শাবাবের দুঃসাহসী মহাস অভিযান: সেনা ও অফিসারসহ হতাহত ২১৭

ত্বহা আলী আদনান

0
981

পূর্ব আফ্রিকার দেশ সোমালিয়ায় যুগের হুবাল আমেরিকার মিত্রদের বিরুদ্ধে দুঃসাহসী অভিযান পরিচালনা করে আসছেন আল-কায়দা সংশ্লিষ্ট ইসলামি প্রতিরোধ যোদ্ধারা। এসব অভিযানে হতাহত হচ্ছে অসংখ্য কুফ্ফার সৈন্য। আজ ৪ঠা জানুয়ারি বুধবারেও দেশটির মহাস শহরে অনুরূপ একটি দুর্দান্ত সফল অভিযান পরিচালনা করেছেন মুজাহিদগণ। এতে আল্লাহর অনুগ্রহে শত্রুবাহিনীর দুই শতাধিক সৈন্য হতাহত এবং ২৬টি সাঁজোয়া যান ধ্বংস হয়েছে।

আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট ইসলামি প্রতিরোধ বাহিনী হারাকাতুশ শাবাব সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে যে, বুধবার সকালে কেন্দ্রীয় হিরান রাজ্যের মহাস জেলায় ঘটে যাওয়া হামলায় ইসলামবিরোধী শক্তির কমপক্ষে ৮৭ সদস্য নিহত এবং ১৩০ এর বেশি সদস্য আহত হয়েছে। হতাহতদের মধ্যে সামরিক অফিসার এবং মিলিশিয়ারাও রয়েছে। হতাহত শত্রুরা ইসলামি শরিয়াহ্’র বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য শহরটিতে সংগঠিত হয়েছিল। শাবাবের মতে, এই হামলাগুলো শত্রুদের জন্য একটি স্পষ্ট বার্তা। সেই বার্তা হলো, ইসলামবিরোধী শিবিরে যোগদানকারীরা যতই সুসংগঠিত হোক এবং মজবুত ঘাঁটিতে লুকিয়ে থাকুক না কেন, ইসলামি প্রতিরোধ যোদ্ধারা সেখানেই তাদেরকে লক্ষ্যবস্তু করতে সক্ষম।

আশ-শাবাব জানিয়েছে যে, “আল্লাহ রব্বুল আলামিনের নির্দেশে শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ এবং ইসলাম ধর্মকে রক্ষা করার জন্য, শাবাব প্রশাসনের বীর মুজাহিদ বাহিনী সকালে হিরান প্রদেশের মহাস শহরে উক্ত পরিকল্পিত অভিযানটি চালিয়েছেন। শত্রু বাহিনীর ২টি প্রধান সামরিক ঘাঁটিতে একযোগে চালানো হয়েছে। এসব ঘাঁটিতে সুসংগঠিত হচ্ছিল ইসলামি শরিয়াহ্ বিরোধী পশ্চিমা সমর্থিত সোমালি সামরিক বাহিনী ও গেরিলা মিলিশিয়ারা।

সূত্র মতে, ঘাঁটি ২টিতে হামলার পূর্বে বেশ কিছুদিন ধরেই আশ-শাবাবের গোয়েন্দা টিম ঘাঁটির গতিবিধির উপর নজরদারি এবং পর্যবেক্ষণ করছিলেন। অতঃপর মুজাহিদগণ নিশ্চিত হন যে, এই ঘাঁটিগুলো হিরানে শত্রুদের সবচাইতে গুরত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটি। যেখানে সবচাইতে বেশি শত্রু জড়ো হয় এবং অস্ত্র ও সাঁজোয়া যান মজুদ করে। এরপর এখান থেকে শক্তি সঞ্চয় করে হিরান রাজ্যে ইসলামি শরিয়াহ্ দ্বারা শাসিত অঞ্চলে হামলা চালানো হচ্ছে।

এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়ার পরই হারাকাতুশ শাবাব অপারেটিভগণ তাদের কাঙ্খিত লক্ষ্যবস্তু খোঁজে পান। আর সকালে সেই কাঙ্খিত লক্ষ্যে দুটি ইস্তেশহাদী হামলার মাধ্যমে অপারেশন শুরু করেন মুজাহিদগণ। আশ-শাবাবের এই অপারেশন ও শক্তিশালী ইস্তেশহাদী বিস্ফোরণে ঘাঁটিতে অবস্থিত মিলিশিয়াদের কমপক্ষে ১৩টি সামরিক যান, অসংখ্য অস্ত্র ও গোলাবারুদ ধ্বংস হয়। আর পুড়ে যায় ১৩টি গাড়ি, যার বেশিরভাগই বন্দুকসহ প্রযুক্তিগত যান হিসাবে পরিচিত ছিল। সেই সাথে এই অভিযানে শত্রুদের প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতির হিসাব অনুযায়ী, সামরিক বাহিনীর অন্তত ৮৭ সৈন্য নিহত এবং আরও ১৩০ এর বেশি সৈন্য আহত হয়েছে, যার মধ্যে উচ্চপদস্থ অনেক অফিসার ও কমান্ডাররা রয়েছে।

অন্যদিকে, হারাকাতুশ শাবাব মুজাহিদিন এদিন মাখাস জেলার উপকণ্ঠে দুদুন-আদ গ্রামে অবস্থিত একটি মিলিশিয়া ঘাঁটিতেও হামলা চালান। যেখানে একটি সংক্ষিপ্ত যুদ্ধের পর গ্রামটির নিয়ন্ত্রণ নেন হারাকাতুশ শাবাব আল-মুজাহিদিন। এই অভিযানেও শত্রুদের অনেক হতাহত এবং সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি হয়।
আশ-শাবাব বলেছেন যে, শত্রুদের আশ্রয়স্থল হিসাবে ব্যবহৃত হয় এমন প্রতিটি জায়গাকে লক্ষ্যবস্তু করবেন মুজাহিদগণ এবং শত্রুদের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালিয়ে যাবেন।

শাবাব প্রতিরোধ যোদ্ধারা আরও বলছেন যে, মহাস এবং আশেপাশের এলাকাগুলোর সাম্প্রতিক কার্যকলাপ এটিই প্রমাণ করে যে, শত্রুদের জন্য এমন কোনো স্থান বা এলাকা নেই, যেখানে তারা মুজাহিদদের থেকে লুকিয়ে থাকতে পারে। আর আমাদের এই যুদ্ধ ততদিন পর্যন্ত চলতে থাকবে, যতদিন না মুসলিম উম্মাহর নিরাপত্তা, ইসলামী শরীয়া বাস্তবায়ন এবং সমস্ত মুসলিম ভূমিকে কাফের ও মুরতাদদের হাত থেকে মুক্ত করা হয়।

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধ“বর্তমান ভারতে মুসলিম হওয়াটাই অপরাধ”: NIA অভিযানের স্মৃতিকথা
পরবর্তী নিবন্ধটিটিপির হামলায় রক্তাক্ত বছর গেল নাপাক বাহিনীর, ১০১৫ সৈন্য হতাহত