আতঙ্ক ও খাবার সংকট : চীন থেকে ফিরতে চান ১৭২ শিক্ষার্থী

0
1019

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রভাবে চীন থেকে দেশে ফেরানো হয়েছে ৩১২ শিক্ষার্থীকে। বিশেষ উড়োজাহাজে করে উহান থেকে তাদের দেশে ফিরিয়ে পর্যবেক্ষণের জন্য রাখা হয়েছে আশকোনা হজ ক্যাম্পে স্থাপিত কোয়ারেন্টাইনে। এদিকে চীনে এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে সরকারিভাবে ৫৬৩ জনের। যদিও অন্য এক নিউজে প্রকৃত সংখ্যা ২৫ হাজার উল্লেখ করা হয়েছে! এই অবস্থায় দেশে ফিরতে চাইছেন আরও ১৭২ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী।

চীনের হুবেই প্রদেশের ইচাং শহরে চায়না থ্রি গর্জেজ ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়নরত এসব শিক্ষার্থী তাদের ডরমিটরিতে আটকা পড়েছেন। সামাজিক যোগযোগমাধ্যমগুলোর মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার ও দূতাবাসের কাছে দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার আকুতি জানাচ্ছেন তারা।

উহান বা আশেপাশের এলাকাগুলোয় অবরুদ্ধ হয়ে পড়লেও সেখানকার বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা সামাজিক মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করছেন। বিভিন্ন গ্রুপ থেকে তারা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগও তুলে ধরছেন। তবে শিক্ষার্থীদের সব অভিযোগ অযৌক্তিক ও অবাস্তবত বলে মন্তব্য করেছেন দেশটিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব খাইরুল বাশার।

ইচাং শহরে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে তাদের অবরুদ্ধ করে রাখায় খাবারের সংকট পড়ছে। নিয়মিত খাবার পাচ্ছেন না তারা। সরবরাহ করা হচ্ছে না বিশুদ্ধ পানি, খাবারসহ প্রয়োজনী সামগ্রী। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এসব ব্যাপারে নিয়মিত খোঁজ রাখার কথা থাকলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

ওই শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ঠিকমতো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি না পাওয়া তারা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। কেউ কেউ মানসিকভাবে ভেঙেও পড়েছেন।

চায়না থ্রি গর্জেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী মাসুদ রানা আমাদের সময়কে বলেন, করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল উহানের ইচাং শহরের খুব কাছেই। যে কারণে এ শহরে লকডাউন জারি করা হয়। যোগাযোগ, বাজার বন্ধ থাকায় পর্যাপ্ত খাবার ও বিশুদ্ধ পানির খুবই সংকট দেখা দিয়েছে। আমরা সবাই বদ্ধ জীবনযাত্রায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছি।

একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী দ্বীন মুহাম্মদ প্রিয় আমাদের সময়কে বলেন, আমরা ১৭২ জন বাংলাদেশি এখানে আটকে আছি। আমাদের জীবনযাত্রা দিনকে দিন দুর্বিষহ হয়ে পড়ছে। ঠিকমতো খাবার, পানি না পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছি।

মাসুদ রানা ও প্রিয় জানান, বিষয়গুলো নিয়ে তারা চীনে বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। দূতাবাস থেকে জানানো হয় দেশ থেকে সিদ্ধান্ত আসার অপেক্ষায় আছেন কর্মকর্তাগণ।

তাদের আরও অভিযোগ, দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে তারা মুঠোফোনে দূতাবাসের সঙ্গে কথা বলেত চেষ্টা করলেও তা বন্ধ পাচ্ছেন। এমনকি সামাজিকমাধ্যমেও তাদের সঙ্গে কোনো কথা বলতে পারছেন না তারা।

দোদুল্যমান পরিস্থিতিতে বসবাস করছেন মন্তব্য করে রানা ও প্রিয় আমাদের সময়কে বলেন, আমাদের ১৭২ জন শিক্ষার্থীর এটাই এখন একমাত্র চাওয়া- আমরা দেশে ফিরতে চাই।

অভিযোগগুলো নিয়ে চায়না থ্রি গর্জেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্ডিনেটর প্যানেলের সঙ্গে যোগযোগ করা হলেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাবরি মসজিদের নতুন জায়গা নির্ধারণে মুসলিম সংগঠনগুলোর ক্ষোভ
পরবর্তী নিবন্ধপৃথিবীর প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ ডেঙ্গুর ঝুঁকিতে