গাজায় ৫৩ ফিলিস্তিনিকে হত্যা, গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো ১৬ ভবন

0
31

গাজায় আরও ৫৩ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে সন্ত্রাসী ইসরায়েল। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ১৬টি ভবনও। যার মধ্যে তিনটি আবাসিক ভবন রয়েছে। এ ছাড়া উত্তরাঞ্চলীয় নগর কেন্দ্র দখল এবং স্থানীয়দের বাস্তুচ্যুত করার লক্ষ্যে হামলা চালাচ্ছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী।

১৫ সেপ্টেম্বর, সোমবার আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্বর ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় নতুন আগ্রাসনে একদিনে অন্তত ৫৩ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। শুধু গাজা সিটিতেই ধ্বংস করা হয়েছে ১৬টি ভবন, যার মধ্যে তিনটি ছিল আবাসিক টাওয়ার। মূলত উত্তরাঞ্চলের নগর কেন্দ্র দখল ও সেখানকার জনগণকে জোরপূর্বক উৎখাত করার উদ্দেশ্যেই এই হামলা চালানো হয়েছে। একই সময়ে অপুষ্টি ও দুর্ভিক্ষে নতুন করে আরও দুইজনের মৃত্যু হয়েছে, ফলে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ক্ষুধায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে অন্তত ৪২২ জনে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ১৪ সেপ্টেম্বর, রবিবার নিহতদের মধ্যে অন্তত ৩৫ জন ছিলেন গাজা সিটির বাসিন্দা। ধ্বংসযজ্ঞের শিকার হয়েছে রেমাল এলাকার দক্ষিণে অবস্থিত আল-কাওসার টাওয়ার, যেটি সম্পূর্ণরূপে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। লাগাতার বোমাবর্ষণে হাজারো মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হচ্ছেন। বিপর্যস্ত ফিলিস্তিনি মারওয়ান আল-সাফি বলেছেন, “আমরা জানি না কোথায় যাব। এই পরিস্থিতির সমাধান দরকার… আমরা এখানে মারা যাচ্ছি।”

এক বিবৃতিতে মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, সশস্ত্র বাহিনীকে লক্ষ্য করে হামলার চালানোর নামে ইসরায়েল বাহিনী পরিকল্পিতভাবে স্কুল, মসজিদ, হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর বোমা ফেলছে। এ ছাড়া আবাসিক ভবন, শহর ধ্বংস এবং একাধিক সংগঠনের সদরদপ্তরসহ আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তাকারী সংস্থার অফিসও বোমা মেরে গুঁড়িয়ে দিয়েছে।

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি বিষয়ক শরণার্থী সংস্থার (ইউএনআরডব্লিউএ) প্রধান ফিলিপ লাজ্জারিনি এক্স পোস্টে বলেন, গত চার দিনে অন্তত ১০টি সংস্থার ভবনকে লক্ষ্যবস্তু করেছে ইসরায়েল। যার মধ্যে রয়েছে সাতটি স্কুল, দুটি ক্লিনিক এবং আবাসিক ভবন। গাজায় কোথায় কোনো নিরাপত্তা স্থান নেই এবং এখানে কেউ নিরাপদ নয়।

আহমেদ আওয়াদ নামক এ বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি আলজাজিরাকে বলেন, ‘মর্টার শেলের আঘাতে শনিবার উত্তরাঞ্চলীয় গাজা থেকে এসে আল মাওয়াসিতে আশ্রয় নিয়েছিলাম। কিন্তু মধ্য রাতে এখানে পৌঁছানোর পর পানি, টয়লেট কিছুই পাওয়া যায়নি। পরিবারকে নিয়ে খোলা আকাশের নিচে ঘুমাতে হয়েছে। পরিস্থিতি কল্পনার থেকেও ভয়াবহ।’

বাস্তুচ্যুত আরেক ব্যক্তি বলেন, ‘আমার একটি বড় পরিবার আছে, যার মধ্যে আমার সন্তান, মা এবং দাদি রয়েছে। আমাদের ওপর শুধু ক্ষেপণাস্ত্রই বর্ষণ হচ্ছে না, দুর্ভিক্ষও আমাদের গ্রাস করেছে। আমার পরিবার দুই বছর ধরে বাস্তুচ্যুতির সঙ্গে লড়াই করে যাচ্ছে। আমরা আর গণহত্যা, যুদ্ধ বা ক্ষুধা সহ্য করতে পারছি না।’


তথ্যসূত্র
1. Israel kills 53 in Gaza, flattens more towers as toll from famine rises
– https://tinyurl.com/3ppmwxmp

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধবুথিডংয়ে রোহিঙ্গা নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা করল আরাকান আর্মি
পরবর্তী নিবন্ধবান্দরবানে মিয়ানমার সীমান্তে তীব্র গুলির শব্দ, আতঙ্কিত এলাকাবাসী