদের মতো চার শিক্ষার্থীকে রাতভর ‘গেস্টরুমে’ নিয়ে নির্যাতনের পরে পুলিশ হেফাজতে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

গতকাল মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে জহুরুল হক হলের গেস্টরুমে এ ঘটনা ঘটে। এর প্রতিবাদে আজ বুধবার বিকেল ৪টায় শাহবাগে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে ছাত্র অধিকার পরিষদ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের নিয়মিত গেস্টরুম চলছিল। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. মুকিম চৌধুরীকে শিবির সন্দেহে গেস্টরুমে ডাকা হয়। সেখানে হল শাখা সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আমির হামজা তাদের অনুসারীদের দিয়ে মুকিমকে প্রথমে মানসিক চাপ দেন। এতে স্বীকার না করায় তাকে লাঠি, স্ট্যাম্প ও রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করতে থাকেন তারা।

পরে মুকিমের ফোনের চ্যাটলিস্ট দেখে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সানওয়ার হোসেনকে গেস্টরুমে আনা হয়। সেখানে তাকেও বেধড়ক মারধর করেন সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের নেতারা। এর কিছুক্ষণ পরে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মিনহাজ উদ্দীন ও একই বর্ষের আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী আফসার উদ্দীনকে ধরে গেস্টরুমে আনা হয়। সেখানে রাত ২টা পর্যন্ত তাদের ওপর বিভিন্নভাবে নির্যাতন করতে থাকেন সন্ত্রাসী ছাত্রলীগ নেতারা।

পরে তাদেরকে প্রক্টরিয়াল টিমের মাধ্যমে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়। এরপর পুলিশ তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

নির্যাতনের বিষয়ে হল শাখা সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আমির হামজা বলেন, ‘আমরা তাদের মারধর করিনি। শুধুমাত্র জিজ্ঞাসা করেছি। তাদের কাছ থেকে শিবিরের দুটি বই উদ্ধার করেছি।’

তবে সেই বইয়ের ছবি ও নামের বিষয়ে জানতে চাইলে আমির হামজা কোনো উত্তর দিতে পারেননি।

বিষয়টি জানতে জহুরুল হক হলের প্রভোস্ট দেলোয়ার হোসেনকে ফোন দিলে তিনি মিটিংয়ে আছেন বলে জানান।

এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বলেন, ‘গতরাতে তাদের আমরা ধরে আনি। তারপর তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে রাতেই আবার থানায় আনা হয়। বর্তমানে তারা থানায় আছে।’

বিষয়টি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। খোঁজ নিয়ে দেখছি। শুনেছি সন্ত্রাসী ছাত্রলীগ তাদের মেরেছে। ছাত্রলীগ তাদের মারার কে? ছাত্রলীগ যে সন্ত্রাসী কার্যক্রম শুরু করেছে ভিন্ন মতের শিক্ষার্থীদের শিবির সন্দেহে মারার, ছাত্রলীগকে এই অধিকার কে দিয়েছে?’

সূত্রঃ আমাদের সময়

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধলালমনিরহাটে সন্ত্রাসী বিএসএফের গুলিতে ২ বাংলাদেশি নিহত
পরবর্তী নিবন্ধমাইকে আজানের অনুমতি দিল না ভারতের এলাহাবাদ হাইকোর্ট