৯/১১ হামলা নিয়ে প্রচলিত ১৩ টি ষড়যন্ত্র তত্ত্বের খণ্ডন
আবু উবাইদা
সূচীপত্র
ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ১- ভেতর থেকে নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণের মাধ্যমে টুইন টাওয়ার ধ্বংস করা হয়েছে। 6
ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ২- বিমানের আঘাতে এতো ক্ষয়ক্ষতি হবার কথা না। 7
ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ৯ – পেন্টাগনে বিধ্বস্ত বিমানের ধ্বংসাবশেষ কোথায়?. 15
প্রত্যেক শতাব্দীতে এমন কিছু ঘটনা ঘটে যা সেই শতাব্দীর গতিপথ পাল্টে দেয়। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বরের ১১ তারিখে এমন এক ঘটনা ঘটে, যা পাল্টে দিয়েছে এই শতাব্দীর গতিপথ। উল্টে দিয়েছে সকল ক্ষমতার লড়াই আর ভূরাজনৈতিক হিসাব নিকেশের ছক। এদিন আমেরিকার আগ্রাসনের প্রতিশোধ নিতে আল-কায়েদা, আমেরিকার গর্ব, অহংকার আর শক্তির প্রতীকগুলোতে একের পর এক আঘাত হানে বেসামরিক বিমানের সাহায্যে। আল-কায়েদার সদস্যরা, আমেরিকান এয়ারলাইন্সের ‘ফ্লাইট ১১’ এবং ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের ‘ফ্লাইট ১৭৫’ বিমান দুটি দিয়ে নিউইয়র্কের ‘ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের’ উত্তর এবং দক্ষিণ টাওয়ারে আঘাত করে। এই দুই টাওয়ার ‘টুইন টাওয়ার’ নামে সমধিক পরিচিত। এর ঠিক এক ঘণ্টা ৪০ মিনিট পর আমেরিকান এয়ারলাইন্সের ‘ফ্লাইট ৭৭’ বিমানটি আছড়ে পড়ে আমেরিকার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দফতর ‘পেন্টাগনে’। পেন্টাগনের পশ্চিম দেয়াল মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সর্বশেষ পেনসেলভেনিয়াতে ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের ‘ফ্লাইট ৯৩’ বিমানটি শ্যাঙ্কসভিল শহরের কাছে একটি খোলা মাঠে বিধ্বস্ত হয়। সর্বমোট ২,৯৯৬ জন প্রাণ হারায়।
এই অবিশ্বাস্য ঘটনায় বিশ্ববাসী প্রচণ্ড অবাক হয়ে যায়। ইতিহাসে এই প্রথম আমেরিকার মূল ভূখণ্ডে ঢুকে কেউ আঘাত হানে আমেরিকাকে। আমেরিকার অপরাজেয়, অপ্রতিরোধ্য যে মূর্তি দাঁড়িয়ে ছিল দশকের পর দশক জুড়ে তা মাটির সাথে মিশে যায়। আমেরিকার সম্মান, প্রতিপত্তি বিশ্বমঞ্চে ব্যাপক প্রশ্নবিদ্ধ হয়।
আল-কায়েদা তো বটেই, আমেরিকা সরকারও স্বীকার করেছে এই হামলার জন্য আল-কায়েদা দায়ী। কিন্তু অনেকেই এটা বিশ্বাস করতে নারাজ। তারা কোনোমতেই বিশ্বাস করতে চায় না কেউ আমেরিকার গায়ে হাত দিতে পারে! আমেরিকার ভূখণ্ডে প্রবেশ করে, আমেরিকার বিমানের সাহায্যেই আমেরিকাকে আঘাত হানা তো অনেক দূরের ব্যাপার! এই মানুষদের হাত ধরেই ৯/১১ নিয়ে উদ্ভব হয় একের পর ষড়যন্ত্র তত্ত্ব – আমেরিকার সমর্থনেই ৯/১১ হামলা হয়েছে, আফগানিস্তান আক্রমণের জন্য ৯/১১ ছিল একটি সাজানো নাটক, বেসামরিক বিমান এতোটা ক্ষয়ক্ষতি করতে পারে না, টুইন টাওয়ার বিমান হামলায় নয় বরং ভেতর থেকে বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে ধসিয়ে দেওয়া হয়েছে, এর মূল পরিকল্পনাকারী ছিল ইসরাইল ইত্যাদি। এই প্রবন্ধে এমন কিছু ষড়যন্ত্র তত্ত্বের প্রকৃত বাস্তবতা তুলে ধরা হবে।
ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ১- ভেতর থেকে নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণের মাধ্যমে টুইন টাওয়ার ধ্বংস করা হয়েছে।
টুইন টাওয়ার ধসে পড়ার সময় রহস্যময় ধোঁয়ার কুণ্ডলী বের হয়েছিল। এই ধোঁয়াকে প্রমাণ হিসেবে দেখিয়ে দাবী করা হয় -বিমানের আঘাতে নয়, বরং ভেতর থেকে ভেতর থেকে নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণের মাধ্যমে টুইন টাওয়ার ধ্বংস করা হয়েছে। বিস্ফোরক পদার্থসমূহ ৯/১১ এর পূর্বেই টাওয়ারের কলামগুলোতে ড্রিল করে রাখা হয়।
এই দাবীতে বেশ কিছু অসঙ্গতি রয়েছে।
প্রথমত, টুইন টাওয়ারের আকৃতি অত্যন্ত বিশাল এবং এখানে অনেক সংস্থার অফিস রয়েছে। এতো বিশাল আকৃতির, ব্যস্ত টুইন টাওয়ারের কলামগুলোতে ৯/১১ এর পূর্বের সপ্তাহে ড্রিল করে বিস্ফোরক পদার্থ রাখা হবে আর তা একজন ব্যক্তিরও চোখে পড়বে না – এটি একেবারেই অসম্ভব ব্যাপার।
দ্বিতীয়ত, এভাবে নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণের মাধ্যমে বিল্ডিং ধ্বংস করার ক্ষেত্রে নিচের ফ্লোরগুলো সবার আগে ধসে পড়ে। এরপর উপরের ফ্লোরগুলো ধসে পড়ে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছে টুইন টাওয়ারের ক্ষেত্রে উপরের ফ্লোরগুলো আগে ধ্বংস হয়েছে, নিচেরগুলো পরে। ভেতর থেকে নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ হলে এমনটি হতো না।
টুইন টাওয়ারের অভ্যন্তরে প্রচুর বাতাস ছিল। একটা ফ্লোর ধসে নিচের ফ্লোরের উপর পড়ার সময় ধসে যাওয়া ফ্লোরের বাতাস কোথাও যাবার রাস্তা পাচ্ছিল না। প্রচণ্ড বাতাসের চাপ সৃষ্টি হয়। এই প্রচণ্ড চাপবিশিষ্ট বাতাস চূর্ণ-বিচূর্ণ কংক্রিটের সাথে মিশে প্রচণ্ড গতিতে বাহিরে বের হয়ে আসে। যেটা দেখে মনে হয় সেখানে বিস্ফোরণ ঘটছে।
ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ২- বিমানের আঘাতে এতো ক্ষয়ক্ষতি হবার কথা না।
এটাও বেশ প্রচলিত একটি দাবী। প্রথম বিমান ‘টুইন টাওয়ারের’ দুই টাওয়ারের একটি, উত্তর টাওয়ারের ৯৮ থেকে ৯৪ তলার মধ্যে আঘাত হানে। দ্বিতীয় বিমান আঘাত হানে দক্ষিণ টাওয়ারের ৮৪ থেকে ৭৮ তলার মধ্যে। বিমান এতো উঁচুতে আঘাত করলেও নিচতলার লবি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কীভাবে এটা সম্ভব? তারমানে বোঝা যাচ্ছে বিমান যখন আঘাত হেনেছিল তখন নিচের ফ্লোরগুলোতেও বিস্ফোরক পদার্থের মাধ্যমে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিল।
আমেরিকার সরকারি সংস্থা ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেকনোলোজি (National Institute of Standards and Technology –NIST) অনুসন্ধান থেকে দেখা যায়- বিমান টাওয়ারগুলোতে প্রবেশ করার কারণে টাওয়ারের ইউটিলিটি শ্যাফট ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর ফলে বিমানের জ্বালানি লিফটের শ্যাফটে ঢুকে পড়ে এবং ভয়াবহ আকারের অগ্নিকান্ডের সৃষ্টি করে। লিফটের ক্যাবল ছিঁড়ে যায়, ব্রেকিং সিস্টেম অচল হয়ে পড়ে। লিফটগুলো নিচের ফ্লোরগুলোর উপর প্রচণ্ড গতিতে হুমড়ি খেয়ে পড়তে থাকে। নিচের ফ্লোরের লবি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রচণ্ড ধাক্কায় লবির দরজা উড়ে গিয়ে বিমানের জ্বালানি ছড়িয়ে দেবার সুযোগ করে দেয়। এই জ্বালানির কারণে সেখানেও ভয়াবহ আকারে আগুন লাগে। অনেক মানুষের গায়ে আগুন ধরে। জুলস নডেট (Jules Naudet) নামের একজন ক্যামেরা ম্যান হামলার পরপরই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। সে লবিতে এভাবে আগুন লাগার ঘটনা নিজের চোখে দেখেছে।
ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ৩- বিমানের জ্বলন্ত জ্বালানির তাপমাত্রা ৪২৬-৮১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অন্যদিকে স্টিলের গলনাঙ্ক ১৫১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বিমানের জ্বালানি টুইন টাওয়ারের স্টিলের কাঠামো গলানোর জন্য যথেষ্ট না। তাহলে টুইন টাওয়ার কেন ধসে পড়ল?
