মালি | মাসব্যাপী আল-কায়েদা অভিযানে ১৮৪ আইএস সন্ত্রাসী নিহত

0
980

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে কুফ্ফার বাহিনী ও তাদের মিত্র মালিয়ান সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রায় এক যুগ ধরে পবিত্র জিহাদ চালিয়ে আসছেন আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট ইসলামি প্রতিরোধ যোদ্ধারা। দীর্ঘ এই যুদ্ধে মুজাহিদদের হাতে নাস্তানাবুদ হয়ে পড়েছে কুফ্ফার বাহিনী ও তাদের মিত্ররা। অপরদিকে মুজাহিদগণ মালির সিংহভাগ অঞ্চলের উপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ ও প্রভাব বিস্তার করেছেন।

কিন্তু মুজাহিদদের এই বিজয় ও অগ্রযাত্রা রুখতে কাফেরদের সহযোগীর ভূমিকায় মাঠে নেমেছে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএস। অভিযোগ রয়েছে যে, ক্রুসেডার ফ্রান্স নাইজার থেকে আইএস সন্ত্রাসীদেরকে বিভিন্নভাবে মুজাহিদদের বিরুদ্ধে সহায়তা করছে। ফলে এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সদস্যরা বারবার পিছন থেকে মুজাহিদদের আঘাত করার চেষ্টা করছে। এমনকি মুজাহিদদের নিয়ন্ত্রিত ভূমি দখল করে কাফেরদের হাতে ছেড়ে দিচ্ছে তারা। সেই সাথে নিরপরাধ লোকদের হত্যা ও তাদের গবাদিপশু লুট করার মত ঘৃণ্য সব অপরাধও করছে।

আইএস সন্ত্রাসীদের এমন সব জঘন্য ও নিকৃষ্টতম কর্মকাণ্ডের ফলে মুজাহিদগণ বাধ্য হয়ে এই সন্ত্রাসীদের নিষ্ক্রিয় করতে অভিযান শুরু করেছেন। সেই সূত্র ধরেই আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট ইসলামি প্রতিরোধ বাহিনী জামা’আত নুসরাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন (জেএনআইএম) এর বীর যোদ্ধারা গত নভেম্বর থেকে আইএস সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করেছেন। মুজাহিদদের এসব অভিযানে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএসের নেতৃস্থানীয় ৩ নেতা ও ২ ডজন কমান্ডার সহ অন্তত সাত শতাধিক সদস্য নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে আরও শতশত সন্ত্রাসী।

এর মধ্যে শুধু গত ডিসেম্বরে মালিতেই মুজাহিদদের পরিচালিত ৮টি হামলায় সন্ত্রাসী আইএস গোষ্ঠীর কমপক্ষে ১৮৪ সদস্য নিহত হয়েছে।
এরমধ্যে প্রথম হামলাটি চালানো হয় ২ ডিসেম্বর। মালির আকরাকবু এবং তানচোরি এলাকার মধ্যবর্তি স্থানে পরিচালিত এই অভিযানে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটির ৩ সদস্য নিহত হয়।

এরপর ৪ ডিসেম্বর নাক্ক ও ইন-এলেবাজ এলাকায় একটি অভিযান চালানো হয়। এতে অন্তত ৮০ আইএস সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে।
গত মাসের তৃতীয় হামলাটি চালানো হয় ৫ ডিসেম্বর। এতে টাইগারিসেন এলাকায় অন্তত ৮ সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে।
গত ৭ ডিসেম্বর তাদজালাত এলাকায় চালানো হয় আরেকটি বড় সফল অভিযান। এতে আরও ৭৩ আইএস সদস্য নিহত হয়। এর পর দিনই ইন-টেকউফ এলাকায় মুজাহিদদের অভিযানে আরও ৮ সন্ত্রাসী নিহত হয়।

ডিসেম্বরের ষষ্ঠ হামলাটি চালানো হয় ১৬ তারিখ ইনেকার এলাকায়। এতে অন্তত ৫ খারেজী নিহত হয়।
পরবর্তি হামলাটি চালানো হয় গত ১৯ ডিসেম্বর আওঘাট এলাকায়। এতে অন্তত ৪ সন্ত্রাসী নিহত হয়।
আর গত বছরের শেষ হামলাটি চালানো হয় ২৩ ডিসেম্বর আন্তাকোর্ট এলাকায়। এই হামলায় আরও ৩ আইএস সন্ত্রাসী নিহত হয়। বিপরীতে এই অভিযানের সময় ‘জেএনআইএম’ এর ৫ জন মুজাহিদও শাহাদাত বরণ করেন ইনশাআল্লাহ।

স্থানীয় সূত্রমতে, আল-কায়েদার অফিসিয়াল এই অভিযানগুলি ছাড়াও গত মাসে মালির গাও এবং মোপ্তি রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় আরও ডজনখানেক অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। মুজাহিদগণ তাদের এসব অভিযানের মাধ্যমে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএস সদস্যদের নাইজার সীমান্তবর্তী মালির মোপ্তি রাজ্যের অনেক এলাকা থেকে পালাতে বাধ্য করেছেন।

একই সাথে গত ডিসেম্বরে প্রতিবেশি বুরকিনা ফাসো সীমান্ত থেকেও আইএস সন্ত্রাসীদের হটিয়ে সাফ করেছেন মুজাহিদগণ। বুরকিনা ফাসোতেও মুজাহিদদের হামলায় শত শত আইএস সদস্য নিহত এবং আহত হয়েছে।

মালি এবং বুরকিনা ফাসোতে আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট ‘জেএনআইএম’ মুজাহিদগণ তাদের বীরত্বপূর্ণ এসব অভিযানের মাধ্যমে অনেক এলাকা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটি থেকে মুক্ত করার পাশাপাশি কয়েক ডজন গাড়ি ও মোটরসাইকেল এবং অসংখ্য অস্ত্র গনিমত পেয়েছেন। সেই সাথে আইএস সন্ত্রাসীদের দ্বারা বেসামরিক নাগরিকদের থেকে ছিনিয়ে নেওয়া গবাদিপশু উদ্ধার করেছেন, যেগুলো মুজাহিদগণ পরে মালিকদের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন।

আলহামদুলিল্লাহ, মুজাহিদগণ এভাবেই ইসলাম বিরোধী কুফরি শক্তির পাশাপাশি সন্ত্রাসী ও খারেজি গোষ্ঠী আইএস এর ফেতনা থেকেও পশ্চিম আফ্রিকাকে মুক্ত এবং নিরাপদ রাখতে লড়াই করে যাচ্ছেন। আল্লাহ তাআ’লা কুফ্ফার ও সন্ত্রাসীদের উপর মুজাহিদদের প্রতিটি ময়দানে বিজয় দান করুন, আমিন।

লেখক: ত্বহা আলী আদনান

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধআল-ফিরদাউস সংবাদ সমগ্র || ডিসেম্বর, ২০২২ঈসায়ী ||
পরবর্তী নিবন্ধজাতীয় স্বনির্ভরতা প্রোগ্রাম চালু করবে ইসলামি ইমারত