পাকিস্তানের ঐতিহাসিক লাল মসজিদ সংলগ্ন মাদরাসা হাফসার ছাত্রী এবং সংশ্লিষ্টদের এ যাবত নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করছে প্রশাসন। এখন অবস্থা এতটাই চরম আকার ধারণ করে যে, মাদরাসার অভ্যন্তরে খাবার পৌঁছানোও বন্ধ হয়ে যায়। এবং অযথাই মাদরাসার চারপাশে একটি যুদ্ধংদেহী পরিবেশ সৃষ্টি করে রাখা হয়েছে।
ডন ও ইন্ডিপেন্ডেন্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসলামাবাদের লাল মসজিদ প্রাক্তন ইমাম মাওলানা আবদুল আজিজের স্ত্রী বলেছেন, রাজধানীর প্রশাসন গত চার দিন ধরে লাল মসজিদকে ঘিরে রেখেছে এবং পুলিশকে কাউকে মসজিদে বা বাইরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না।
রাজধানী ইসলামাবাদের মুরতাদ প্রশাসন মসজিদটির চারপাশ ঘিরে রাখায় মাওলানা আবদুল আজিজ তার ছাত্রীদের নিয়ে মসজিদের ভিতরে অবস্থান নিয়েছেন। এ নিয়ে অন্যরকম এক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এ খবর দিয়েছে পাকিস্তানের অনলাইন সংবাদ মাধ্যম ডন।
ডন লিখেছে, গত শুক্রবার সরকারের বিভিন্ন ইসলাম বিদ্বেষী কর্মকাণ্ড নিয়ে বয়ান দিয়েছেন মাওলানা আজিজ। কিন্তু বিষয়টি আরো গুরুত্বর হয়ে ওঠে যখন জামিয়া হাফসা, জি-৭ এর প্রায় ১০০ ছাত্রী বৃহস্পতিবার রাতে এইচ-১১ এর সেমিনার হলের সিল করা ভবনে প্রবেশ করেন।
এর ফলে রাজধানীর প্রশাসনের কর্মকর্তারা লাল মসজিদে যান মাওলানা আজিকের সঙ্গে কথা বলতে। কিন্তু তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সম মর্যাদার সিনিয়র কোনো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তিনি সমঝোতামূলক আলোচনা করবেন।
এ বিষয়ে মসজিদের ভিতর থেকে মোবাইল ফোনে ডন’কে মাওলানা আজিজ বলেছেন, তারা সবাই আবারও একই ভুল করছেন। তারা সুপ্রিম কোর্টের রায়কে সম্মান দেখাচ্ছেন না এবং দেশে শরিয়া আইন জারির বিষয়ে অনীহা দেখাচ্ছেন।
তিনি আরো বলেন, তারা এইচ-১১ এর জামিয়া হাফসা খালি করে দেয়ার জন্য ডেডলাইন দিয়েছেন আমাদেরকে। না হলে আবারও অপারেশন চালানোর হুমকি দিয়েছে। এমনকি খাবার সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা ইসলামের স্বার্থে এর ভিতরেই অবস্থান নেবো।
কর্তৃপক্ষ এই ধর্মীয় নেতাকে লাল মসজিদ খালি করে দেয়ার হুমকি দেয়ার পর বৃহস্পতিবার রাত থেকেই ওই এলাকা অবরুদ্ধ হয়ে আছে।
এ অবস্থায় প্রশাসন লাল মসজিদের চারপাশে কাঁটাতারের বেঁধে দিয়ে তা অবরোধ করে রেখেছে। মসজিদের মূল ফটকের সামনে করিডোরটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
প্রশাসন মাদরাসার আভ্যন্তরীণ গ্যাসের লাইনও বন্ধ করে দেয়। যাতে করে মাদরাসার ভেতরে কোনোরকম খাবার প্রস্তুত হতে না পারে। এবং তাদেরকে বাইরে থেকে খাবার নিয়ে যেতেও বাধা দেয়া হয়।
কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে মুসল্লিদেরকে শুধু শুক্রবার মসজিদের প্রবেশ করতে দেয়া হয়েছে নামাজ আদায় করতে।এছাড়া অন্যান্য ওয়াক্তে প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না।
মসজিদটি বাইরের সবার জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে মাগরিব ও অন্যান্য নামাজের জন্য। ফলে মুসল্লিরা মসজিদের বাহিরেই নামাজ আদায় করছেন।
আর গত শুক্রবার বয়ানে মাওলানা আজিজ সাহেব রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের অপকর্ম তুলে ধরে তারা ইসলামের সত্যিকার অনুসারী নন বলে ঘোষণা করেছেন।