এটা সত্য যে শুধুমাত্র বিমানের জ্বালানিতে আগুন লাগার ফলে যে তাপের সৃষ্টি হয়েছিল তা স্টিল গলানোর জন্য যথেষ্ট না। বিমানের জ্বালানিতে আগুন লাগার পর সে আগুন ছড়িয়ে পড়ে টাওয়ারের আসবাবপত্র, চেয়ার, টেবিল পর্দা, কম্পিউটারসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি ইত্যাদিতে। সেই সাথে টুইন টাওয়ারে বিভিন্ন সংস্থার অফিস হবার কারণে সেখানে প্রচুর কাগজ ছিল। এই কাগজেও আগুন লেগে যায়। NIST এর মতে, এই সম্মিলিত আগুনের ফলে তাপমাত্রা কোথাও কোথাও প্রায় ১ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে যায়। ৫৯৩.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় স্টিল ৫০ ভাগ শক্তি হারিয়ে ফেলে। ১০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় স্টিল হারায় ৯০ ভাগ শক্তি। কাজেই তাপমাত্রা ১০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছালে টাওয়ারের স্টিলের কাঠামো মারাত্মক দুর্বল হয়ে বিল্ডিং এর ভার বহনের সামর্থ্য হারিয়ে ফেলে। বালুর প্রাসাদের মতোই ধসে পড়ে টুইন টাওয়ার।
ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ৪ – টুইন টাওয়ারের নিকটবর্তী বিল্ডিং ৭ কেন ধসে পড়ল? সেটাতে তো বিমান আঘাত করেনি? অর্থাৎ ৯/১১ একটি সাজানো নাটক ছিল
ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বিল্ডিং ৭ ছিল ৪৭ তলা বিশিষ্ট একটি ভবন। টুইন টাওয়ার ধসে পড়ার ১ ঘণ্টার মাথায় এটাও ধসে পড়ে। বিল্ডিং ৭ এ কোনো বিমান আঘাত করেছিল না। বিল্ডিং এর অভ্যন্তরে নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ ঘটালে তা যেভাবে ধসে পড়ে, বিল্ডিং ৭ সেভাবেই ধসে পড়েছিল। এ ব্যাপারটিও ষড়যন্ত্র তত্ত্বের প্রচারকারীরা ফলাও করে প্রচার করে।
উত্তর টাওয়ার ধসে পড়ার সময় বিপুল সংখ্যক ধ্বংসাবশেষ প্রচণ্ড গতিতে বিল্ডিং ৭ এর দক্ষিণ পাশে এসে আঘাত করে। বিল্ডিং ৭ এর প্রায় এক চতুর্থাংশ; নিচতলা থেকে দশ তলা পর্যন্ত ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায়। এর ফলে ভবনটির কাঠামো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভবনের অনেক জায়গায় আগুন ধরে যায়। পঞ্চম তলার আগুন এক নাগাড়ে ৭ ঘণ্টা ধরে জ্বলতে থাকে। টুইন টাওয়ার ধসে পড়ার সময় ধ্বংসস্তূপের আঘাত এবং দীর্ঘ সময় ধরে জ্বলতে থাকা আগুনের ফলে বিল্ডিং ৭ এর স্টিলের কাঠামো অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়ে। ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেকনোলোজি (National Institute of Standards and Technology –NIST) এর মতে, বিল্ডিং এর ডিজাইনেও কিছু দুর্বলতা ছিল। এ বিষয়গুলোর কারণে বিমান আঘাত না হানার পরেও একসময় বিল্ডিং ৭ ধসে পড়ে।
বিল্ডিং ৭ ধসে পড়ার দৃশ্য দেখে অনেকেরই মনে হয়েছে এটা নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণের মাধ্যমে ঘটানো হয়েছে। বিল্ডিং ৭ এর অভ্যন্তরে আগুন নেভানোর জন্য অনেক ফায়ার সার্ভিসের কর্মী কাজ করছিল। ভবনটির মালিক এই ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের উপর ভবন ধসে পড়ার আশঙ্কা করে। সে তাদের তৎক্ষণাৎ ফিরিয়ে আনতে (Pull It) বলে। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা তার এই বাক্যটির ব্যাখ্যা করে এভাবে – সে আসলে এই বাক্যের (Pull It) মাধ্যমে বোমা বিস্ফোরণের আদেশ দিয়েছে।
NIST তিন বছর ব্যাপক গবেষণা চালিয়ে মত দেয়- বিল্ডিং ধসে পড়ার প্রধান কারণ আগুন। ভেতর থেকে বিস্ফোরকের মাধ্যমে বিল্ডিং ৭ ধ্বংস করলে যে পরিমাণ শব্দ হবার কথা বা যতদূর থেকে শব্দ শুনতে পাবার কথা এক্ষেত্রে তা একদমই হয়নি। কোনো প্রত্যক্ষদর্শী এমন শব্দের কথা বলেনি বা কোনো ভিডিওতে এমন কিছু ধরা পড়েনি।
প্রকৃতপক্ষে, বিল্ডিং ৭ এর পূর্ব এবং পশ্চিম দিকের কিছু অংশ বিল্ডিং এর মধ্যবর্তী অংশে ধসে পড়ে। এর ফলে ‘চেইন রিএকশনের মতো অত্যন্ত দ্রুতগতিতে পুরো বিল্ডিং একসাথে মাটিতে ধসে যায়। যা দেখে মনে হয় যে বিস্ফোরণের মাধ্যমে বিল্ডিং ৭ কে ধ্বংস করা হয়েছে।
ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ৫ – আমেরিকা পূর্ব থেকেই ৯/১১ হামলার কথা জানত। আফগানিস্তান আক্রমণের অজুহাত হিসেবে দাড় করানোর জন্য তারা আল-কায়েদাকে হামলা চালাতে দিয়েছে।
অনেকে এমনও বলে আমেরিকা নিজেই এই হামলা চালিয়েছে। মুসলিমদের মধ্যে এই ষড়যন্ত্র তত্ত্বটি অত্যন্ত জনপ্রিয়। এটি নিয়ে আলোচনার পূর্বে দেখা যাক ৯/১১ হামলায় আমেরিকার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ:
প্রাণহানি, চরম নিরাপত্তা ভীতি ইত্যাদি বিষয় এড়িয়ে শুধু আমেরিকার অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপারে দৃষ্টি দেওয়া যাক। ৯/১১ এর সর্বাধিক তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব পড়ে অর্থনীতিতে। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আমেরিকার অর্থনৈতিক ক্ষতি ৩.৩ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছে যায়। হামলার তাৎক্ষনিক অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ৫ হাজার ৫০০ কোটি ডলার , এর মধ্যে ৮০০ কোটি ডলার ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার পুনর্গঠনে ব্যয় করা হয়েছে। পেন্টাগন সংস্কার বাবত ১০০ কোটি ডলার ব্যয় হয়েছে।
