মাদ্রাসা বন্ধের দাবীতে বিক্ষোভ করেছে উত্তর প্রদেশের উগ্রবাদী হিন্দুরা। গত ২৬ অক্টোবর, উত্তর প্রদেশের কৌশম্বী এলাকায় জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অফিসের সামনে এই বিক্ষোভ করে বিশ্ব-হিন্দু পরিষদের সদস্যরা।
বৈদেশিক অর্থায়ন, গরু জবাই, ধর্মান্তরিত করা, লাভ জিহাদ, ভূমি জিহাদ সহ কতগুলো কথিত ভুয়া অভিযোগ তুলে কৌশম্বী থানার একটি মাদ্রাসার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সদস্যরা। এছাড়াও উগ্র হিন্দুত্ববাদী এই দলের সদস্যরা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর মাদ্রাসার বিরুদ্ধে ৫ দফা অভিযোগ পেশ করে। কোনো প্রমাণ ছাড়াই ধর্মান্তরিত করার অভিযোগ এনে গ্রেফতারের দাবী করেছে তারা।
উগ্রবাদী এক হিন্দু নেতা তার সমর্থকদের সামনে ভাষণে মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্র ও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দাবী করে।
কথিত ভূমি জিহাদ ও লাভ জিহাদের অভিযোগ এনে সে বলে, ‘যদি প্রশাসন ১৫ দিনের মাঝে ব্যবস্থা গ্রহণ না করে, তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করবো’।
কড়া পুলিশী পাহারায়, গেরুয়া পতাকা নিয়ে, আক্রমণাত্মক পোস্টার ও উগ্রবাদী স্লোগানে ওই বিক্ষোভের আয়োজন করে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ।
মাদ্রাসা নির্মূলের অপচেষ্টা : মুখ্যমন্ত্রী থেকে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট
গত সেপ্টেম্বর মাসে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে মাদ্রাসার অর্থায়ন নিয়ে একটি জরিপ করার আদেশ করে। তার প্রেক্ষিতে কৌশম্বী জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়াকে মাদ্রাসার তহবিল নিয়ে একটি চিঠি লিখে এবং এই ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ করে।
চলতি বছরের জুলাইয়ে, উত্তর প্রদেশের সরকার মাদ্রাসাগুলোতে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু করার ঘোষণা দেয়। মাদ্রাসাগুলোর উপর ‘নজরদারী’ বৃদ্ধি করা এবং প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের সাথে ‘জঙ্গি সংযোগ’ তদারকি করার নামে এই পদ্ধতির ঘোষণা দেয় তারা।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে উত্তর প্রদেশের বিজেপি শাসিত আদিত্যনাথ সরকার ১৬,০০০ এর অধিক মাদ্রাসা বন্ধ করার জন্য প্রশাসনকে ঘোষণা দেয় এবং ওই বন্ধ হওয়া মাদ্রাসাগুলোকে সরকারী স্কুলে রূপান্তরিত করার ঘোষণাও দিয়েছিল উগ্র হিন্দুত্ববাদী আদিত্যনাথ সরকার।
আরবি ভাষা, ইসলামী শিক্ষা এবং সাংস্কৃতিক চেতনার প্রধান কেন্দ্র হওয়ায় অধিকাংশ সময়ই মাদ্রাসা বোর্ডগুলোকে বৈষম্যমূলক আচরণের শিকার হতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে উত্তর প্রদেশের বেশিরভাগ মাদ্রাসা গুরুতর সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে, বেশিরভাগ মাদ্রাসাই মুসলিমদের নিজস্ব অর্থায়ন যেমন- জাকাত, সাদাকাহ, ব্যক্তিগত দানের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। এসব মাদ্রাসা রাজ্যের প্রান্তিক মুসলিম শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে শিক্ষার কেন্দ্র হিসেবে ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
তথ্যসূত্রঃ
1.UP: VHP Demands Ban on Madarsa in Kaushambi, Alleging ‘Foreign Funding’ and ‘Conversion’
-https://tinyurl.com/3kahrff5