
সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার প্রতাপপুর গ্রামে মাদকবিরোধী অভিযানের সময় মার্কুলি নৌ-পুলিশ প্রায় ২০০ লিটার চোলাই মদ এবং তিনটি মোটরসাইকেল আটক করে। অভিযানে পাপন সরকার নামের এক মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গত ২৭ অক্টোবর সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, জব্দকৃত ২শ’ লিটার মদের সাথে শাল্লা উপজেলার বিলপুর গ্রামের মন্টু দাসের ছেলে সুহেল দাসসহ অন্তত আরো পাঁচজন মাদক বিক্রেতা থাকা সত্ত্বেও অদৃশ্য কোনো কারণে মামলার এজাহারে তাদের নাম উল্লেখ করা হয়নি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মাদকের বিক্রেতাদের পালাতে সহযোগিতা করেছেন নৌ-পুলিশ নিজেই। এ বিষয়ে সরেজমিনে কথা হয় মামলার ১ নম্বর সাক্ষী বিষ্ণুপুর গ্রামের বাসিন্দা চন্দ্র কান্ত বৈষ্ণবের সাথে।
তিনি জানান, চারটি বস্তায় প্রায় দু’শো লিটার মদসহ তিনটি মোটরসাইকেল আটক করে মার্কুলি নৌ-পুলিশ। তিনি আরো জানান, দু’টি মোটরসাইকেল চালিয়ে নৌ-পুলিশ মার্কুলি ফাঁড়ি থানায় নিয়ে যায়। অন্য মোটরসাইকেলটি নৌকায় তুলে নেয়া হয়েছে। মামলার ২য় সাক্ষী হৃদয় বৈষ্ণবও একই কথা জানান।
দু’জন সাক্ষীর ভাষ্য নিয়ে মামলার আরেক সাক্ষী নৌ-পুলিশের কনস্টেবল নাছির হোসেনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে সে কোনোকিছু না জেনেই তার স্যারের নির্দেশে মামলায় সাক্ষী হিসেবে স্বাক্ষর করেছেন বলে জানায়। মদের সঠিক পরিমাণ জানতে অনুসন্ধানের রেকর্ড করে বের করে কথা হয় নৌ-পুলিশের সহযোগিতায় পালিয়ে আসা মাদক বিক্রেতাদের সাথে। তাদের সাথে সরাসরি কথা বলে সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দু’জন মাদক বিক্রেতা জানায়, চারটি বস্তায় তাদের দু’শো লিটার মদ ছিল। ৪৮ লিটার মদ ছাড়া বাকি মদগুলো বিক্রি করে দিয়েছে নৌ-পুলিশ।
তারা বলেছে, আমাদের মদ, মোটরসাইকেল ও একজন লোককে ছেড়ে দিবে বলে শুরুতেই তাদের কাছে দু’লাখ টাকা দাবি করে আসছিল নৌ-পুলিশের ইন্সপেক্টর কাওসার গাজী ও এস আই রুকুনুজ্জামান। পুলিশকে পয়ষট্টি হাজার টাকা দিবে বললেও তাদের মালামাল ছাড়েনি। পরবর্তীতে তাদের কাছে দেড় লাখ টাকা দাবি করে পুলিশ। মাদক বিক্রেতারা আশি হাজার টাকায় রাজি হলেও কম হওয়ায় তাদের মালামাল ছাড়া হয়নি।
তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, জব্দ মদের মধ্যে মাত্র ৪৮ লিটার সরকারি তালিকায় দেখানো হয়েছে, বাকি ১৫২ লিটার মদ এবং মোটরসাইকেলগুলো উধাও হয়েছে।
পুলিশের কিছু সদস্য মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে গ্রেপ্তারদের মুক্তি দেয়ার চেষ্টা করেছে। মাদক ও মোটরসাইকেল উদ্ধার হলেও জব্দ তালিকায় না দেখানোয় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। এতে শাল্লা, আজমিরীগঞ্জ ও বানিয়াচং এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযানে সরাসরি জড়িত ছিলেন ইন্সপেক্টর কাওসার গাজী, এস আই রুকুনুজ্জামান, এস আই সুরুজ আলী এবং কনস্টেবল নাছির হোসেন।
মার্কুলি নৌ-পুলিশের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে অস্বীকৃতি জানানো হয়েছে।
তথ্যসূত্র:
1. পুলিশ হেফাজত থেকে ১৫০ লিটার মদসহ তিন মোটরসাইকেল উধাও
– https://tinyurl.com/2h9kkd6h