২০১০ সাল অবধি প্রত্যক্ষভাবে অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ছিল ১২ হাজার ৩০০ কোটি ডলার। যার মধ্যে শুধুমাত্র বিমান সংস্থাগুলো ৬ হাজার ৩০০ কোটি ডলার হারায়। হামলা চালানোর মাত্র চার দিনের মাথায় বিমান ইন্ডাস্ট্রি ১৪০ কোটি ডলারের ক্ষতির সম্মুখীন হয়। হামলায় ব্যবহৃত চারটি বিমানের মূল্য ছিল সাড়ে ৩৮ কোটি ডলার।
হামলা পরবর্তী দশ বছরে, হোটেল ব্যবসা ৬ হাজার কোটি ডলারের ক্ষতির সম্মুখীন হয়। যদি এই হামলাটি না হতো, তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই সময়ের মধ্যে ৭ কোটি ৮০ লাখ পর্যটক পেত। এর মাধ্যমে তারা ৬০ কোটি ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারত। এই সময়ের মধ্যে পরিসেবা খাত থেকে ৮৩,০০০ চাকরি হারিয়ে যায় অথবা বলা যায় বেতন হিসেবে ১ হাজার ৭০০ কোটি ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়। নিরাপত্তা খাতে ব্যয় হয় ৫৮ হাজার ৯০০ কোটি ডলার। কিছু প্রতিবেদনে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে, ভবিষ্যতে প্রায় সমপরিমাণ অর্থ ব্যয় হবে ইরাক ও আফগান যুদ্ধের অবসরপ্রাপ্ত সৈনিকদের চিকিৎসা ও জীবন বীমাতে।
৯/১১ এর ফলে আমেরিকার অপ্রতিরোধ্য, অপরাজেয় ইমেজ নষ্ট হয়ে যায়। সুপার পাওয়ার আমেরিকাকেও আক্রমণ করা সম্ভব – এ আত্মবিশ্বাস অর্জন করে আমেরিকার শত্রুরা। লজ্জায় বিশ্ব দরবারে আমেরিকার মাথা নত হয়ে আসে। পূর্বের প্রভাব, প্রতিপত্তি হারিয়ে ফেলে। মার্কিন সাম্রাজ্যের পতনের শুরু হয়। আমেরিকার সম্মানের উপর চরমতম এক আঘাত ছিল ৯/১১। ৯/১১ ছিল এমন এক ঘটনা যা আমেরিকা যে কোনো মূল্যে ভুলে থাকতে চাইবে।
আফগানিস্তান আক্রমণ বা মুসলিমদের নির্যাতন করার জন্য আমেরিকা কেন এতো ক্ষয়ক্ষতির শিকার হতে যাবে? আমেরিকা ইচ্ছা করলেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, নারী স্বাধীনতা, ব্যক্তি স্বাধীনতা, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার নামে মুসলিমদের নির্যাতন, শোষণ বা তার পছন্দমতো যে কোনো দেশে আক্রমণ করতে পারে। চাপ প্রয়োগ, অর্থনৈতিক অবরোধ বা সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অবাধ্য সরকারকে সরিয়ে গোলাম সরকারকে ক্ষমতায় আনতে পারে। মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা বা পৃথিবীর অন্যান্য দেশে সে এমনটা করতেই অভ্যস্ত। আমেরিকা চাইলেই এই অজুহাতসমূহ উপস্থাপন করে আফগানিস্তান আক্রমণ করতে পারত। জাতিসংঘ বা বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর কাছ থেকে সে তেমন কোনো বাঁধার মুখোমুখি হতো না। কিন্তু সে তা না করে কেন আল-কায়েদাকে ৯/১১ ঘটাতে দিবে? বা নিজেই ৯/১১ এর নাটক সাজাবে? যেখানে ৯/১১ তার জন্য চরমতম এক বিপর্যয় হিসেবে আবির্ভূত হবে।
ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ৬ – ইসরায়েলের পরিকল্পনায় এই হামলা হয়েছে। আমেরিকা আর মুসলিমদের মধ্যে সংঘাত সৃষ্টির উদ্দেশ্যেই ইসরায়েল এই হামলা চালিয়েছে।
মুসলিমদের মধ্যে এই ষড়যন্ত্র তত্ত্বটিও ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। এর সঙ্গে আরও দুইটি বিষয় এই দাবীকে শক্তিশালী করে। আর তা হলো ৪ হাজার ইহুদী টুইন টাওয়ারে কাজ করত। হামলার দিন তারা কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিল। হামলায় একজন ইহুদীও নিহত হয়নি। এবং হামলার পরপর কয়েকজন ইহুদীকে গ্রেফতার করে আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই।
প্রথমত, টুইন টাওয়ারে কর্মরত ৪ হাজার জন ইহুদীর অনুপস্থিতির বিষয়টি পুরোটাই গুজব। সে সময় ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেছিল- হামলার সময় শহরে ৪ হাজারের মতো ইসরায়েলি রয়েছে। কিন্তু এটিকেই পরিবর্তন করে বলা হয় টুইন টাওয়ারে কর্মরত ৪ হাজার ইহুদী সেদিন অনুপস্থিত ছিল। লেবাননের ‘হিজবুল্লাহ’ সমর্থিত ‘আল-মানার’ নামের এক স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল সর্বপ্রথম এই সংবাদ প্রকাশ করে সেপ্টেম্বরের ১৭ তারিখে। অন্যদিকে হামলায় নিহত প্রতি ১০ জন ব্যক্তির মধ্যে ১ জন ছিল ইহুদী।
হামলার ৪ ঘণ্টা পর ৫ জন ইহুদীকে এফবিআই গ্রেফতার করে। তারা একটি গাড়ির উপরে উঠে হাস্যোজ্জ্বল চেহারায় হামলার দৃশ্য ভিডিও করছিল। কিন্তু পরে তদন্তে প্রমাণিত হয় যে হামলার ব্যাপকতা বা অগ্রিম তথ্য সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণাই ছিলনা।
