বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যানালাইজার মেশিন, এক্স-রে, জেনারেটরসহ অনেক যন্ত্রপাতি বিকল হয়ে পড়ে আছে। এ কারণে এখানে রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি শূন্য রয়েছে আয়াসহ সুইপারের পদ।
জানা গেছে, ৩১ শয্যা বিশিষ্ট এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি স্থাপিত হয় ১৯৬৪ সালে। নন্দীগ্রাম সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে ভাটগ্রাম ইউনিয়নের বিজরুল গ্রামে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির অবস্থান। উপজেলার ১ লাখ ৮৮ হাজার মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র ভরসা।
মূল শহর থেকে অনেক পথ দূরে হওয়ায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি অবহেলিত এবং উপেক্ষিত ডাক্তার, নার্স এবং রোগীদের কাছেও। কারণ এখানে কোনো বিশেষজ্ঞ ডাক্তার পোস্টিং নিতে চান না। মেডিক্যাল অফিসারদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। কেউ পোস্টিং পেলেও বেশি দিন থাকতে চান না এই হাসপাতালটিতে।
এছাড়া চিকিৎসক সংকট এবং চিকিৎসার যন্ত্রপাতির অভাবে ঠিকঠাক চিকিৎসা সেবা পাবে না জেনে উপজেলার রোগীরাও এতটা পথ পাড়ি দিয়ে হাসপাতালটিতে যেতে চান না। যে কারণে বগুড়া জেলার অন্যান্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোর চেয়ে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে রোগীর সংখ্যাও থাকে অনেক কম।
মাত্র ৪ জন মেডিক্যাল অফিসার দিয়ে চলছে সেখানকার চিকিৎসা কার্যক্রম। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে এক বছরের বেশি সময় ধরে কোনো বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নেই। তবে হাসপাতালটিতে ২০ জন নার্স রয়েছেন। একজন মাত্র পরিচ্ছন্নতা কর্মী রাখা হয়েছে যাকে নাইটগার্ড হিসেবে ব্যবহার করা হয়। যে কারণে হাসপাতালের পরিবেশও যথেষ্ট নোংরা।
সেখানে নেই কোনো অপারেশন থিয়েটার, নেই চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় কোনো যন্ত্রপাতি। শুধুমাত্র একটি আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন সচল রয়েছে। অ্যানালাইজার মেশিন ৬ মাস ধরে বিকল, এক বছর ধরে এক্স-রে মেশিন নষ্ট, ইসিজি একটি সচল-একটি বিকল রয়েছে। শুধু তাই নয় ৪ বছর ধরে জেনারেটর নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। বিদ্যুৎ চলে গেলে বিকল্প ভাবে কোন রকমে সৌর বিদ্যুৎ দিয়ে আলোকিত করা হয়। তবে ফ্যান না চলায় রোগীদের চরম দূর্ভোগে পড়তে হয়। এদিকে হাসপাতালে আয়া পদ দু’জনের থাকলেও, চার বছর ধরে নেই কেউ। সুইপারও নেই চার বছর ধরে।
বুধবার (২৮ অক্টোবর) সকালে সরজমিনে দেখা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্যাথলজি বিভাগে তালা ঝুলছে। প্যাথলজি বিভাগে তিনজন মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট দায়িত্বে আছে। এরমধ্যে সাবিনা ইয়াসমিন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে, শাহ-জালাল
উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে করোনার নমুনা সংগ্রহ করছেন, অন্যজন রাজীব আহম্মেদও ছুটিতে। এতে হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের বাইরে থেকে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে রক্ত ও মলমূত্রের পরীক্ষা করাতে হচ্ছে।
হাসপাতালে লিভার সমস্যায় রক্ত পরীক্ষা করতে আসা আমড়া গোহাইল গ্রামের গৃহবধূ পিয়ারা বেগম বলেন, হাসপাতালে এখন আর পরীক্ষার ডাক্তার নেই। বাইরে থেকে সব করতে হয়। তাহলে এই হাসপাতাল থেকে লাভ কী। হাসপাতাল চলছে নিজেদের খেয়াল-খুশিতে।
নন্দীগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. তোফাজ্জল হোসেন মন্ডল জানান, এক বছর হলো এখানে কোনো বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নেই। কেউ পোস্টিং পেলেও বেশিদিন থাকতে চান না। এখানে সব রকম যন্ত্রপাতির অভাব। আমাদের এক্সরে মেশিন মাঝখানে চালু ছিলো কিন্তু এখন নষ্ট। এই হাসপাতালকে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হচ্ছে। তবে ৫০ শয্যায় উন্নীত হলে অপারেশন থিয়েটার পাওয়া যাবে। আমরা তখন আরো কিছু সার্ভিস দিতে পারবো।
বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের জন্য বগুড়ার সিভিল সার্জনকে জানানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সিভিল সার্জন মন্ত্রণালয়ে জানিয়েছেন। কিন্তু আলোর মুখ দেখছেনা হাসপাতালটি। কালের কণ্ঠ
তাগুতের তলা নাই দেশ চালানোর টাকা নাই
দেশেও ওদের বেশীদিন ঠাঁই নাই পালানোর জায়গানেই
বঙ্গপোসাগরে জাহাজ নাই ওরা তাহলে যাবে কই
আমাদের তরবারির নিচে ওদের ঠিকানা বিইরনিল্লাহ।