ভারতের সঙ্গে সীমান্ত উত্তেজনা চলার মধ্যে চীন তার পশ্চিমাঞ্চলীয় উচ্চভূমি এলাকায় যুদ্ধের উপযোগী বেশ কিছু অত্যাধুনিক অস্ত্র মোতায়েন ও মহড়া চালিয়ে যাচ্ছে। ওই এলাকায় প্রতিবেশী ভারতও অব্যাহতভাবে শক্তি বৃদ্ধি করছে।
সীমান্তে উত্তেজনা হ্রাস করার ব্যাপারে দুই দেশে সর্বশেষ একমত হওয়ার আগে থেকেই চীনের মোতায়েন শুরু হয়। দুই দেশ এখন ফ্রন্টলাইন সেনাদের পরস্পর থেকে দূরে সরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে একমত হয়েছে।
চীনের মোতায়েন করা অত্যাধুনিক অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে পিএইচএফ-০৩ ও পিএইচএল-১১ সেল্ফ-প্রপেলড মাল্টিপল রকেট ল্যান্সার সিস্টেম, পিসিএল-১৮১ ভেহিকেল মাউন্টেড হাউৎজার, এইচজে-১০ এন্টি-ট্যাঙ্ক মিসাইল, টোওড ৩৫এমএম এন্টি-এয়ারক্রাফট গান, টাইপ-১৫ লাইট ট্যাঙ্ক ও জেড-১০ অ্যাটাক হেলিকপ্টার। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের উচ্চ মরুভূমি এলাকা ও দক্ষিণ পশ্চিম চীনের কুইঙ্ঘি-তিব্বত মালভূমিতে এগুলো মোতায়েন করা হয় বলে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চীনের সেন্ট্রাল টেলিভিশনের বেশ কিছু রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
উচ্চপার্বত্য এলাকায় যুদ্ধ করার জন্য এসব অস্ত্র খুবই কার্যকর এবং উপত্যকা অঞ্চলের জন্য এগুলো বিশেষভাবে ডিজাইন করার সময় সেখানকার স্বল্প অক্সিজেনের বিষয়টি মাথায় রাখা হয়েছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়।
মঙ্গলবার ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্টে বলা হয়, লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলের কাছে ভারতীয় সেনারা মহড়া চালিয়েছে এবং তাতে অ্যাপাচি অ্যাটাক হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়। ভারত গালওয়ান উপত্যকায় টি-৯০ ট্যাংকও মোতায়েন করেছে বলে আলাদা আরেক রিপোর্টে বলা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চীনের এক সামরিক বিশেষজ্ঞ মঙ্গলবার গ্লোবাল টাইমসকে বলেন, উচ্চ-ভূমিতে যুদ্ধ করার জন্য কার্যকর হবে এমন সতর্কতার সঙ্গে চীনা অস্ত্রগুলো বাছাই করা হয়েছে। শত্রুর যুদ্ধ ক্ষমতাও এ ক্ষেত্রে বিবেচনায় নেয়া হয়।
চীনের রকেট ও কামান দিয়ে স্থলভাগে শত্রুর দুর্গ ও অন্যান্য লক্ষ্যবস্তুকে টার্গেট করা যায়, এন্টি-এয়ারক্রাফট গান আকাশকে মুক্ত রাখবে এবং অ্যাটাক হেলিকপ্টার শত্রুর ট্যাঙ্ক ধ্বংস করবে। এরপর নিজস্ব ট্যাঙ্কবাহিনী জায়গার দখল নেবে।
তবে দুই পক্ষের শক্তি বৃদ্ধির পরও চীনের বিশেষ প্রতিনিধি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইয়ি এবং ভারতীয় জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল গত রোববার বৈঠকে বসার পর পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়ে এসেছে।
সাম্প্রতিক সামরিক ও কূটনৈতিক আলোচনার ফলাফলকে উভয় পক্ষ স্বাগত জানিয়েছে।
গত জুন থেকে চীন ও ভারত কমান্ডার পর্যায়ে তিন দফা আলোচনা করে। সর্বশেষ আলোচনা হয় ৩০ জুন।
চীনা বিশ্লেষকরা বলছেন যে বেইজিং আলোচনা ও উত্তেজনা হ্রাসকে স্বাগত জানায়। তবে ভারতীয়রা যদি আবারো উস্কানিমূলক কিছু করে তার জবাব দিতে চীনা সেনাবাহিনী সবসময় প্রস্তুত থাকবে।
সূত্র: গ্লোবাল টাইমস