বিএনপির প্রভাবশালী নেতাদের ছত্রছায়ায় চট্টগ্রামে আতঙ্কের নাম মুরাদ বাহিনী

0
97

চট্টগ্রাম নগরের বাকলিয়া ও পূর্ব ষোলশহর এলাকায় এখন আতঙ্কের নাম ‘মুরাদ বাহিনী’। স্থানীয়রা জানায়, এ সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে ঘুরে বেড়ায়, গুলি ছোড়ে যখন-তখন। এলাকাজুড়ে তাদের বিরুদ্ধে ভয়, ক্ষোভ আর নিঃশব্দ আতঙ্ক-তবু পুলিশের দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেই।

০২ নভেম্বর গণমাধ্যমসূত্রে জানা গেছে, বাহিনীর প্রধান মুরাদ নোয়াখালীর দক্ষিণ হাতিয়া এলাকার বাসিন্দা। সে নগরের ৬ নম্বর পূর্ব ষোলশহর ওয়ার্ডে একটি ভাড়া বাসায় থাকে। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে, কয়েকবার মাদকসহ গ্রেপ্তারও হয়েছে। কিন্তু প্রতিবারই সে সহজে জামিন নিয়ে বেরিয়ে আসে এবং আবারও আগের মতো দাপট দেখায়।

শুধু গত অক্টোবর মাসেই মুরাদ বাহিনীর বিরুদ্ধে অন্তত তিনটি বড় হামলার অভিযোগ উঠেছে। দু’সপ্তাহ আগে রাহাত্তরপুল এলাকায় একটি অটোরিকশা গ্যারেজে হামলা চালায় মুরাদের অনুসারীরা। তারা গ্যারেজে ঢুকে মালিককে মারধর করে এবং দু’টি অটোরিকশা ভাঙচুর করে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, তারা প্রকাশ্যে দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করছিল, কেউ এগোতে পারেনি।

স্থানীয় এক ব্যবসায়ী জানান, দোকানপাটে মাসে মাসে চাঁদা তোলে মুরাদের লোকজন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে সরাসরি হুমকি আসে ‘পুলিশ কিছু করতে পারবে না।’ গত ৩১ অক্টোবর গভীর রাতে ১৬ নম্বর গলি এলাকায় টহলরত যুবকদের ওপর গুলি ছোড়ে দু’মোটরসাইকেলে আসা তিনজন সশস্ত্র ব্যক্তি। এলাকাবাসী বলছে, এরা মুরাদ বাহিনীর সদস্য।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “মুরাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলে পুলিশ আসে, ছবি তোলে, তারপর কিছুই হয় না। কয়েকদিন চুপচাপ থাকে, আবার তারা ফিরে আসে। আমরা ভয় পাই কখন আবার দরজায় কড়া নাড়ে।”

পূর্ব ষোলশহরের এক প্রবীণ বাসিন্দা বলেন, আগে রাতের বেলা আমরা রাস্তার পাশে বসে গল্প করতাম। এখন সূর্য ডোবার পর দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়ি। ভয় আমাদের জীবনের অংশ হয়ে গেছে। এলাকার ব্যবসায়ীদের দাবি, পুলিশের ‘জানার পরও না-জানার ভান’ এখন সাধারণ নিয়মে পরিণত হয়েছে।

অনেকেই বলছেন, মুরাদের ছবি রয়েছে নগরের প্রভাবশালী বিএনপি নেতাদের সঙ্গে। সেই রাজনৈতিক আশ্রয়ই তাকে আজ ধরাছোঁয়ার বাইরে নিয়ে গেছে।

এদিকে, মুরাদ বাহিনীর তৎপরতায় স্থানীয় রাজনীতিকদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, মুরাদকে রাজনৈতিক প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে, যা তার বাহিনীকে আরও বেপরোয়া করে তুলছে। বিএনপির এক জ্যেষ্ঠ নেতার আশ্রয়ে থেকে মুরাদ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকলেও তার বিরুদ্ধে পুলিশ বা প্রশাসনের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না।


তথ্যসূত্র:
1. ‘প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে ঘুরে বেড়ান, গুলি ছোড়েন যখন-তখন’
– https://tinyurl.com/yhbcr23f

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধআফগানিস্তানের খাফ-হেরাত রেলপথে বিগত বছরের তুলনায় আমদানি বেড়েছে ৫ গুণ
পরবর্তী নিবন্ধবাংলাদেশ দখলের হুমকি দিলো পশ্চিমবঙ্গের বিজেপির এক নেতা