মুসলিমদের সাথে আমেরিকার সুসম্পর্ক থাকলে তবেই সুসম্পর্ক নষ্টের ব্যাপার আসে। ৯/১১ এর অনেক পূর্ব থেকেই আমেরিকা মুসলিমদের উপর অত্যাচার নির্যাতন চালায়। বিভিন্ন দেশে মুসলিমদের উপর অনুগত স্বৈরশাসক চাপিয়ে দের। আমেরিকা প্রতিটি ক্ষেত্রে মুসলিমদের বিরুদ্ধে গিয়ে ইহুদীদের সাহায্য করে। তাদের প্রত্যক্ষ সাহায্যেই ইসরায়েল মুসলিমদের ভূমি ফিলিস্তিন দখল করে নেয়। মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে লাখ লাখ মুসলিমদের হত্যা করে। শুধুমাত্র উপসাগরীয় যুদ্ধের সময়ই আমেরিকার অবরোধের কারণে খাদ্য এবং চিকিৎসার অভাবে মারা যায় ৫ লাখ ইরাকী শিশু। শাইখ উসামা বিন লাদেন রাহিমাহুল্লাহ, ৯/১১ হামলার কারণ হিসেবে আমেরিকার এ জুলুমগুলোর কথা বার বার উল্লেখ করেছেন। মুসলিমদের সাথে আমেরিকার সুসম্পর্ক ছিল না। এবং বরাবর আমেরিকা মুসলিমদের বিরুদ্ধে গিয়ে ইহুদীদের পক্ষে ছিল। কাজেই, আমেরিকার সাথে মুসলিমদের সম্পর্ক নষ্ট করে ফায়দা লোটার জন্য ইহুদীরা এই হামলা চালিয়েছে এমন দাবী অযৌক্তিক।
ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ৭ – দাবী করা হয় বিমান বিধ্বস্ত হবার ফলে হাইজ্যাকারদের সবাই নিহত হয়েছে। অথচ তাদের অনেককেই পরবর্তীতে ঘুরে বেড়াতে দেখা গিয়েছে। কাজেই ৯/১১ একটি সাজানো নাটক মাত্র।
৯/১১ হামলায় বিশ্ববাসী বিহ্বল হয়ে পড়ে। আক্রমণের পরের সময়গুলো ছিল বিশ্ববাসীর জন্য প্রচণ্ড বিস্ময়, বিভ্রান্তির। বিশেষত পশ্চিমা দেশগুলো একেবারেই কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে যায়। এই বিশৃঙ্খল, অপ্রস্তুত পরিস্থিতিতে বিবিসি সম্ভাব্য আক্রমণকারীদের নামের তালিকা এবং পরিচয় প্রকাশ করে। ৯/১১ এর হামলার ধরণ ছিল আত্মঘাতী। কাজেই কোনো আক্রমণকারী জীবিত থাকবে এমন বিন্দুমাত্র সম্ভাবনা নেই। কিন্তু এই তালিকায় যাদের নাম ছিল তাদের অনেককেই পরে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে দেখা যায় । এর উপর ভিত্তি করে ষড়যন্ত্র তত্ত্বের প্রচারকারীরা দাবী করে ৯/১১ সাজানো নাটক।
পরবর্তীতে বিবিসি ব্যাখ্যা করে- আক্রমণকারীদের নামের তালিকার তাদের ভুল করার কারণ হচ্ছে নামগুলোর সবই ছিল খুবই প্রচলিত ইসলামি এবং আরবি নাম। অনেক মানুষেরই এধরণের নাম আছে। বিবিসি এফবিআইকে (FBI) অনুরোধ করলে তারা জানায়- বিবিসির নামের তালিকায় ভুল ছিল। এফবিআই নিশ্চিতভাবে আক্রমণকারীদের শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে। অন্যান্য তদন্তকারী সংস্থাগুলো তাদের তালিকার ব্যাপারে কোনো আপত্তি তোলেনি। ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’ও জানায় বিবিসি নামের তালিকা প্রকাশ করতে ভুল করেছে।
হামলাকারীদের অধিকাংশ ছিল সৌদি আরবের নাগরিক। সৌদি আরবের ‘আরব নিউজের’ সম্পাদক জন ব্র্যাডলি (John Bradley) বিবিসির এই ভুলের ব্যাপারে নিজের বক্তব্য দিয়েছে। সে জানায়- আক্রমণের পরের কয়েকটি দিন প্রচণ্ড বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সে কারণেই আক্রমণকারীদের নামের তালিকার ভুল হয়েছে। কিন্তু এরপর খুব দ্রুতই প্রকৃত আক্রমণকারীদের শনাক্ত করে তালিকা সংশোধন করে নেওয়া হয়।
ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ৮ – পেন্টাগনে যে বিমান ( ফ্লাইট ৭৭) আঘাত করে তার দৈর্ঘ্য ছিল ১২৫ ফিট, প্রস্থ ১৫৫ ফিট। কিন্তু এই বিমান পেন্টাগনের সামনের দিকে (প্রবেশের সময়) মাত্র ১৬ ফিট চওড়া গর্ত তৈরি করে। এবং দেয়ালের অপর পাশে (বের হবার সময়) ১২ ফিট চওড়া গর্ত করে। এটা কীভাবে সম্ভব?
এই যুক্তি দেখিয়ে অনেকেই দাবী করে পেন্টাগনে আসলে বিমান হামলা হয়নি বরং, স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রিত মিসাইলের মাধ্যমে মার্কিন সেনাবাহিনী পেন্টাগনে, সেনাবাহিনীর অন্য সদস্যদের (তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী) উপর হামলা চালায়। অর্থাৎ আমেরিকা নিজেই এই হামলা চালিয়েছে।
ASCE পেন্টাগন বিল্ডিং পারফর্মেন্স (ASCE Pentagon Building Performance) এর অফিশিয়াল রিপোর্ট থেকে দেখা যাচ্ছে- পেন্টাগনের কংক্রিট দেয়ালের বাহিরের ‘E’ রিং এ ১৬ ফিট নয় বরং ৭৫ ফিট চওড়া গর্তের সৃষ্টি হয়। কিন্তু এই ভুল তথ্যটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
তাহলে ‘ফ্লাইট ৭৭’ বিল্ডিং এ বিমান আকৃতির ১২৫ ফিট গর্ত কেন করল না ? কেন ৭৫ ফিট গর্তের সৃষ্টি হলো?
এর কারণ হচ্ছে বিমানের একটি পাখা পেন্টাগনকে আঘাত করার পূর্বেই মাটিতে আঘাত করেছিল । এবং অন্য পাখাটি রিইনফোরসড কংক্রিটের দেয়ালে গভীর গর্ত তৈরি করার মতো যথেষ্ট ভারী ছিল না। ASCE এর মতে – পেন্টাগনের দেয়ালের ‘C’ রিং এ ১২ ফিট গর্ত তৈরি হয় বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ারের আঘাতে। বিমানের পাখা বা কাঠামোর আঘাতে নয়।
এছাড়া, অসংখ্য লোক পেন্টাগনে আঘাত হানার পূর্বে বিমানটিকে আকাশে চক্কর দিতে দেখেছে। অনেকেই ছবি তুলেছে। অর্থাৎ মিসাইলের মাধ্যমে নয়, বিমানের আঘাতেই পেন্টাগনে ক্ষয়ক্ষতি হয়।
ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ৯ – পেন্টাগনে বিধ্বস্ত বিমানের ধ্বংসাবশেষ কোথায়?
