মাস পেরিয়ে গেছে, এখনও রাতজেগে সংশোধিত নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে দিল্লির শাহিনবাগে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন মহিলা ও শিশুরা। বিজেপি নেতাদের কার্যত চক্ষুশূল হয়ে উঠেছেন এই প্রতিবাদীরা। কেউ বলছেন, ‘গুলি করে মেরে দেওয়া উচিত’, আবার কারও কথায়, ‘দিল্লিতে ক্ষমতায় এলে একঘণ্টায় ফাঁকা করে দেব শাহিনবাগ’! কেউ ভয় দেখাচ্ছে, শাহিনবাগের বিক্ষোভকারীরা ঘরে ঢুকে মহিলাদের ধর্ষণ করবে। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার হঠাতই পিস্তল হাতে শাহিনবাগের বিক্ষোভ স্থলে ঢুকে পড়ে এক যুবক।
প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, এদিন বিকেলে দুই ব্যক্তি শাহিনবাগের প্রতিবাদস্থলে হাজির হয়ে হুমকি দিতে শুরু করেন, ‘রাস্তা ফাঁকা করুন, নাহলে মরতে হবে!’
সাইদ তাসির আহমেদ নামে এক প্রত্যক্ষদর্শীর কথায়, ‘ওই ব্যক্তি দুপুর তিনটে নাগাদ বিক্ষোভস্থলে এসে হুমকি দিতে শুরু করে। স্টেজেও উঠে পড়ে। নির্দিষ্ট একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ওই ব্যক্তি যুক্ত বলেও দাবি করছিল।’ যদিও ঘটনাস্থলে উপস্থিত জনতাই ওই ব্যক্তিকে প্রতিবাদস্থলের বাইরে নিয়ে যায় এবং তার থেকে পিস্তল কেড়ে নেয়। গোটা ঘটনার ভিডিয়োও করেন কয়েকজন। সেই ভিডিয়োই সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন ভাইরাল।
#SOSShaheenBagh
Two persons (one brandishing a pistol) entered the area where the women of Shaheen Bagh were sitting.Threatened them to vacate the road or else "lashe girenge".
Citizens of Delhi. Shaheen Bagh needs you. Please mobilise.@IndiasMuslims @QutqutG @ImAbdy pic.twitter.com/LjRUZEPWLv
— Shaheen Bagh Official (@ShaheenBagh_) January 28, 2020
শাহিনবাগ বিক্ষোভের উদ্যোক্তাদের তরফে জানানো হয়েছে, অস্ত্রধারী এক ব্যক্তি শাহিনবাগে বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ঢুকে পড়ে। আশঙ্কা করছি কোনও হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠী হামলা চালাতে পারে। সবাইকে এই বিক্ষোভে যোগ দেওয়ার আবেদন করছি। এতে এই ধরনের হামলা বন্ধ হবে।
উল্লেখ্য, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে শাহিনবাগের বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়া JNU-এর গবেষক শারজিল ইমাম ও তাঁর ভাইকে গ্রেফতার এদিনই গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ। উস্কানিমূলক ভাষণ দেওয়ার মিথ্যা অভিযোগে শারজিলের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সংবাদসংস্থা ANI জানিয়েছে, শাহিনবাগ বিক্ষোভের কো-অর্ডিনেটর তথা JNU ছাত্রের ভাইকে মঙ্গলবার সকালে আটক করে বিহারের জাহানাবাদ পুলিশ। সেখানেই তাঁকে জেরা করা হয়। এরপর দুপুরে বিহার থেকেই গ্রেফতার হন শারজিল। সোমবারই দেশদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়েছিল JNU-এর গবেষক শারজিল ইমামের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বক্তৃতায় অসমকে বাকি দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে আহ্বান জানান তিনি।
সেই ঘটনা নিয়ে চারিদিকে বিতর্কের আবহেই এবার শাহিনবাগে বন্দুকবাজের আগমনকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে।
সূত্র: এই সময়