সম্প্রতি আফগানিস্তানে কথিত নারী অধিকার ইস্যুতে জাতিসংঘ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে আফগানিস্তানে ইসলামি শরিয়াহ আইন বাস্তবায়ন ও ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের কার্যক্রমে নারীদের অধিকার লঙ্ঘন হয়েছে বলে তীব্র সমালোচনা করেছে সংস্থাটি।
জাতিসংঘের উক্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তান সরকারের মুখপাত্র জনাব জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ এক বিবৃতি প্রদান করেছেন। বিবৃতিতে তিনি জাতিসংঘ প্রদত্ত প্রতিবেদনের নিন্দা জানিয়েছেন। একই সাথে সংস্থাটি শরিয়াহ আইন সম্পর্কে অজ্ঞ ও তাদের প্রতিবেদনটি কাণ্ডজ্ঞানহীন বলে মন্তব্য করেছেন।
উল্লেখ্য যে, সম্প্রতি কাবুলের কয়েকটি এলাকা থেকে শরিয়াহ নির্দেশিত পর্দা লঙ্ঘনের দায়ে বেশ কিছু নারীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। আটককৃত নারীরা ভবিষ্যতে পর্দা মেনে চলবেন এই মর্মে তাদের অভিভাবকরা লিখিত নিশ্চয়তা দেয়ার পর বেশিরভাগকেই কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ছেড়ে দেয়া হয়। এ বিষয়টিকে কেন্দ্র করে জাতিসংঘ আফগানিস্তানে কর্মক্ষেত্রে, শিক্ষা এবং চলাফেরায় নারীর মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে বলে সমালোচনা করে।
এ সম্পর্কে জনাব জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বিবৃতিতে জানান, “ইমারতে ইসলামিয়ার সরকার আফগান জনগণের সহায়তায় ইসলামি শরিয়াহ বাস্তবায়নের জন্য বহু ত্যাগ স্বীকার করেছে। এজন্য ইমারতে ইসলামিয়া এখন নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য ইসলামি শরিয়াহ বাস্তবায়ন করাকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে।”
“সরকার শরিয়াহ আইনে নারীদের জন্য হিজাব ও মাহরামের প্রয়োজনীয়তা, নারীদের শিক্ষা ও কাজের জন্য ইসলামি পরিবেশে তৈরি করার উপর গুরুত্ব দেয়। পাশাপাশি আদালত কর্তৃক শরিয়াহ আইনের শাস্তি বাস্তবায়ন করাও ইমারতে ইসলামিয়ার দায়িত্ব ও অঙ্গীকার। একই সাথে সমাজে বুদ্ধিবৃত্তিক ও ধর্মীয় বিচ্যুতি রোধ করাও ইমারতে ইসলামিয়ার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “জাতিসংঘের প্রতিবেদনটিতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ইসলামি শরিয়াহ বাস্তবায়নের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা হয়েছে এবং কিছু অংশে স্পষ্টভাবে ইসলামি শরিয়াহ আইনের সমালোচনা করা হয়েছে, যা সংস্থাটির অজ্ঞতা এবং অসচেতনতার ইঙ্গিত বহন করে।”
জাতিসংঘ যদি ইসলামি বিধি-বিধানকে মানবাধিকারের পরিপন্থী কাজ বলে মনে করে, তাহলে তা অবশ্যই আফগান জনগণের বিশ্বাসের অপমান বলে ধরা হবে। তাই জাতিসংঘকে আফগান জনগণের ধর্মীয় ইস্যুতে অহেতুক সমালোচনা না করার জন্য পরামর্শ দেন জনাব জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ।
সবশেষ বিবৃতিতে জাতিসংঘের উদ্দেশ্যে বিবৃতিতে বলা হয়, সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ সংক্রান্ত মন্ত্রণালয়, আদালত বা অন্যান্য প্রাসঙ্গিক সংস্থা কর্তৃক গৃহীত প্রতিটি পদক্ষেপ ইমারতে ইসলামিয়ার প্রধান- আমীরের আদেশ অনুসারে গ্রহণ করা হয়। আর গৃহীত প্রতিটি পদক্ষেপের রয়েছে নিখুঁত শরয়ী ও আইনগত ভিত্তি, যা গভীর বিচার বিশ্লেষণ ও গবেষণার পরেই প্রণয়ন করা হয়।
শরীয়াহ আইন স্বেচ্ছাচারী নয় এবং এটি কারও অধিকারও লঙ্ঘন করে না। তবে ইসলামি বিধিবিধান অমান্য করা সমাজে সহিংসতা, দুর্নীতি, নির্যাতন এবং সংঘাতের দিককেই উন্মোচিত করবে।
তথ্যসূত্র:
1. The Report Released by UNAMA is not True and is Based on Ignorance
– http://tinyurl.com/bdz8ht2z
2. IEA slams UNAMA report, says it’s ‘an insult to the beliefs of the people’
– http://tinyurl.com/jxmemvv2
3. UNAMA(UN) Statement
– http://tinyurl.com/3u5k4hxy
ইসলামী শাসনকে প্রতিহত করতেই এই জাতিসংঘ। এদের কার্যক্রমতো এরকম হবেই। এদের দ্বীচারিতার কোন শেষ নাই !