কোথাও বিমান বিধ্বস্ত হলে আশেপাশে প্রচুর ধ্বংসাবশেষ পড়ে থাকে। ‘ফ্লাইট ৭৭’ বেশ বড় বাণিজ্যিক বিমান ছিল। কিন্তু তারপরেও কেন এর ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়নি? ষড়যন্ত্র তত্ত্বের প্রচারকারীদের এটিও বেশ প্রিয় একটি যুক্তি।
পেন্টাগন হামলার প্রত্যক্ষদর্শীরাই এই দাবীর ভ্রান্ততা নিশ্চিত করেছে। অনেক প্রত্যক্ষদর্শীই বিমানের ধ্বংসাবশেষ দেখেছে। তাদের মধ্যে অন্যতম একজন হল অ্যালেন ই কিলশেইমার (Allyn E. Kilsheimer)। ওয়াশিংটনে অবস্থিত KCE স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার্স (KCE Structural Engineers) এর প্রধান নির্বাহী ছিল অ্যালেন ই কিলশেইমার । পেন্টাগন হামলার পরপরই সে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। উদ্ধার কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিধ্বস্ত বিমানের ব্ল্যাক বক্স তার হাত ধরেই উদ্ধার হয়। সে জানাচ্ছে, ‘নিঃসন্দেহে এটা একটা বিমান ছিল। ভবনে বিমানের পাখার আঘাতের চিহ্ন দেখেছি। আমি বিমানের লেজ নিজ হাতে ধ্বংসস্তূপ থেকে তুলেছি। বিমানের ব্ল্যাকবক্সও আমি উদ্ধার করেছি। বিমান ক্রুদের ইউনিফর্মের টুকরা বা লাশের কিছু অংশও আমি নিজ হাতে উদ্ধার করেছি’।
এই স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারের দাবী মিথ্যা ছিল না। পেন্টাগনের ভেতরে এবং বাহিরে ধ্বংসস্তূপের অনেক ছবি তার দাবীর সত্যায়ন করে। এখানে আর একটি বিষয়ও গুরুত্বপূর্ণ। বিধ্বস্ত বিমানের বেশীরভাগ অংশ ভবনের ভেতরে ছিল, বাহিরে নয়। এ কারণেও অনেকের মাঝে এই ভুল ধারণার সৃষ্টি হয়।
ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ১০ – ফ্লাইট ১৭৫ টুইন টাওয়ারে আঘাত হানার পূর্বমুহূর্তের বিভিন্ন ভিডিও এবং ছবি থেকে দেখা গিয়েছে বিমানের ডান পাখার গোঁড়ায়, কাঠামোর নিচে রহস্যময় একটি বস্তু উপস্থিত। বাণিজ্যিক বোয়িং ৭৬৭ মডেলের বিমানে সাধারণত এমন কিছু থাকে না। এ থেকে প্রমাণ হয় এই রহস্যময় বস্তুটি মিসাইল অথবা বোমা। অর্থাৎ আল-কায়েদা নয়, বরং প্রেসিডেন্ট বুশের পৃষ্ঠপোষকতায় আমেরিকা নিজে থেকেই এই হামলা চালিয়েছে।
ফটোগ্রাফার রব হাওয়ার্ড (Rob Howard) এর তোলা ফ্লাইট ১৭৫ এর একটি ছবি নিউ ইয়র্ক ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়। সর্বাধিক প্রচারিত এই ছবিতে অত্যন্ত স্পষ্টভাবে বিমান দেখা যায়। এই ছবিতে বিমানের পাখার নিচের রহস্যময় বস্তুটি দেখা যায়, যেটাকে ষড়যন্ত্র প্রচারকারীরা মিসাইল হিসেবে দাবী করে।
অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির স্পেইস ফটোগ্রাফি ল্যাবরেটোরি (Space Photography Laboratory)- এর পরিচালক রোনাল্ড গ্রিলি (Ronald Greeley) এর নিকট এই ছবি পাঠানো হয়। ছবি বিশ্লেষণ করে, আলো ছায়ার প্রভাবের উপর ভিত্তি করে ছবির সেই বস্তুতে প্রকৃতপক্ষে কি কি উপাদান উপস্থিত বা তার আকার আকৃতি কেমন তা নির্ণয়ের ক্ষেত্রে সে একজন বিশেষজ্ঞ। হাই রেজুলেশনের ছবি বিশ্লেষণ করে এবং Boeing 767-200ER’s মডেলের বিমানের কাঠামোর সাথে তুলনা করে সে ফ্লাইট ১৭৫ বিমানে মিসাইলের উপস্থিতির দাবী বাতিল করে দেয়। প্রকৃতপক্ষে রব হাওয়ার্ড এর ছবিতে ডান পাখার গোঁড়ার দিকের একটি অংশ- যেখানে ল্যান্ডিং গিয়ার থাকে –তা দেখা যাচ্ছিল। সূর্যের আলো বিমানে প্রতিফলিত হবার কারণে সেটাকে মিসাইলের মতো লাগছিল।
ক্যালিফোর্নিয়া ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজির এরোনেটিক্সের প্রফেসর ফ্রেড ই. কালিক ( Fred E. Culick) কে বেসামরিক বিমান ফ্লাইট ১৭৫ এ মিসাইল ফিট করার ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয়। অত্যন্ত জোর দিয়ে সে বলে,‘ এটা একেবারেই অসম্ভব। তারা (ষড়যন্ত্র তত্ত্বের প্রচারকারী) আসলেই খুব বাড়াবাড়ি করছে’।
ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ১১ – বাণিজ্যিক বিমানের জানালা থাকে। দাবী করা হয় টুইন টাওয়ারে হামলাকারী বিমান ছিল বাণিজ্যিক বিমান। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আক্রমণকারী বিমানের কোনো জানালা দেখা যায়নি। অর্থাৎ সামরিক কার্গো বিমান অথবা জ্বালানী ট্যাংকার বিমানের মাধ্যমে টুইন টাওয়ারে আমেরিকা নিজ থেকেই হামলা চালিয়েছে।
এমন দাবী প্রথম করে ফক্স নিউজের কর্মী মার্ক বায়ার্নবাক (Marc Birnbach)। হামলার পরপরই সরাসরি সম্প্রচারিত এক অনুষ্ঠানে সে দাবী করে- এটা কোনোমতেই বাণিজ্যিক বিমান হতে পারে না। আমি বিমানের কোনো পাশেই জানালা দেখিনি।
হামলাকারী বিমানের লো রেজুলেশনের কয়েকটি ছবি এবং ভিডিওতেও জানালা চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। এই বিষয়টিও ষড়যন্ত্র তত্ত্ব প্রচারকারীরা রেফারেন্স হিসেবে উপস্থাপন করে।
প্রকৃতপক্ষে মার্ক ছিল একজন ফ্রি ল্যান্সার ভিডিওগ্রাফার। হামলার সময় সে ফক্স নিউজের হয়ে কাজ করছিল। সে নিজেই পরে স্বীকার করেছে ‘হামলার সময় আমি টুইন টাওয়ার থেকে ২ মাইল দূরে ছিলাম। খুব অল্প সময়ের জন্য বিমান উড়ে যেতে দেখেছি। এবং দক্ষিণ টাওয়ারে বিমান আঘাতের দৃশ্যও আমি দেখিনি। আমি শুধু আওয়াজ শুনেছিলাম’।
হামলার পরপরই ফেডারেল ইমারজেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি ( Federal Emergency Management Agency -FEMA) টুইন টাওয়ারের ধ্বংসস্তূপ পরীক্ষা করতে যায়। স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্ম, কন্সট্রাকশন টেকনোলজি ল্যাবরেটোরিজ, কনসাল্টিং ফার্ম ইত্যাদির বিশেষজ্ঞদের একটি দল ধ্বংসস্তূপের ছবি তুলতে থাকে। তারা ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের একটি বিমানের কাঠামোর কিছু অংশ খুঁজে পায়। সেখানে আরোহীদের জন্য বরাদ্দকৃত জানালা ছিল। বিশেষজ্ঞদের এই দল স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়- বাণিজ্যিক বিমানই আঘাত হেনেছিল দক্ষিণ টাওয়ারে। ABC নিউজের ধারণকৃত হামলার একটি ভিডিওর মাধ্যমে এই বিশেষজ্ঞ দল বিমানের যে অংশ ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করেছিল সেটি যে আসলেই হামলাকারী বিমানের ছিল- তা নিশ্চিত করে।
ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ১২ -এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়ে, নির্ধারিত গতিপথ ত্যাগ করে অন্য পথে কোনো বিমান চলতে শুরু করলে সাধারণত সেই বিমানকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য যুদ্ধ বিমান পাঠানো হয়। কিন্তু ৯/১১ এর ক্ষেত্রে এমন করা হয়নি। অর্থাৎ এটা ছিল আমেরিকার নিজস্ব কাজ।
ষড়যন্ত্রকারীরা দাবী করে- ৯/১১ হামলার জন্য ৪ টি বিমান হাইজ্যাক করা হয়। এই বিমানগুলোর কাছাকাছি মার্কিন বিমান বাহিনীর ২৮ টি বিমান ঘাটি ছিল। সেপ্টেম্বরের ১১ তারিখে ২ স্কোয়াড্রনকে ওয়াশিংটন ডি.সি’র আকাশের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য নিযুক্ত ছিল। কিন্তু তারা কিছুই করেনি। এ থেকে ষড়যন্ত্রকারীরা উপসংহার টানে- বিমান বাহিনীকে সেদিন চুপ থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। অর্থাৎ আমেরিকা নিজেই এই হামলা করেছে।
দাবীর অসারতা: প্রকৃতপক্ষে সেপ্টেম্বরের ১১ তারিখে ১৪ টি বিমান ৪৮ টি প্রদেশের নিরাপত্তার জন্য প্রস্তুত করে রাখা হয়েছিল। নর্থ অ্যামেরিকান এয়ার ডিফেন্স কমান্ড (North American Air Defense Command- NORAD) কোনো কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা বা এলার্ম সিস্টেমের মাধ্যমে নিখোঁজ বিমান সম্পর্কে সতর্ক সংকেত পায়নি। সিভিলিয়ান এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (Civilian Air Traffic Control –ATC) ফোন করে তাদের নিখোঁজ বিমান সম্পর্কে জানায়। কিন্তু এক্ষেত্রে ATC বেশ কয়েকটি ভুল করে।
প্রথমত, ৮ টা ৩৭ মিনিটে তারা জানায় ‘ফ্লাইট ১১’ হাইজ্যাক করা হয়েছে। বিমানের সম্ভাব্য গতিপথ নির্ণয় করতে তারা সময় নেয় এবং ভুল করে। ৯ টা ২১ মিনিটে আবার ফোন করে বলে ‘ফ্লাইট ১১’ ওয়াশিংটন ডিসির দিকে রওয়ানা দিয়েছে। অথচ ফ্লাইট ১১ এর ৩৫ মিনিট আগেই টুইন টাওয়ারের উত্তর টাওয়ারে আঘাত হানে।
৯ টা ৩ মিনিটে নিউইয়র্কের ATC আবার ফোন করে NORAD কে। ‘ফ্লাইট ১৭৫’ হাইজ্যাকের ব্যাপারে রিপোর্ট করে। কিন্তু ততক্ষণে দেরী হয়ে যায়। ঠিক সেই সময়েই দক্ষিণ টাওয়ারে আঘাত হানে ‘ফ্লাইট ১৭৫’। NORAD কে জানানোর সঙ্গে সঙ্গে আকাশে উঠে বেশ কয়েকটি যুদ্ধ বিমান। কিন্তু তাদের আর কিছুই করার ছিল না।
এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন এসে দাঁড়ায়- কেন ATC বা NORAD ছিনতাইকৃত বিমান শনাক্ত করতে এতো সময় নিল বা ব্যর্থ হলো এটা কি ইচ্ছাকৃত? ষড়যন্ত্রের একটি অংশ?
আসলে ছিনতাইকৃত বিমান যখন ট্রান্সপন্ডার বন্ধ করে দেয় তখন ATC গভীর সাগরে পড়ে যায়। খড়ের গাদা থেকে সূচ খুঁজে বের করার অবস্থা হয় তাদের। আমেরিকার ব্যস্ততম এয়ার ট্রাফিক রুট থেকে ৪ হাজার ৫০০ রাডার ব্লিপ ক্রসচেক করে বিমান শনাক্ত করা ছাড়া তাদের হাতে কোনো উপায় থাকে না। অত্যন্ত সময় সাপেক্ষ কাজ এটি। ভুল হবার সম্ভাবনাও প্রচুর।
NORAD এর রাডার অত্যাধুনিক হলেও সেগুলো নিযুক্ত ছিল আমেরিকার বাহিরের সম্ভাব্য হুমকি শনাক্ত করার কাজে। আমেরিকার অভ্যন্তরে নয়। ৯/১১ এর পূর্বে আমেরিকা কখনো চিন্তাও করতে পারেনি তাদের দেশের কোনো বিমান ছিনতাই করে তাদের দেশের অভ্যন্তরেই কেউ হামলা চালাতে পারে। একারণে ৯/১১ এর মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তা কীভাবে সামলাতে হবে সে ব্যাপারে তাদের কোনো ধরণের প্রস্তুতি ছিল না।
ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ১৩ -ছিনতাইকৃত বিমান থেকে যাত্রীরা তাদের আপনজনের নিকট ফোন দেয়।বেটি অং (Betty Ong) নামের একজন বিমানবালা আমেরিকান এয়ারলাইন্সের রিজার্ভেশন ডেস্কে ফোন করে। বিমান যে উচ্চতায় উড়ছিল তাতে সেখানে থেকে ফোন করা সম্ভব নয়। ফোন কলের এ বিষয়টি প্রমাণ করে ৯/১১ আমেরিকা বা ইহুদীদের সাজানো নাটক।
বিমান যে উচ্চতায় উড়ছিল সেখান থেকে আসলে বাজারে প্রচলিত সাধারণ মোবাইল সেট ব্যবহার করে ফোন দেওয়া সম্ভব নয়। ষড়যন্ত্র তত্ত্ব প্রচারকারীদের এই দাবী সঠিক। তবে বিমানের যাত্রী বা বিমানবালা সাধারণ মোবাইল দিয়ে কল করেনি। তারা ফোন করেছিল বিমানে রক্ষিত স্যাটেলাইট মোবাইল দিয়ে। এবং স্যাটেলাইট মোবাইল দিয়ে বিমান যে উচ্চতায় উড়ছিল সে উচ্চতা থেকে ফোন করা সম্ভব।
*********
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সুপার পাওয়ার হিসেবে আবির্ভূত হয় আমেরিকা। আরেক সুপার পাওয়ার সোভিয়েত ইউনিয়ন দীর্ঘ দিন পর্যন্ত আমেরিকার সাথে ক্ষমতার লড়াই চালিয়ে যায়। কিন্তু ৯০ দশকের শুরুর দিকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর বিশ্বে একচ্ছত্রভাবে আধিপত্য কায়েম করে আমেরিকা। এক মেরুকেন্দ্রিক বিশ্বব্যবস্থায় আমেরিকা অত্যন্ত সফলতার সাথে মিডিয়া মেশিনের মাধ্যমে প্রোপাগান্ডা চালায়। হলিউড, সাহিত্য, ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া ইত্যাদির সুচতুর ব্যবহারের মাধ্যমে আমেরিকা নিজেকে উপস্থাপন করে অপরাজেয়, অপ্রতিরোধ্য এক শক্তি হিসেবে। এই পৃথিবীর একক মালিকানা দাবী করে বসে আমেরিকা। এবং যেহেতু সে এই পৃথিবীর মালিক তাই যে কোনোকিছু করার অধিকার তার