প্রতিবাদ সত্ত্বেও বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের অফিস খোলার অনুমতি দিয়েছে সরকার

1
180

বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে ঢাকায় একটি কার্যালয় করতে যাচ্ছে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ। মঙ্গলবার (২৯শে অক্টোবর) ঢাকায় একটি হোটেলে জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্কের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের তিন উপদেষ্টার বৈঠকের পর এ তথ্য জানিয়েছে সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।

সরকারের আমন্ত্রণে দুদিনের সফরে মঙ্গলবার ভোরে ঢাকায় এসেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার তুর্ক। বৈঠক শেষে উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলে, একটা খুব বড় সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখানে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের একটা কার্যালয় চালু হবে। অফিসটা চালু হলে যে সুবিধাটা আমাদের সবচেয়ে বেশি, সেটা হচ্ছে মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে ক্ষেত্রগুলো, ওরা সরাসরি তদন্ত করতে পারবে। ঢাকায় মানবাধিকার পরিষদের কার্যালয় প্রতিষ্ঠা হলে রাজনৈতিক প্রভাবের ঊর্ধ্বে উঠে মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্ত করা সম্ভব হবে বলে মনে করছে উপদেষ্টা শারমীন মুরশিদ।

শিগগির এই কার্যালয় চালুর উদ্যোগ নেয়ার কথা তুলে ধরে শারমীন মুরশিদ বলে, মানবাধিকারের জাতিসংঘ কার্যালয় থাকা মানে, এখানে মানবাধিকারের জায়গা থেকে একটা বড় শক্তি আমাদের বাড়ল।

কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের এমন সিদ্ধান্তে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে। কারণ, জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের অন্যতম প্রধান কাজ হলো সমকামিতাসহ পশ্চিমা এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা।

কূটনৈতিক সূত্র বলেছে, তামিল বিদ্রোহের ছুতোয় শ্রীলঙ্কায় মানবাধিকারের কান্ট্রি অফিস খোলার প্রস্তাব ছিল জাতিসংঘের। এ নিয়ে ১০ বছর দেন-দরবার হয়েছে। কিন্তু কলম্বো কোনো চাপেই নতি স্বীকার করেনি। শ্রীলঙ্কায় ব্যর্থ চেষ্টার পর ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার একাধিক দেশে অফিস খোলার প্রস্তাব যায়। ট্র্যাক ওয়ান এবং ট্র্যাক টু- উভয় পন্থায় চলে দূতিয়ালি। কিন্তু না, কোনো দেশই অফিস খোলার স্থান দিতে রাজি হয়নি। অথচ এখন বাংলাদেশ সরকার খুব সহজেই রাজি হয়ে গেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের অফিস খোলার চুক্তি সই করলে ভবিষ্যতে রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশের বড় ধরনের বিপদে পড়তে হবে।

প্রথমত এ অঞ্চলের অন্য দেশগুলো বাংলাদেশের ওপর চাপ তৈরি হতে পারে। কারণ দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশেই ওএইচসিএইচআর-এর অফিস খোলার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশে ৩৬ জুলাইয়ের অভ্যুত্থানের পর থেকে স্বার্থান্বেষী নানা গোষ্ঠী সক্রিয়। ওএইচসিএইচআর-এর প্রস্তাব এসেছে ৫ই আগস্টের এক মাসের মাথায় এবং তা পারসু হচ্ছে নানাদিক থেকে। বাংলাদেশে জাতিগত কোনো সংঘাত হয়নি যে, এখানে জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস খুলতে হবে- এমন মন্তব্য করে এক কর্মকর্তা বলেন, সংঘাতপ্রবণ দেশগুলোতে ওএইচসিএইচআর-এর অফিস রয়েছে।

তাছাড়া ওই অফিসের বিরুদ্ধে দুনিয়ার দেশে দেশে সমকামিতার মতো সংবেদনশীল বিষয় প্রমোট করার অভিযোগ রয়েছে। সমকামিতা সব ধর্মে নিষিদ্ধ। অফিস খুলে এটি প্রমোশনের সুযোগ দিলে সরকার বাংলাদেশের সর্ব ধর্মের ধর্মভীরু মানুষের ক্ষোভের মুখে পড়বে।

বলা হয়, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর সব সময় দাতা সংস্থার অর্থায়নে পরিচালিত হয়। দাতা সংস্থাগুলো ওএইচসিএইচআরকে যেকোনো দেশের অভ্যন্তরীণ নীতি প্রণয়নে প্রভাব সৃষ্টির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। ফলে একটি দেশের কোনো নীতি যখন দাতা দেশগুলোর বিপক্ষে যায়, তখন তারা মানবাধিকারকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ওএইচসিএইচআর এর মাধ্যমে।

কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা এসব বিষয়কে গুরুত্ব না দিয়ে বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের অফিস খোলার অনুমতি দিয়ে দিয়েছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনের ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে সপ্তদশ দেশ হিসেবে ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের এমন কার্যালয় হতে যাচ্ছে।

সমাজকল্যাণ উপদেষ্টার সঙ্গে এ বৈঠকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামও উপস্থিত ছিল।


তথ্যসূত্র:
১. ঢাকায় হচ্ছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়
– https://tinyurl.com/3ctvf2z3

১টি মন্তব্য

  1. দেশ কে অস্হিতিশীল করার জন্য তারাই দায়ী থাকবে, এই আমেরিকান হারবীগুলোর উপরে অপারেশন করার এমন সুযোগ হতে যাচ্ছে, যা সবাই কে আল্লাহ্ তায়ালা দেন না। বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা থাকায় আমাদের আমেরিকা-ইসরায়েলে যেয়ে অপারেশন করার সুযোগ হয় না। আর এবার শত্রু নিজে থেকেই এখানে এসে আমাদের উস্কানি দিচ্ছে!! তারা কুকুরের মত এই ভূমি থেকে পালাবে বি-ইযনিল্লাহ্।

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধগাজায় সন্ত্রাসী ইসরায়েলের আরও চার সেনা খতম
পরবর্তী নিবন্ধসিমেন্ট শিল্প খাতে তুরস্কের সঙ্গে ১৬৩ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষর করল আফগানিস্তান