এক বছর পরও মুসলমানদের বিরুদ্ধে ঘৃণা বৃদ্ধি নিউজিল্যান্ডে

0
882

ক্রাইস্টচার্চের দু’টি মসজিদে নির্বিচারে গুলিবর্ষণের বছরপূর্তির কয়েক দিন আগেও নিউজিল্যান্ডে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে মুসলিম ও তাদের মসজিদে আরো হামলার হুমকি দেয়া হয়েছে। এনক্রিপটেড মেসেজিং অ্যাপে পাঠানো একটি ছবিতে চোখ আর ঠোঁটের অংশ ছাড়া মুখমণ্ডলের পুরোটা ঢাকা বালাক্লাভা ক্যাপ বা কালো মুখোশ পরিহিত এক ব্যক্তিকে গত বছর হামলার শিকার আল নুর মসজিদের সামনে দাঁড়ানো অবস্থায় দেখা গেছে; তার সাথে ছিল হুমকি ও বন্দুকের ইমোজি।

গত বছর ১৫ মার্চ জুমার নামাজের সময় দু’টি মসজিদে সন্দেহভাজন এক শ্বেতাঙ্গ সন্ত্রাসী ওই ভয়াবহ হামলার পর থেকে নিউজিল্যান্ডে ঘৃণা ও বিদ্বেষমূলক অপরাধ এবং অভিবাসীদের অপছন্দ ও তাদের নিয়ে আতঙ্ক ছড়ানোর পরিমাণ যেভাবে বাড়ছে, মেসেজিং অ্যাপের মাধ্যমে হুমকি সেসবরেই সর্বশেষ নজির। ব্রেন্টন টারান্ট নামের ওই বন্দুকধারী কেবল আধা-স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে নির্বিচারে গুলিই চালায়নি; মসজিদে হামলার পুরো ঘটনা ফেসবুকে লাইভ করে ছড়িয়েও দিয়েছে। খবরঃ নয়া দিগন্তের

অস্ট্রেলীয় নাগরিক টারান্টের বিরুদ্ধে আল নুর মসজিদ ও লিনউড ইসলামিক সেন্টারে হামলা, হত্যার ৯২টি অভিযোগ আনা হয়েছে। চলতি বছরের জুন থেকে নিজেকে নির্দোষ দাবি করা এ তরুণের বিচার শুরু হওয়ার কথা।

নিউজিল্যান্ডে মুসলিম নারীদের ওপর ক্রমবর্ধমান হুমকি এবং উগ্র ডানপন্থীদের উত্থান নিয়ে গত কয়েক বছর ধরেই এ কাউন্সিল সরকারকে সতর্ক করে আসছিল। গত বছরের জুলাইয়ে যাত্রা শুরু করা এ জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠী তাদের ওয়েবসাইটে ‘ইউরোপিয়ান নিউজিল্যান্ডারদের জন্য একটি কমিউনিটি গড়ে তোলার’ ওপর জোর দিয়েছে। আটক তরুণের কর্মকাণ্ডের সাথে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করেছে অ্যাকশন জিল্যান্ডার। বিবৃতিতে সংগঠনটি বলেছে, ‘অপরিপক্ব ও অনুৎপাদনশীল কাজ; আমরা লক্ষ্যে পৌঁছতে সহিংসতাকে ব্যবহার করি না।’

অ্যাকশন জিল্যান্ডারের মতো ৬০ থেকে ৭০ গোষ্ঠী নিউজিল্যান্ডে এ ধরনের বর্ণবাদী ও বিদ্বেষমূলক ভাবনার প্রসার ঘটাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ম্যাসি ইউনিভার্সিটির পল স্পুনলি। তার এ বক্তব্যের সুর শোনা গেছে নিউজিল্যান্ডের গোয়েন্দা প্রধান রেবেকা কিটেরিজের কথাতেও। গত মাসে অ্যাডুর্নের সভাপতিত্বে সংসদীয় এক কমিটির বৈঠকে রেবেকা জানান, ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে হামলার পর থেকে কট্টর ডানপন্থীরা চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। যেকোনো মুহূর্তে হুমকি হয়ে আবির্ভূত হতে পারে এমন ৩০ থেকে ৫০ জন গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারিতে আছে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১৫ মার্চ জুমার নামাজের সময় ক্রাইস্টচার্চের দু’টি মসজিদে বন্দুক হামলা চালায় স্বঘোষিত শ্বেতাঙ্গ চরমপন্থী সন্ত্রাসী অস্ট্রেলিয়ার এক নাগরিক ব্রেন্টন ট্যারেন্ট। ২৮ বছর বয়সী ব্রেন্টনের ওই হামলায় নিহত হন ৫১ জন মুসলিম। তার পাঁচটি আগ্নেয়াস্ত্র এবং একটি বন্দুকের লাইসেন্স ছিল। মাথায় স্থাপন করা ক্যামেরা দিয়ে পুরো হামলার ঘটনা সরাসরি ইন্টারনেটে প্রচার করছিল হামলাকারী। বন্দুকধারী এক মসজিদে হামলার পর প্রায় ৫ কিলোমিটার গাড়ি চালিয়ে আরেকটি মসজিদে গিয়ে হামলা চালিয়েছিল।

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধইয়াবা কারবারে ধরা খেলো সন্ত্রাসী আ.লীগ নেত্রী
পরবর্তী নিবন্ধব্যাংক ব্যবস্থাকে বিপাকে ফেলে আওয়ামী সরকারের ঋণ ৭২ হাজার কোটি টাকা