রয়েছে। সবকিছু করার লাইসেন্স পেয়ে মানবাধিকার, নারী স্বাধীনতা, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে বিশ্বব্যাপী রক্তপাত আর ধ্বংসযজ্ঞে মেতে উঠে আমেরিকা। আমেরিকার মিডিয়া মেশিনে মগজ ধোলাই বিশ্ববাসীর অধিকাংশ ব্যক্তিরাই আমেরিকার এই জুলুমের প্রকৃত বাস্তবতা উপলব্ধি করতে পারে না। যারা পারে তাদের বেশীরভাগই আমেরিকার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে ভয় পায়। আমেরিকার অনিঃশেষ সামরিক শক্তি আর অপরাজেয় ভাবমূর্তি তাদের স্বাভাবিক বুদ্ধি বিবেচনা লোপ করে দেয়। তারা বিশ্বাস করে নেয় কেউ কখনো আমেরিকার গায়ে হাত দিতে পারবে না। মিডিয়া প্রোপাগান্ডায় মগজ ধোলাই এর শিকার, আমেরিকাকে খোদার আসনে বসানো এই মানুষগুলোকে কিছুতেই বোঝানো সম্ভব নয় – আমেরিকাকেও আঘাত হানা যায়, আমেরিকাকেও পরাজিত করা সম্ভব। পূর্বের সব সুপার পাওয়ারের মতো আমেরিকারও এক সময় পতন ঘটবে। অস্ত যাবে মার্কিন সাম্রাজ্যের সূর্য। সব তথ্য প্রমাণ পাবার পরেও তাই তাদের অবিশ্বাসী মন বারবার আশ্রয় নেয় বিভিন্ন ষড়যন্ত্র তত্ত্বে।
৯/১১ এর মাধ্যমে মার্কিন সাম্রাজ্যের পতনের যে সূচনা হয়েছিল, ৯/১১ এর ২০ বছরের মাথায় এসে তা অত্যন্ত দ্রুতগতি লাভ করেছে। ২০ বছর যুদ্ধের পরেও আফগানিস্তানে সুপার পাওয়ার আমেরিকার লজ্জাজনক পরাজয়, আমেরিকার ভঙ্গুর অর্থনৈতিক অবস্থা ইত্যাদি থেকে এটাই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে- আমেরিকার পতন সন্নিকটে।
রেফারেন্স:
[১] শাইখ উসামা বিন লাদেন রহিমাহুল্লাহ , ৯/১১ হামলার পরপর কৌশলগত কারণে সরাসরি হামলার দায় স্বীকার থেকে বিরত থাকেন। যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রুকে ধোঁকা দেবার জন্য, ইসলামি শরীয়তে অনুমোদিত সীমারেখার মধ্য থেকে বিভিন্ন দ্ব্যর্থক বক্তব্য প্রদান করেন। বিভিন্ন বক্তব্যে তালেবানদের অনেকেই এমন দ্ব্যর্থক কথাবার্তা বলেন। মুহাম্মাদ ﷺ এবং বিভিন্ন সাহাবী (রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু) যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রুকে ধোঁকায় ফেলার জন্য দ্ব্যর্থক কথা বলেছেন।
শাইখ উসামার এই তাওরিয়ার (এমন কোন কথা বলা যা থেকে শ্রোতা বাহ্যিক অর্থ বুঝলেও বক্তার উদ্দেশ্য থাকে ভিন্ন এমন আরেকটি অর্থ যে অর্থের প্রতি শব্দের মাঝে ইশারা রয়েছে) উদ্দেশ্য সম্ভবত ছিল মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণায় আমেরিকার আগ্রাসী ও তাদের নিজস্ব নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করার মনোভাবকে স্পষ্ট করে তোলা।
পরবর্তীতে অসংখ্য বক্তব্যে শাইখ উসামা ৯/১১ হামলার দায় স্বীকার করেছেন। বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন আল ফিরদাউস মিডিয়া থেকে প্রকাশিত ‘৯/১১ এর হামলার জন্য কে দায়ী? আল-কায়েদার পক্ষ থেকে ৯/১১ হামলার দায় স্বীকারের দলীল প্রমাণ’- https://tinyurl.com/sep3hwhs
আল- কায়েদার পক্ষ থেকে সরাসরি দায় স্বীকারের দলীল-
https://archive.org/details/LaDeN17
https://archive.org/details/Osama_ToEurope
https://archive.org/details/ayam_imam2
(এই লিংকগুলোতে অবশ্যই টর ব্রাউজার ব্যবহার করে ভিজিট করতে হবে)
[২] World Trade Center Investigation- https://tinyurl.com/vzw6m3w4
[৩] Debunking 9/11 Myths: About the Airplanes – https://tinyurl.com/27fej344
[৪]Debunking the 9/11 Conspiracy Theories: Special Report – The World Trade Center- https://tinyurl.com/y9jcv2ub
[৫]Myths About the 9/11 Pentagon Attack: Debunked- https://tinyurl.com/25e86k9r
[৬] Debunking Myths About United Flight 93- https://tinyurl.com/ypz6jtcm
[৭]The biggest 9/11 conspiracy theories debunked- https://tinyurl.com/ypdru9dc
[৮] NIST Video: Why the Building (WTC7) Fell- https://tinyurl.com/3xd6yxhv
[৯]9/11 conspiracy theories debunked- https://tinyurl.com/4fe8h7ac
[১০] How much did the September 11 terrorist attack cost America?- https://tinyurl.com/br8uemps
[১১]One 9/11 Tally: $3.3 Trillion – https://tinyurl.com/krd974wd
[১২]The cost of 9/11 – in dollars- https://tinyurl.com/mpcjz3ts
[১৩]Paying the Price: Killing the Children of Iraq- https://tinyurl.com/349n3r54
[১৪]Madeleine Albright: “500,000 Dead Iraqi Children Was Worth it” – https://tinyurl.com/y2dja7ew
[১৫]The 4,000 Jews Rumor- Rumor surrounding Sept. 11th proved untrue- https://tinyurl.com/4mrw24r6
[১৬]Were Israelis Detained on Sept. 11 Spies?- https://tinyurl.com/3fjf97u7
[১৭]9/11 conspiracy theory, BBC- https://tinyurl.com/2xmja589
[১৮] Panoply of the Absurd- https://tinyurl.com/2x79fwbw
[১৯] AFTER THE ATTACKS: MISSED CUES; Saudi May Have Been Suspected in Error, Officials Say- https://tinyurl.com/euexv5k2
[২০] September 11 Attacks- https://tinyurl.com/432jrjae
مؤسسة الفردوس
আল ফিরদাউস
Al Firdaws
تـُــقدم
পরিবেশিত
Presents
في اللغة البنغالية
বাংলা ভাষায়
In the Bengali Language
بعنوان:
শিরোনাম:
Titled:
كشف ثلاثة عشر شبهات عن غزوة منهاتن
৯/১১ হামলা নিয়ে প্রচলিত ১৩ টি ষড়যন্ত্র তত্ত্বের খণ্ডন
Rebuttal of 13 conspiracy theories about the 9/11 attacks
لأبي عبيدة
আবু উবাইদা
By Abu Ubaida
للقرائة المباشرة والتحميل
সরাসরি পড়ুন ও ডাউনলোড করুন
For Direct Reading and Downloading
