
ভারতের রাজস্থানে আবারও গো-রক্ষার নামে হিন্দুত্ববাদী সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। মধ্যপ্রদেশের মন্দসৌর জেলার শেরু লাম্বিয়া নামে এক মুসলিম যুবক গত ২২ সেপ্টেম্বর মেলা থেকে গবাদিপশু নিয়ে ফিরছিলেন। পথে কথিত উগ্র গো-রক্ষকরা তার গাড়ি আটকে নির্মমভাবে মারধর করে। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও শেষ পর্যন্ত তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
চিকিৎসকদের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, শেরুর মাথায় ভয়াবহ আঘাতের চিহ্ন ছিল এবং শরীরজুড়ে অসংখ্য ক্ষত ও কাটা ঘা পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে এটি পরিকল্পিতভাবে সংঘটিত একটি নির্মম হত্যাকাণ্ড বলেই স্পষ্ট।
মানবাধিকারকর্মী ইমরান রংরেজ ঘটনাটিকে ‘মানবতার হত্যা’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘পুলিশের সামনেই প্রকাশ্যে মানুষ মারা হচ্ছে, অথচ প্রশাসন নীরব, ব্যর্থ।’ সাংবাদিক বাবলু সাগর মন্তব্য করেছেন, ‘এটি শুধু একজনের মৃত্যু নয়, বরং গোটা সমাজের নিরাপত্তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।’
ঘটনার পর পুলিশ সন্দেহভাজন পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে বিস্ময়কর বিষয় হলো, নিহত শেরুর বিরুদ্ধেও গরু পাচারের মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে ভুক্তভোগীকে সুরক্ষা দেওয়ার পরিবর্তে প্রশাসন উল্টো তাকেই দোষারোপ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় স্থানীয় মুসলিম সমাজ পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়ে কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে। তাদের বক্তব্য, ‘ধর্মের নামে সহিংসতা কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। এ ধরনের হামলা শুধু মুসলিমদের নয়, গোটা সমাজকেই আতঙ্কিত করছে।’
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে একই কায়দায় একের পর এক মুসলিমকে লক্ষ্য করে লিঞ্চিং চালানো হয়েছে। গো-রক্ষার নামে এই সহিংসতা দিন দিন বাড়ছে, আর প্রশাসন অনেক সময় নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।
তথ্যসূত্র:
1. Rajasthan: Muslim Man Lynched While Transporting Cattle in Bhilwara
– https://tinyurl.com/bdf4m768


