কাতারের মধ্যস্থতায় ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা চার দিনের বেশি সময়ের যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। গত ২২ নভেম্বর বুধবার যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব অনুমোদনের এ খবর জানিয়েছে কাতার ভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা।
আল-জাজিরা জানিয়েছে, ইসরায়েলের মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত প্রস্তাব অনুযায়ী, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস তাদের হাতে বন্দী থাকা ২৩৭ জনের মধ্যে ৫০ জনের মতো জিম্মিকে মুক্তি দেবে। বিনিময়ে ইসরায়েল অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় হামলা আপাতত বন্ধ করবে ও ১৫০ জন বন্দী ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিবে।
এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করে হামাস জানিয়েছে, ৫০ জন বন্দীকে মুক্তি দেয়া হবে। বিনিময়ে ১৫০ জন ফিলিস্তিনিকে কারাগার থেকে মুক্তি দিবে ইসরায়েল।
জানা গেছে, আগামী চার দিনের মধ্যে ৫০ জিম্মিকে মুক্তি দিবে হামাস। দৈনিক এক ডজন করে জিম্মি মুক্তি দেয়া হবে। চুক্তি অনুযায়ী, জিম্মিদের কয়েক ধাপে মুক্তি দেওয়া হবে। প্রতি ১০ জন জিম্মির বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ৩০ জিম্মির মুক্তির শর্তারোপ করা হয়েছে। এ ছাড়া চুক্তিতে স্থলভাগে চার থেকে পাঁচ দিনের সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়। ইসরায়েল বলেছে, প্রতি ১০ জন বন্দী মুক্তির বিনিময়ে অতিরিক্ত ১ দিন করে যুদ্ধ বিরতিতে ইসরায়েল ইচ্ছুক। তবে হামাস এ ব্যাপারে কোন কিছু জানায়নি।
চুক্তি অনুযায়ী গাজায় খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তার পাশাপাশি ১০০ থেকে ৩০০ ট্রাক প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে। কাতার জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যুদ্ধ বিরতি কার্যকরের সময় ঘোষণা করা হবে।
এদিকে, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে রাজি হলেও, সেটি কতটুকু মেনে চলবে- তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে সংশ্লিষ্ট নানান মহল। কারণ, ইসরায়েলকে ইতিপূর্বে কখনোই আন্তর্জাতিক আইন বা চুক্তি মেনে চলতে দেখা যায় নি।
অন্যদিকে, গাজায় সাময়িক যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা হলেও হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শেষ হয়ে যায়নি বলে জানিয়েছে সন্ত্রাসী ইসরায়েল। এ বিষয়ে বিবৃতিতে দখলদার ইসরায়েল সরকার বলেছে যে, দেশের সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলো যুদ্ধ চালিয়ে যাবে। সব জিম্মিকে দেশে ফেরানো, হামাসকে পুরোপুরি নির্মূল করা এবং গাজা থেকে ইসরায়েল রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নতুন করে আর কোনও হুমকি নেই- এমনটা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চলবে বলে ঘোষণা করেছে সন্ত্রাসী ইসরায়েল।
তবে সাময়িক এই যুদ্ধবিরতিকে নিজেদের বিজয় হিসেবে দেখছেন ফিলিস্তিনি মুজাহিদগণ।