https://justpaste.it/9-11_niye_shorojontrer_khondon
https://archive.vn/O1mEx
https://mediagram.me/001988b395dfc52c
https://archive.ph/BBfi9
https://noteshare.id/JE9F0SW
https://archive.ph/YxNyp
https://web.archive.org/web/20210911172852/https://justpaste.it/9-11_niye_shorojontrer_khondon
https://web.archive.org/web/20210911173208/https://mediagram.me/001988b395dfc52c
https://web.archive.org/web/20210911173109/https://noteshare.id/JE9F0SW
روابط بي دي اب
PDF (1.2 MB]
পিডিএফ ডাউনলোড করুন [১.২ মেগাবাইট]
https://banglafiles.net/index.php/s/yCWBb4aL8ZzqwEW
https://archive.org/download/9-11-inside-job-alfirdaws/9-11%20InsideJobAlfirdaws.pdf
https://file.fm/f/p7wbb4ntm
https://mymegacloud.com/download/dXBsb2Fkcy9hcGtjZWxsLzktMTEtSW5zaWRlSm9iQWxmaXJkYXdzLnBkZg==/h/0e0cc8ec1b7f4af027f4c2369eaffc92
https://bayfiles.com/B6NdVdG8ua/9-11_InsideJobAlfirdaws_pdf
https://krakenfiles.com/view/uXuLDeO8qA/file.html
https://mega.nz/file/wtJ2TDQY#wIZtN-2tMLR57ACg8CHgL0C8wQtQFAgFqDQY_QMnmZY
https://www.solidfiles.com/v/vNAnPrxX8jAKY
https://top4top.io/downloadf-2080psttb2-pdf.html
https://www.fireload.com/e4ba9a4b41caabde/9-11_InsideJobAlfirdaws.pdf
https://anonfiles.com/D1XeVdG7u6/9-11_InsideJobAlfirdaws_pdf
https://download.ru/previews/b1/61/b3d2c19ff1d4e9cd674c46edb9cdd5adcc50/7AdKMF43/9-11%20InsideJobAlfirdaws.medium.png?e=1631628208&s=XQmQTZMLg6Mk6PwwFqwWPA
روابط ورد
Word [1 MB]
ওয়ার্ড [১ মেগাবাইট]
https://banglafiles.net/index.php/s/cBbSK6dYWDxkmDs
https://archive.org/download/9-11-inside-job-alfirdaws/9-11%20InsideJobAlfirdaws.docx
https://file.fm/f/hswnshx4x
https://mymegacloud.com/download/dXBsb2Fkcy9hcGtjZWxsLzktMTEtSW5zaWRlSm9iQWxmaXJkYXdzLmRvY3g=/h/0fcfb98d37adf5b88ae8ebfbc3f30418
https://bayfiles.com/7cN3VcG7ua/9-11_InsideJobAlfirdaws_docx
https://krakenfiles.com/view/9fp8RRR99n/file.html
https://mega.nz/file/8oZFHSpZ#bUwnAP_PMgRUZIu2ssf7SgPjxhChdh1HI2QeZ8Y-Zk0
https://www.solidfiles.com/v/Rxz7ak3M5rr6P
https://top4top.io/downloadf-2080x2z0f1-docx.html
https://www.fireload.com/db83f667ef9e0305/9-11_InsideJobAlfirdaws.docx
https://anonfiles.com/F3X8V3Gaua/9-11_InsideJobAlfirdaws_docx
https://download.ru/previews/90/82/94e51dbd55eacc6c99d76af5df78527a1e4e/b7G5jKCE/9-11%20InsideJobAlfirdaws.medium.png?e=1631628208&s=248CJdxjUoPYWnbefQCUhw
روابط الغلاف- ١
book Banner [1 MB]
বুক ব্যানার ডাউনলোড করুন [১ মেগাবাইট]
https://banglafiles.net/index.php/s/EroiAeHfeNP9JJE
https://archive.org/download/9-11-inside-job-alfirdaws/9-11%20InsideJobAlfirdawsProssod.jpg
https://file.fm/f/b469w4sh3
https://mymegacloud.com/download/dXBsb2Fkcy9hcGtjZWxsLzktMTEtSW5zaWRlSm9iQWxmaXJkYXdzUHJvc3NvZC5qcGc=/h/6811072be5b992e305f5db4c7f32aa7e
https://bayfiles.com/90N6VcGaud/9-11_InsideJobAlfirdawsProssod_jpg
https://krakenfiles.com/view/V2TMdltG06/file.html
https://mega.nz/file/htYSCR6I#pp7fOJGwgCYuZLkNIPnIuUyC2anxgN7z6lqur_OfOUk
https://www.solidfiles.com/v/Rxz7a2aMM842K
https://i.top4top.io/p_20809p74i4.jpg
https://www.fireload.com/ac535acf9bd0bb41/9-11_InsideJobAlfirdawsProssod.jpg
https://anonfiles.com/JeX7VaG9u7/9-11_InsideJobAlfirdawsProssod_jpg
https://download.ru/previews/e6/0a/13ba085873ebea6e58a32f616c11c1c34a78/d9uSpgmM/9-11%20InsideJobAlfirdawsProssod.medium.jpg?e=1631628208&s=7u0zPgAyXO53GI-GClLbog
روابط الغلاف- ٢
Banner [754 KB]
ব্যানার ডাউনলোড করুন [৭৫৪ কিলোবাইট]
https://banglafiles.net/index.php/s/txjqGEb3wGG8Zet
https://archive.org/download/9-11-inside-job-alfirdaws/9-11%20InsideJobAlfirdawsBanner.jpg
https://file.fm/f/k7qmykvw6
https://mymegacloud.com/download/dXBsb2Fkcy9hcGtjZWxsLzktMTEtSW5zaWRlSm9iQWxmaXJkYXdzQmFubmVyLmpwZw==/h/b30af80959f93fa4a0b4c86d53af1fc6
https://bayfiles.com/59N6VfGau4/9-11_InsideJobAlfirdawsBanner_jpg
https://krakenfiles.com/view/WDV5MmHmhl/file.html
https://mega.nz/file/skZgDBKI#rWOIxvDvQMROGU0EN7wrcaqU9gtVUHlfrCKnwuCQ8d8
https://www.solidfiles.com/v/W8xRMBdqKajGn
https://h.top4top.io/p_2080uuu2n3.jpg
https://www.fireload.com/396599184911a12e/9-11_InsideJobAlfirdawsBanner.jpg
https://anonfiles.com/B5X6VfG0u9/9-11_InsideJobAlfirdawsBanner_jpg
https://download.ru/previews/52/e4/dd8589a51eddb7dcef4f10bbe680049c5372/8niO3yFX/9-11%20InsideJobAlfirdawsBanner.medium.jpg?e=1631628208&s=EIGko4fihf4dMZCTz_XGHQ
************
مع تحيّات إخوانكم
في مؤسسة الفردوس للإنتاج الإعلامي
আপনাদের দোয়ায় মুজাহিদ ভাইদের স্মরণ রাখবেন!
আল ফিরদাউস মিডিয়া ফাউন্ডেশন
In your dua remember your brothers of
Al Firdaws Media Foundation
পুরোটা পড়লাম আলহামদুলিল্লাহ
জাযাকুমুল্লাহ….. আল্লাহ, ভাইকে উত্তম প্রতিদান দিন…..আরো বেশি বেশি উম্মাহর খেদমত করার তাওফীক দান করুন…..জান্নাতকে আমাদের সবার শেষ আবাসস্থল বানান….আমাদেরকে হেদায়াতের পথে অটল অবিচল রাখুন…আমীন….