৮ দিনে ৭ হামলাঃ মুজাহিদদের অগ্রযাত্রায় বিপর্যস্ত বুরকিনান সেনাবাহিনী

আলী হাসনাত

2
1057

চলতি অক্টোবর মাসের শুরু থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত পশ্চীম আফ্রিকার দেশ বুরকিনা ফাসোতে ৭টি অসাধারণ হামলা পরিচালনা করেছেন আল কায়েদা সংশ্লিষ্ট জামা’আত নুসরাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন (জেএনআইএম) এর বীর মুজাহিদগণ। এর মধ্যে ৫টির তথ্য অফিসিয়ালি প্রকাশ করেছে আল-কায়েদা।

পশ্চিম আফ্রিকার মধ্যে মালির পরেই বুরকিনা ফাসোতে সবচাইতে শক্তিশালী অবস্থান রয়েছেন জেএনআইএম এর ইসলামি প্রতিরোধ যোদ্ধারা। দেশটিতে প্রতি মাসেই ঘোষিত ও অঘোষিত ভাবে কয়েক ডজন হামলা চালাচ্ছেন মুজাহিদগণ। বর্তমানে দেশটির প্রায় ৪০ শতাংশেরও বেশি এলাকা গোলাম সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে গেছে। বাকি অংশগুলোতেও চলছে তীব্র লড়াই।

এই লড়াইয়ের ধারাবাহিকতায়, বুরকিনা ফাসোর পূর্বাঞ্চলীয় বুর্গ-বারগৌ এলাকায় দেশটির গাদ্দার সামরিক বাহিনীর একটি সেনা কাফেলার উপর একটি অতর্কিত হামলা পরিচালনা করেন মুজাহিদগণ। এতে গাদ্দার বাহিনীর অন্তত ৭ সৈন্য নিহত হয় এবং ৭ এর অধিক সৈন্য আহত হয়। নিখোঁজ রয়েছে আরও এক ডজনেরও বেশি গাদ্দার সৈন্য। স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্র ধারণা করছে, নিখোঁজ সেনাদের বন্দী করে নিয়ে গেছে জেএনআইএম যোদ্ধারা।

আয-যাল্লাকা মিডিয়ার তথ্য মতে, এই অভিযান থেকে মুজাহিদগণ ২টি গাড়ি ও ১০টি মোটর সাইকেলসহ প্রচুর সংখ্যক অস্ত্র গনিমত পেয়েছেন। উক্ত অভিযানে একজন মুজাহিদ সামান্য আহত হয়েছেন বলেও জানা গেছে।

অপর একটি বরকময় অপারেশন চালানো হয় বুরকিনা ফাসোর পাটিচাগা গ্রামে। এখানেও বুরকিনান সেনাদের একটি সামরিক কনভয়ে অতর্কিত হামলা চালান মুজাহিদগণ। এতে ৫ সেনা ঘটনাস্থলেই নিহত হয় এবং বাকিরা আহত অবস্থায় পালিয়ে যায়। এই অভিযান থেকেও মুজাহিদগণ ২টি গাড়ি, ৫টি মোটর সাইকেল, ৫টি ক্লাশিনকোভসহ বিভিন্ন ক্যালিবারের আরও ৪টি অস্ত্র গনিমত লাভ করেন। এই অভিযানে ২ জন মুজাহিদও আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

এছাড়া, বুরকিনা ফাসোর বিএলএ এলাকাতে দেশটির অত্যাচারী সেনাবাহিনীর একটি চেক পয়েন্টে আক্রমণ চালিয়েছেন মুজাহিদগণ। হামলার তীব্রতায় গাদ্দার বাহিনীর বেশ কিছু সৈন্য হতাহত হয়। ফলে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে যায়। উক্ত অভিযান শেষে জেএনআইএম মুজাহিদগণ একটি গাড়ি ও বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল সহ অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম গনিমত লাভ করেন।

এর আগে গত ২৬ সেপ্টেম্বর, বুরকিনা ফাসোতে মুজাহিদদের সবচেয়ে দুঃসাহসি ও সফল অভিযানটি পরিচালিত হয় জিবোর নামক অঞ্চলে। গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায় যে, ঐ আক্রমণের পর পরই দেশটিতে সামরিক অভ্যূত্থান ঘটেছে।

বরকতময় ঐ অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন আল-কায়েদার ১৮০ জন বীর মুজাহিদ। গাদ্দার বাহিনীর ১১৯টি সাঁজোয়া যান ও গাড়ি সমন্বিত একটি বিশাল কনভয়ে হামলা চালিয়ে ৯০টি গাড়ি, ট্রাক ও সাঁজোয়া যান ধ্বংস করে দিয়েছেন মুজাহিদগণ।

পরবর্তিতে প্রকাশিত ৩ মিনিটের একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, উক্ত অভিজানের পর আল-কায়েদা যোদ্ধারা সেখান থেকে বেশ কিছু তেলবাহী যান, পণ্য সরবরাহকারী গাড়ি এবং সামরিক সরঞ্জামে ভর্তি কয়েকটি ট্রাক সরিয়ে নিচ্ছে। স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রগুলো বলছে, আল-কায়েদা যোদ্ধারা কনভয়ের বাকি ২৯টি যান নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছেন। সেগুলো তেল, খাদ্য সামগ্রী ও সামরিক সরঞ্জামে পরিপূর্ণ ছিলো, যা দিয়ে নির্বিঘ্নে কয়েক মাস যুদ্ধ পরিচালনা করা সম্ভব হবে।

এর একটি ইঙ্গিত পাওয়া যায় আল-কায়েদার দেওয়া এক বিবৃতি থেকে। যেখানে গাদ্দার সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে, আপনি (নতুন সরকার) যদি যুদ্ধ চান তবে আমরা এর জন্য পরিপূর্ণ প্রস্তুত, আর তা আপনার ধারণার চাইতেও বেশি।

2 মন্তব্যসমূহ

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধফায়ারিং স্কোয়াডে ৬ মার্কিন গুপ্তচরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করলো আশ-শাবাব
পরবর্তী নিবন্ধবর্বর হিন্দুত্ববাদী নরবলির শিকার দুই নারী, কেটে করা হয় টুকরো টুকরো