রাজশাহীর পদ্মা নদীতে মাছ ধরার সময় বিএসএফ সন্তাসীদের হাতে অন্যায় ভাবে পাঁচ জেলে আটকের প্রতিবাদ এবং তাদের ফিরে পেতে মানববন্ধন করেছেন গহমাবোনা এলাকাবাসী ও মৎস্যজীবী সমিতি।
গত মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি)রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কের আলীমগঞ্জে মানববন্ধনে কেউ দাঁড়িয়েছিলেন ছেলের মুক্তির দাবিতে, কেউ শিশু সন্তানকে কোলে নিয়ে স্বামীকে ফিরে পেতে। তাদের অভিযোগ, বিএসএফ বাংলাদেশের সীমানায় ঢুকে পদ্মা নদী থেকে পাঁচ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে। এরপর তাদের ভারতীয় পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। অনুপ্রবেশের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।
তারা জানান, জেলেদের ফেরত দেওয়া নিয়ে বিজিবি পতাকা বৈঠক করলেও অপহৃতদের ফেরত দেয়নি বিএসএফ। উল্টো ভারতে অনুপ্রবেশের অভিযোগ তুলে তাদেরকে ভারতীয় পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। অথচ তাদের ফেরত আনতে সরকারের পক্ষ থেকে এখনও কোনও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। অবিলম্বে তারা অপহৃতদের মুক্তি দাবি করেন।
বিএসএফ’র হাতে আটক শাহিন আলীর স্ত্রী বীথি খাতুন জানান, পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম মানুষ ছিলেন শাহিন। প্রতিদিনের মতো সেদিনও বাড়ির পাশেই পদ্মা নদীতে মাছ ধরছিলেন তিনি। এসময় স্পিড বোর্ডে করে বিএসএফ সদস্য বাংলাদেশের সীমানায় ঢুকে তাকে ধরে নিয়ে যায়।
আড়াই বছরের সন্তানকে কোলে নিয়ে মানববন্ধনে এসেছিলেন কাবিল হোসেনের স্ত্রী সমিরা খাতুন। তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে বাবা কই, বাবা কবে আসবে-বলে কান্নাকাটি করে সারাক্ষণ।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার স্বামী সংসার চালাতে ঋণ করেছিলেন। মাছ ধরে তা বিক্রি করে সেই টাকার কিস্তি পরিশোধ করতেন। বিএসএফ তাকে ধরে নিয়ে গেছে ভারতে। এখন আমি অসহায়। দ্রুত আমার স্বামীর মুক্তি চাই।’
মৎস্যজীবী সমিতির নেতা আবু তাহের বলেন, বিএসএফ বাংলাদেশের সীমানায় যখন তখন ঢুকে গিয়ে আমাদের জেলেদের হেনস্তা করছে, ধরে নিয়ে যাচ্ছে। একারণে ভয়ে জেলেরা পদ্মায় নামতে পারছেন না। মাছ ধরা বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা দ্রুত এ সমস্যার সমাধান চাই।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ জানুয়ারি রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার খরচাকা সীমান্তে পদ্মা নদীতে মাছ ধরার সময় পাঁচ জেলেকে ধরে নিয়ে যায় বিএসএফ। তারা হলেন, রাজন হোসেন (২৫), সোহেল রানা (২৭), কাবিল হোসেন (২৫), শাহীন আলী (৩৫) ও শফিকুল ইসলাম (৩০)। পবা উপজেলার গহমাবোনা গ্রামে তাদের বাড়ি।