অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান পৃষ্ঠপোষক কথিত জাতিসংঘের সাথে তাল মিলিয়ে সারা বিশ্ব যখন বিশ্ব শিশু দিবস পালনে ব্যস্ত, তখন ফিলিস্তিনে মুসলিম শিশুরা ইসরাইলি কারাগারে ধুঁকে ধুঁকে মরছে।
মুখে “বাবা” বুলি ফুঁটার আগেই অনেক অবুঝ শিশু “বাবা-মা” উভয়ই হারিয়ে আবর্জনার ভাগাড়ে শিয়াল-কুকুরের সাথে খাবার দখলের যুদ্ধে লড়ছে।
বিশ্ব শিশু দিবস উপলক্ষে ফিলিস্তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্যালেস্টাইনিয়ান প্রিজনার্স সোসাইটি পৃথক বার্তায় জানিয়েছে, চলতি বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ১৫ জন ফিলিস্তিনি শিশুকে হত্যা করেছে সন্ত্রাসী ইসরাইলের সেনাবাহিনী। বেশিরভাগ শিশুই স্নাইপারের গুলিতে নিহত হয়েছেন। আর বোমা হামলা বা অন্য উপায়ে হত্যা তো আছেই।
নিহত শিশুদের মধ্যে সবচেয়ে অল্প বয়স্ক শিশু মুহাম্মদ জেইন আল-দিন। মাত্র ৮ মাস বয়সেই ইহুদি সন্ত্রাসবাদের স্বীকার হতে হলো তাকে।
অপরদিকে, ১১৫০ ফিলিস্তিনি শিশুকে বন্দী করেছে জায়নবাদী ইসরাইল। শনিবার (২০ নভেম্বর) বিশ্ব শিশু দিবসে এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে ফিলিস্তিনের মানবাধিকার গ্রুপ।
প্যালেস্টাইনিয়ান প্রিজনার্স সোসাইটি সূত্রে জানা যায়, এক বছরেরও কম সময়ে কমপক্ষে ১১৪৯ ফিলিস্তিনি শিশু ইসরাইলের হাতে বন্দি হয়েছে। তাদের মধ্যে এখনও ১৬০ শিশু দখলদার কারাগারে বন্দি।
কারাবন্দী সংঘ আরো জানায়, গত সেপ্টেম্বর, ২০০০ সালে দ্বিতীয় ইন্তিফাদার (ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন) পর থেকে ১৮ অনূর্ধ্ব প্রায় ১৯ হাজার ফিলিস্তিন শিশুকে সন্ত্রাসী ইসরাইল অপহরণ করেছে, যাদের মধ্যে ১০ বছরের কম বয়সী শত শত শিশুও রয়েছে।
মানবাধিকার সংস্থাটির বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, গ্রেফতার শিশুদের দুই-তৃতীয়াংশই শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। বন্দি সব শিশু কারাগারে থেকে মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। শিশুদের অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসার মতো প্রধান মৌলিক অধিকারের কোন বেবস্থা না করেই তাদেরকে বছরের পর বছর কারা প্রকোষ্ঠে নিক্ষেপ করা হয়।
কতিপয় আরব মুসলিম রাষ্ট্রের গাদ্দারি ও পশ্চিমা ক্রোসেডার দেশসমূহের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ মদদের ফলেই অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইল ফিলিস্তিনে বর্বরতা ও দখলদারিত্ব চালিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
আর পশ্চিমা দুনিয়া যেখানে নারী ও শিশুদের কথিত মানবাধিকারের নাম করে মুসলিম দেশ সমুহে অবরোধ ও আগ্রাসন চালায়, সেখানে ইসরাইল রুটিনমাফিক নারী ও শিশুদের নির্যাতন ও হত্যা করলেও সন্ত্রাসী ইসরাইলের বিরুদ্ধে একটি বিবৃতিও দেয় না তারা। উল্টো তারা ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধেই পদক্ষেপ নেয়ার হুমকি দেয়।
গত শনিবার এমনি এক অবাক করা হুমকি দিল ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল। গত শনিবার (২০ নভেম্বর) এক সাংবাদিক সম্মেলনে সে জানায়, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসকে খুব শিগগিরই নিষিদ্ধ করবে ব্রিটেন। এর আগে পার্লামেন্টে এ বিষয়ক একটি প্রস্তাব উত্থাপন হয়েছে বলে জানায় সে।
সে আরও জানায়, সন্ত্রাসবাদ নীতিমালায় সংস্কার আনার প্রস্তাব দদেওয়া হয়েছে পার্লামেন্টে। কারণ রাজনীতির আড়ালে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে হামাস। এমনকি অত্যাধুনিক অস্ত্র প্রশিক্ষণেও এগিয়ে সংগঠনটি। তাই একে সন্ত্রাসী কালো তালিকাভুক্ত করতে চায় ব্রিটেন।
এই হচ্ছে তাদের কথিত মানবিধাকের আসল রূপ, পশ্চিমা মানবাধিকারের ডাবল স্ট্যান্ডার্ড।
ব্রিটিশ এই মন্ত্রী উল্লেখ করে, এটি ইহুদিদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে। কেননা হামাস বরাবরই ইহুদিবিদ্বেষী। দলটির জন্য স্কুল, রাস্তায়, উপাসনালয়ে এমনকি বাড়িতে ইহুদিরা আতঙ্কে থাকবেন, সেটা সহ্য করা হবে না।
অবৈধ দখলদার ইহুদিরা আতঙ্কিত হোক এটুকুও তাদের সহ্য হয় না। বিপরীতে ফিলিস্তিনিদের হত্যা করা হলেও তাদের কিছুই আসে যায় না৷ এ অবস্থায় মাজলুম ফিলিস্তিনিদের মানবাধিকার ও স্বাধীনতার জন্য পশ্চিমদের দিকে বা তাদের পুতুল কথিত জাতিসংঘের দিকে তাকিয়ে থাকা যে মিথ্যা মরিচীকা ছাড়া কিছুই নয়, সেটা উম্মাহ এখন ভালো করেই বুঝতে পেরেছে।
এ অবস্থায় ফিলিস্তিন ও আল-আকসা মসজিদ উদ্ধারে বরাবরই নববী মানহাজের অনুসরণের আহ্বান জানিয়ে আসছেন হকপন্থী আলিমরা।
তথ্যসূত্র :
======
১। On World Children’s Day… 1149 Palestinian children, arrested this year-
https://tinyurl.com/ytv8d4v7
১। ফিলিস্তিনি শিশু হত্যার পরিসংখ্যান-
https://tinyurl.com/2v3hc86f
আমি কি এখান থেকে লেখা নিয়া গৌপনিয়তা রক্ষা করে অন্য জায়গায় ছাড়তে পারি
মৌলিক পরিবর্তন ব্যতীত প্রচার করুন ইনশাআল্লাহ।